বাংলাদেশের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস সাধারণ জ্ঞান হিসেবে বিভিন্ন নির্বাচনী পরীক্ষায় প্রশ্ন হিসেবে আসে। আজকে আমাদের এই আলোচনা ছাত্র ছাত্রী এবং চাকরি প্রার্থী ছাত্র বন্ধুদের অনেক উপকারে আসবে। এই আলোচনায় আমরা ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান শাসনামলের একটি ঘটনাপঞ্জি তৈরি করে দেখাবো। এখানে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম থেকে শুরু করে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়া পর্যন্ত প্রায় সবগুলো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাই উল্লেখ করা হয়েছে। এই শীটটি ডাউনলোড করে মোবাইল বা কম্পিউটারে সংরক্ষণ করতে পারবেন। তাহলে চলুন, দেখে নেই পাকিস্তান শাসন আমলের সকল ঘটনাগুলো।
বাংলাদেশের ইতিহাস মূলত শুরু হয়েছিল ১৯৪৭ সাল থেকে। ১৯৪৭ সালে থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধ, সমগ্র বাংলাদেশের ইতিহাস কে রচনা করা হয়েছে।
উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব প্রথম গৃহীত হয়- ১৯৪৭ সালে ডিসেম্বর মাসে করাচিতে অনুষ্ঠিত শিক্ষা সম্মেলনে।
অধ্যাপক আবুল কাশেমের নেতৃত্বে – তমুদ্দিন মজলিস প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সময় পূর্ব বাংলার মূখ্যমন্ত্রী ছিলেন- নুরুল আমিন।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সময় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন- খাজা নাজিমউদ্দিন।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে প্রথম শহীদ মিনার নির্মান করা হয়- ১৯৫২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারী।
‘উর্দু এবং একমাত্র উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা’ এ কথাটি প্রথম বলেছিলেন- মুহম্মদ আলী জিন্নাহ, ২১ মার্চ, ১৯৪৮ সালে তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে।
সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কমিটি গঠিত হয় ৩০ জানুয়ারী, ১৯৫২।
‘‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা না উর্দু” পুস্তিকার লেখক- ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ
যুক্তফ্রন্ট কবে গঠিত হয়- ১৯৫৩ সালের ৪ ডিসেম্বর।
আওয়ামী মুসলীমলীগ, কৃষক শ্রমিক পার্টি, নেজাম-ই- ইসলাম, বামপন্থী গণতন্ত্রী দল নিয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়।
১৯৫৪-এর প্রাদেশিক নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট ২২৩ টি আসন লাভ করে এবং ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগ পায় ৯টি আসন।
যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রীসভা গঠিত হয়- ৩ এপ্রিল, ১৯৫৪ সালে শেরে বাংলা এ.কে.ফজলুল হকের নেতৃত্বে।
যুক্তফ্রন্টের ২১-দফা কর্মসূচীর মধ্যে প্রথম দফা ছিল- বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করা।
যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রীসভা বাতিল ঘোষণা করা হয়- ৩০ মে, ১৯৫৪ সালে।
লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে ৬ দফা রচিত হয়।
শেখ মুজিবুর রহমান ৬ দফা দাবী পেশ করেন ১৩ ফ্রেব্রুয়ারী, ১৯৬৬ সালে পাকিস্তানের লাহোরে বিরোধী দলীয় সম্মেলনে।
ছয় দফা আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করা হয় ২৩ মার্চ, ১৯৬৬ সালে।
ছয় দফার প্রথম দফা ছিল- প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার গঠন।
ছয় দফাকে বলা হয়- বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ এবং বাঙালিদের ম্যাগনাকার্টা।
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা এবং ১৯৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান
‘আগরতলা ষড়যন্ত্র’ মামলা দায়ের করা হয়- ৩ জানুয়ারী, ১৯৬৮।
‘আগরতলা ষড়যন্ত্র’ মামলার বিশেষ আদালতের বিচারক ছিলেন- পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি এস.এ.রহমান।
‘আগরতলা ষড়যন্ত্র’ মামলার আসামী ছিল- ৩৫ জন।
আগরতলা ষড়যন্ত্র’ মামলার প্রধান আসামী ছিলেন- শেখ মুজিবুর রহমান।
‘আগরতলা ষড়যন্ত্র’ মামলা প্রত্যাহার করা হয়- ২২ ফেব্রুয়ারী, ১৯৬৯ সালে।
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামী সার্জেন্ট জহুরুল হককে গুলি করে হত্যা করা হয়- ১৫ ফ্রেব্রুয়ারী, ১৯৬৯ সালে।
মার্চ পাকিস্তান সেনাবাহিনী পূর্ব পাকিস্তানের বড় শহরগুলোতে গণহত্যা শুরু করে। তাদের পূর্বপরিকল্পিত এই গণহত্যাটি ‘‘অপারেশন সার্চলাইট’’ নামে পরিচিত।
২৫ মার্চ রাত প্রায় সাড়ে এগারোটার দিকে পাকিস্তানি বাহিনী তাদের হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। পাকিস্তানিদের অপারেশনের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ঢাকা বিশববিদ্যালয়ের সার্জেন্ট জহুরুল হক হল এবং জগন্নাথ হলের ছাত্রদের নির্বিচারে হত্যা করা হয়। ঢাকা বিশববিদ্যালয় ও আশেপাশের বহু সংখ্যক শিক্ষক ও সাধারণ কর্মচারিদেরও হত্যা করা হয়। পুরোনো ঢাকার হিন্দু সম্প্রদায় অধ্যুষিত এলাকাগুলোতেও চালানো হয় ব্যাপক গণহত্যা।
রাজারবাগ পুলিশ লাইনে আক্রমণ করে হত্যা করা হয় পুলিশ বাহিনীর বহু সদস্যকে। পিলখানার ইপিআর-এর কেন্দ্রে আচমকা আক্রমণ চালিয়ে নির্বিচারে হত্যা করা হয় নিরস্ত্র সদস্যদের। কয়েকটি পত্রিকা অফিস ভস্মীভূত করা হয়। দেশময় ত্রাস সৃষ্টির লক্ষ্যে নির্বিচারে হত্যা করা হয় বিভিন্ন এলাকায় ঘুমন্ত নর-নারীকে। হত্যা করা হয় শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিদেরও। ধারণা করা হয়, সেই রাত্রিতে একমাত্র ঢাকা ও তার আশে পাশের এলাকাতে প্রায় এক লক্ষ নিরীহ নর-নারীর জীবনাবসান ঘটে।
আশা করি বাংলাদেশের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস আকারে যাবতীয় তথ্য সম্পর্কে জানতে পেরে আপনারা অনেক উপকৃত হয়েছেন।