আমরা যে চা পান করি সেই চা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী একটি উপাদান। আমাদের প্রত্যেককেই জানা উচিত আমরা যে চা পান করছি সে চা আমাদের শরীরের কিভাবে উপকার দিচ্ছে আবার কিভাবে অপকারিতা প্রদান করছে। আপনি যখন চা পান করেন তখন সেই চা আপনার শরীরের জন্য অনেক উপকার নিয়ে আসে। ঠিক একই রকম ভাবে অতিরিক্ত চা পান করা হলে সেই সকল চা আপনার শরীরের জন্য এতটা ভালো কাজ করে না।
সেই জন্য আপনাদের উদ্দেশ্যে আমরা একটি সম্পূর্ণ প্রবন্ধ সাজিয়েছি যেখানে চায়ের উপকারিতা এবং অপকারিতা দুইটি একই সাথে দেখানো হচ্ছে। আমরা প্রথমত চায়ের উপকারিতা আপনাদেরকে দেখাচ্ছি এবং তারপরে চায়ের অপকারিতা কোনগুলো রয়েছে সেগুলো আপনাদেরকে দেখানো হচ্ছে। আপনারা যদি মনোযোগ সহকারে আমাদের এই প্রবন্ধটি পড়েন তাহলে সেখানে আপনারা দেখতে পাবেন যে চায়ের উপকারিতা এবং অপকারিতা দুইটি সুন্দরভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
চা এর উপকারিতা
চা পান করলে চা থেকে আমরা বেশ কিছু উপকারিতা পাই। আর তাই আপনাদের জন্য সে সকল উপকারিতা সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য উপস্থাপন করা হচ্ছে। আপনারা নিচের অংশটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন তাহলে এখান থেকে আপনারা জানতে পারবেন যে চা কিভাবে আমাদের শরীরের জন্য উপকার বয়ে নিয়ে আসে।
★ চায়ে আছে এপিগ্যালোক্যাটেচিন-গ্যালেট (ইজিসিজি) নামের একধরনের রাসায়নিক পদার্থ, যা খুব কার্যকর অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট। ভিটামিন ‘সি’-এর চেয়ে ১০০ গুণ বেশি ফলদায়ক। এটা ডিএনএ সেলকে এমনভাবে সুরক্ষা দেয়, যেন ক্যানসারের প্রভাবে এর রূপান্তর না ঘটে।
★ গ্রিন টি তুলনামূলক ভালো, কারণ এটা চা-পাতা শুধু ভাপে সেদ্ধ করে শুকিয়ে তৈরি করা হয়।
★ গ্রিন টির ইজিসিজি ইউরোকিনেজ নামের এনজাইম তৈরিতে বাধা দেয়। এই এনজাইম ক্যানসার কোষের সংখ্যা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
★ শুধু চা বেশি উপকারী। দুধ-চিনি মেশানো চায়ের স্বাদ অবশ্য বেশি ভালো। তবে বিজ্ঞানীরা হালকা লাল চায়ের কথাই বেশি বলেন।
চা এর অপকারিতা
অতিরিক্ত চা পান করলে সেই চা আমাদের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। সেই জন্য আমাদের প্রত্যেককে উচিত একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ চা পান করা। চা কিভাবে আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে সেজন্য বেশ কিছু তথ্য আপনাদের সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে। আপনারা মনোযোগ সহকারে সকল তথ্যগুলো পড়ে নিন।
★ চা খাবার থেকে আয়রন শোষণ করে। কারণ চা বা কফিতে রয়েছে পলিফেনন জেস্টানিন নামক উপাদান যা আয়রন শোষণ করে বা জেস্টানিনরে সঙ্গে আয়রন মিশে শরীর থেকে বের হয়ে যায়।
★ চা শরীরে থায়ামিন বা ভিটামিন বি শোষণ রোধ করে যা বেরিবেরি রোগের অন্যতম কারণ।
★ চা খাবার থেকে আমিষ ও ভিটামিন শোষণ করে এবং শরীর এই খাবারগুলোকে হজম করতে পারে না।
★ চায়ের মধ্যে অ্যাসিডাম টেনিকামস ও জেসথিয়োফিলিনস নামক উপাদান রয়েছে যা পাকস্থলীর হজম প্রক্রিয়া ব্যাহত করে।
চা পান করার সঠিক সময়
সঠিক সময়ে চা পানে অনেক উপকারিতাও আছে। আসুন জেনে নেই চা পানের সঠিক সময়-
★ খাবার খাওয়ার অন্তত আধা ঘণ্টা আগে অথবা খাবার খাওয়ার এক ঘণ্টা পরে চা পান করা।
★ সকাল, দুপুর এবং রাতের খাবারের ১ থেকে ২ ঘণ্টা পরে চা বা কফি পান করা।
★ যাদের রক্তশূন্যতা আছে, কম বয়স্ক মেয়েরা বা যেসব নারীরা বৃদ্ধ নয় তাদের এই সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
★ যাদের হজমে ও অম্লত্বর সমস্যা রয়েছে তাদেরও এই সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
সম্মানিত পাঠকমণ্ডলী, আপনাদের প্রত্যেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আপনারা অবশ্যই এই প্রবন্ধটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন। এই প্রবন্ধে যে সকল তথ্যগুলো উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলো আপনাদের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কেননা আপনারা প্রত্যেকেই কম বেশি চা পছন্দ করেন এবং নিয়মিত চা পান করেন।
হয়তো এমনও হতে পারে যে আপনারা প্রয়োজনের চাইতে বেশি চা পান করেন। তবে সেই চা যে আপনার জন্য অনেক বেশি ক্ষতির কারণ হতে পারে সেটা কি আপনি জানেন। যদি না জেনে থাকেন তাহলে অবশ্যই এই প্রবন্ধটি পড়বেন। তাহলে চা কিভাবে আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে সেটাও আপনি জানতে পারবেন। সেই সাথে আপনি এটাও জানতে পারবেন যে চা কোন সময় কখন পান করা উচিত যাতে করে সেটা আমাদের শরীরের জন্য উপকার বয়ে নিয়ে আসতে পারে।