ধার ছাড়া কোন মরিচে পড়া পুরনো টিম বা লোহা দিয়ে যদি আপনার কোথাও আঘাত লাগে বা কেটে যায় তাহলে সাধারণ কেটে যাওয়া ক্ষতস্থানে যেভাবে চিকিৎসা করা হয় সেভাবে কিন্তু চিকিৎসা করলে চলবে না। অবশ্যই সাত দিনের মধ্যে আপনাকে টিটেনাস এর টিকা নিতে হবে। কিন্তু অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলে মেয়েদের অনেক সময় টিটেনাসের টিকা নিতে হয়। ১৫ বছর বয়স হলে এই মেয়ে শিশুদের টিটেনাসের সম্পূর্ণ কোর্স দেওয়া হয়। সেজন্য টিকার দোষ চলাকালীন ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সের মেয়েদের যদি এরকম কোন কেটে যায় বা আঘাত লাগে তাহলে সে ক্ষেত্রে তাদের টিটেনাসের টিকা গ্রহণ না করলে চলবে।
আজকে এই আর্টিকেলটিতে আমরা আপনাদের জানাবো যে টিটেনার্সের টিকা না নিলে কি ধরনের শারীরিক ক্ষতি হতে পারে। এবং কেটে গেলে ধনুষ্টংকার রোগ হওয়ার থেকে বাঁচার জন্য টিটেনাস এর টিকা নেওয়া হয়। টিটেনাসটিকা সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আমরা আপনাদের জানাবো। এই ভ্যাকসিনেশন এর নিয়ম এবং এই ভ্যাকসিনের যাবতীয় তথ্য জানতে আমাদের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণভাবে পড়ুন।
কেটে গেলে কী করণীয়কেটে গেলে প্রথমেই জায়গাটা ভাল করে ধুয়ে নিন। অনেকেই নানা সুগন্ধী সাবান দিয়ে জায়গাটা পরিষ্কার করেন। সেটা না করে বরং ব্যবহার করুন অ্যান্টি ব্যাকটিরিয়াল সাবান। ক্ষতস্থান ধুয়ে তার উপর একটা পরিষ্কার কাপড় বা গজ চেপে ধরলে রক্ত ক্ষরণ খানিকটা কমে।
কেটে যাওয়ার কিছুদিন পরে যদি আপনি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন তাহলে কিন্তু জীবনের ঝুঁকি বেড়ে যাবে। তাই কেটে যাওয়ার এক সপ্তাহের মাথায় কিন্তু টিটেনাসের টিকা নিতে হবে। আর এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ অবহেলা করলে চলবে না। টিটেনাসে এ ছাড়াও জ্বর, ঘাম, মাথাব্যথা, গিলতে সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, দ্রুত হৃদস্পন্দন ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয় । লক্ষণগুলি সাধারণত সংক্রমণের তিন থেকে একুশ দিনের পর দেখা যায়। সুস্থ হতে কয়েক মাস সময় লেগে যায়। প্রায় দশ শতাংশ ক্ষেত্রে মৃৃত্যু হয়ে থাকে।
পশুর কামড়ের মাধ্যমেও ধনুষ্টঙ্কার ছড়াতে পারে। ধনুষ্টঙ্কারকে প্রায়ই মরচে, বিশেষত মরচে ধরা পেড়েক এর সাথে যুক্ত করা হয়ে থাকে যদিও মরচে নিজে টিটেনাস সৃষ্টি করে না, তবে মরচে জমে থাকা বস্তুগুলি প্রায়শই বাইরে খোলা অবস্থায় থাকে বা অবাত ব্যাকটেরিয়ার আধিক্য যেখানে এমন জায়গায় পাওয়া যায়।
ধনুষ্টঙ্কার বা টিটেনাস, বা লক-জ, একটি ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ যার প্রধান লক্ষণ হল মাংস পেশীর খিঁচুনি| সাধারণত , খিঁচুনি চোয়ালে শুরু হয় এবং তারপরে শরীরের বাকি অংশে ছড়িয়ে পরে। প্রতিটি খিঁচুনির দমক সাধারণত কয়েক মিনিট স্থায়ী হয়। টিটেনাস টিকা (ভ্যাক্সিনেশন) দিয়ে টিটেনাস সংক্রমণ প্রতিরোধ করা যায়। আপনি যদি টিকা (ভ্যাক্সিনেশন) মিস করেন তবে আপনার কি করা উচিত? আপনি যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এই টিকার (ভ্যাক্সিনেশন) ডোজ মিস করেন, তাহলে আপনি ক্যাচ-আপ টিকার (ভ্যাক্সিনেশন) জন্য আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে পারেন।
কোন কাটা স্থানে টিটেনাস জীবাণুটির আক্রমণ করতে সময় লাগে ৩ দিন থেকে ৩ সপ্তাহ । প্রথম দিকে ঘাড়, শরীরের পেছন দিক এবং পেটে ব্যথা হতে পারে।জ্বর থাকতে পারে। মাংসপেশিগুলো সংকুচিত হতে থাকে এবং প্রচণ্ড খিঁচুনি হতে পারে। মুখের মাংসপেশিগুলো শক্ত হয়ে যাওয়ায় হাঁ করতে অসুবিধা হয়। শরীরের পেছনের মাংসপেশিগুলো সংকুচিত হয় বলে পুরো শরীর ধনুকের মতো বেঁকে যায়।
যে কোনো ব্যথা, শব্দ, আলো ইত্যাদির কারণে খিঁচুনি আরম্ভ হয় এবং ৩-৪ মিনিট স্থায়ী হয়। শ্বাসকষ্ট হয় এবং রোগী ঢোক গিলতেও পারে না। তাই এই টিকা কেটে যাওয়ার ৩ দিনের ভিতরে নেয়াই উত্তম। তাহলে কোন টেনশন থাকে না।কিন্তু এর চেয়ে দেরি মানে ১০ দিনের মধ্যেও যদি টিকা না দেওয়া হয় এবং উক্ত লক্ষন গুলোও যদি না দেখা যায়,তবে তখনও টিটেনাসে আক্রমন না হওয়ার সম্ভবনা থাকতে পারে। তাই যত দ্রুত সম্ভব টিকা গ্রহন করা উচিত।
কেটে যাওয়ার কত দিনের মাথায় টিটেনাসের টিকা নেওয়া হয় এবং এই টিকার গুরুত্ব সবই আপনারা জানতে পারলেন আমাদের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে। আশা করছি আপনাদের পর্যাপ্ত তথ্যপ্রধান করে আপনাদের সাহায্য করতে পেরেছি।