মুসলিম ধর্মের নিয়ম অনুযায়ী আপনারা যদি বিয়ে করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাদেরকে কাবিনের টাকা পরিশোধ করতে হবে। বর্তমান সময়ে বিয়ে বিষয়ক জিনিসগুলো অনেক কঠিন করে দেওয়ার কারণে যেনা অথবা ফেতনার বিষয়গুলো বেশি পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়ে গিয়েছে। তবে প্রথমেই বলে নিতে চাই কাবিন হল মেয়েদের সম্মানী এবং এটা বিয়ের সময় বরপক্ষ অবশ্যই কনেকে প্রদান করবেন। তাই কাবিনের টাকা পরিশোধ করার যে সকল নিয়ম রয়েছে সেগুলো আপনাদের উদ্দেশ্যে আলোচনা করা হলো এবং এ প্রসঙ্গে যদি কারো কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটের কমেন্ট বক্সে লিখে জানাবেন।
মুসলিম বিয়ের নিয়ম অনুযায়ী বিয়ের সময় অবশ্যই কোণেকে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ এমাউন্ট অথবা নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদ প্রদান করতে হবে। এক্ষেত্রে মেয়ের পক্ষ এবং ছেলের পক্ষে উভয়পক্ষ কথা বলার মাধ্যমে একটা নির্দিষ্ট দেনমোহর ধার্য করা হবে এবং তা বিয়ের সময় পরিশোধ করতে হবে। আমাদের দেশের সমাজ ব্যবস্থা অনুযায়ী যদি আমরা এই বিষয়গুলো আলোচনা করি তাহলে দেখব যে কাবিনের টাকা যদিও মেয়েদের সম্মান হিসেবে ধরা হয়েছে কিন্তু এখনকার সমাজ তা মেয়েদের নিরাপত্তার জন্য নির্ধারণ করে থাকে।
অর্থাৎ ছেলেপক্ষ অথবা ছেলে যদি কোন কারনে মেয়ে পক্ষকে ছেড়ে দেয় অথবা তালাক দিয়ে দেয় তাহলে সেই কাবিনের টাকা উদ্ধার করাটাই এখন মেয়ে পক্ষের প্রধান কাজ। অনেকেই মনে করে থাকেন এই কাবিনের টাকা নাকি মেয়ের নিরাপত্তার জন্য ভবিষ্যতে কাজে আসবে।কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী একজন ছেলে যখন বিয়ে করবে তখন অবশ্যই তাকে কাবিনের টাকা পরিশোধ করতে হবে এবং সেই টাকা পরিশোধ করার পরেই তাকে ইসলামী শরীয়া মোতাবেক বিয়ে করে স্ত্রীর হক পূরণ করতে পারবে।
অর্থাৎ আপনি কাবিন পরিশোধ না করেও কিন্তু সামাজিকভাবে এবং আমাদের সমাজের নিয়ম অনুযায়ী কাবিন বাকি রেখে বিয়ে করতে পারবেন এবং যাবতীয় পারমিশন পেয়ে যাবেন। এই সমাজ বিয়ে করার পর আপনার স্ত্রীর সঙ্গে আপনাকে থাকার অনুমতি প্রদান করবে এবং কাবিন পরিশোধ ব্যতীত আপনি স্ত্রীর সঙ্গে কাগজ-কলমে থাকতে পারবেন। কিন্তু ইসলামী শরীয়া মোতাবেক যদি আমরা আলোচনা করি তাহলে বলব যে কাবিন পরিশোধ ব্যতীত আপনি আপনার স্ত্রীর গায়ে হাত দিতে পারবেন না অথবা এরকম কোন নিয়ম নেই। তাই কাবিন পরিশোধ ব্যতীত সমাজ আপনাদের একত্রে থাকার অনুমতি প্রদান করতে পারলেও ইসলামী শরীয়া মোতাবেক কখনোই আপনাকে একত্রে থাকার অনুমতি প্রদান করবে না।
তাই যখন বিয়ে করবেন তখন অবশ্যই গোত্র অনুযায়ী বিয়ে করার চেষ্টা করবেন এবং বিয়ের যে সকল নিয়ম কানুন রয়েছে অথবা বর্তমান সময়ে যে জাঁকজমকপূর্ণ বিয়ের অনুষ্ঠান পালন করা হয় সেগুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন। কারণ লোকদেখানো বিয়ে করার চাইতে অথবা আপনার বিয়েতে অনেক মানুষ খাওয়া দাওয়া করবে এরকম মানসিকতা রাখার আগে ভাবতে হবে আপনার আর্থিক অবস্থা কেমন। আর্থিক অবস্থা যদি ভালো না হয় তাহলে এরকম ধরনের ঝামেলায় যাওয়া যাবে না এবং ঋণ করে বিয়ের এই কাজগুলো কখনোই সম্পন্ন করা যাবে না।
এমনও অনেক মানুষ রয়েছে যারা ঋণ করে বিয়ের অনুষ্ঠান জাকজমক কোন ভাবে পালন করে আজীবন সেই দিনের বোঝা টানছে। তাই ইসলামী শরীয়া মোতাবেক বিয়ে করলে অবশ্যই সেই বিয়েতে বরকত থাকবে এবং কাবিন বরের আর্থিক অবস্থা অনুযায়ী নির্ধারণ করতে হবে। যদি মেয়ে পক্ষ অধিক পরিমাণ কাবিন দাবি করে অথবা বেশি পরিমাণ টাকা দাবি করে তাহলে সেখান থেকে আপনাদের সামর্থ্য অনুযায়ী বিয়ে করার সক্ষমতা না থাকলে চলে আসা উচিত। আর কাবিন পরিশোধের নিয়ম অনুযায়ী আপনাদেরকে এটা টাকার মাধ্যমে পরিশোধ করা যেতে পারে অথবা স্বর্ণালংকার অথবা সম্পদের মাধ্যমে পরিশোধ করা যেতে পারে।
কিস্তিতে কাবিনের টাকা পরিশোধের নিয়ম
কিস্তিতে কাবিন পরিশোধের নিয়ম নেই। তবে কোনোভাবেই যদি আপনি কাবিনের বিষয়গুলো মানিয়ে নিতে না পারেন অথবা আর্থিকভাবে বহন করতে না পারেন তাহলে স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে তিনি যদি সম্মতি প্রদান করেন তাহলে আপনারা দিনে দিনে এই টাকা প্রদান করতে পারবেন। তবে এ বিষয়ে ইসলামিক কোন ভিত্তি নেই এবং এই ক্ষেত্রে ইসলাম এটাকে সমর্থন করে না। তাই বিয়ে করে যদি সংসারে বরকত আনতে চান অথবা সংসার জীবন যদি সুন্দর হয় পালন করতে চান তাহলে কাবিনের টাকা পরিশোধ করে বিয়ে করা উত্তম।