আপনি কি চাশতের নামাজ সম্পর্কে জানেন? চাশতের নামাজ কখন পড়তে হয় কিভাবে পড়তে হয় এটি কি আপনার জানা আছে? আপনি হয়তো চাশতের এর নামাজ সম্পর্কে জানেন না। আপনারা অনেকেই হয়তো জানেন না যে চাশতের নামাজের ভিন্ন ভিন্ন নাম রয়েছে। যেরকম ইশরাক চাশতের বা দুয়া এ সকল নামে এই নফল নামাজের পরিচিতি। নবীজি সাঃ এর উম্মতকে ইশরাক ও চাশতের নামাজ আদায় করতে উৎসাহ দিয়েছেন। এই নামাজের ওয়াক্ত হল সূর্য উদয় হওয়ার ১৫ মিনিট পর থেকে দ্বিপ্রহরের পাঁচ মিনিট আগ পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে আমাদের নামাজ আদায় করতে হয়।
সূর্য পরিপূর্ণভাবে উদিত হওয়ার পর ইশরাকের নামাজ আদায় করতে হয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম সূর্যোদয়ের পর এই দুই রাকাত নামাজ নিজে পড়তেন এবং অন্যদের পড়তে উৎসাহ প্রদান করতেন।
ইরশাদ হয়েছে, যে ব্যক্তি জামাতের সঙ্গে ফজরের নামাজ আদায় করল এবং সূর্যোদয় পর্যন্ত আল্লাহর জিকিরে বসে থাকলেও তৎপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করল সে একটি পরিপূর্ণ হজ ও ওমরার সওয়াব পাবে। (তিরমিজি: ৫৮৬)
এই কথা দ্বারা আমাদের বোঝা উচিত এটাই যে আমাদের প্রত্যেককে ইসরাকের নামাজ আদায় করতে হবে। নবীজি যেভাবে আমাদেরকে নির্দেশনা দিয়েছেন তার নির্দেশনা অনুযায়ী আমাদেরকে চাশতের নামাজ আদায় করতে হবে। তার নির্দেশিত পথে আমরা পরিচালিত হব। তিনি যে সকল বিষয়ে আমাদেরকে ঘোষণা দিয়েছেন সেই সকল ঘোষণা গুলো আমরা সঠিকভাবে পালন করব। তাহলেই আমাদের দৈনন্দিন জীবন অনেক বেশি সুন্দর এবং সাবলীল হবে।
চাশতের নামাজের নিয়ম
এই নামাজের নিয়ম সাধারণত নফল নামাজের মতই। সূর্য এক চতুর্থাংশ উপরে উঠলে গ্রীষ্মকালে নয়টা থেকে দশটা আর শীতকালে দশটা থেকে ১১ঃ০০ সময় সাধারণত তা আদায় করতে হয়। কোন সুন্নত নামাজে যেমন দুই রাকাত পড়ে ডানে ও বামে সালাম ফিরতে হয় ঠিক তেমনি এই নামাজেও ডানে এবং বামে সালাম ফিরতে হয়। সেই সাথে আরো একটি কথা বলা যায় যে ইশরাক নামাজের নিয়মের মতোই এই নামাজের নিয়ম আমরা অবশ্যই চাশতের নামাজ আদায় করব।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম যে নিয়ম আমাদেরকে জানিয়েছেন তিনি যে নিয়মে এই নামাজ পড়তেন সেই নিয়মে আমরা এই নামাজ আদায় করব তাহলে এই নামাজ কোনোভাবেই আমাদের ভুল হবেনা। আমরা সঠিক নিয়মে নামাজ আদায় করতে পারব। সঠিক নিয়মে আমাদের জীবন যাপন করতে পারব। আমরা প্রত্যেকে ইসলামের জীবনাদর্শী আদর্শিত। আর তাই ইসলাম আমাদেরকে যেগুলো আদেশ করেছেন সেগুলো পালন করব। ইসলাম আমাদের যেগুলো নিষেধ করেছেন সেগুলো আমরা পালন করব না।
চাশত এর নামাজের ফজিলত
এই নামাজের ফজিলত সম্পর্কে বলতে গেলে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহা হতে বর্ণিত একটি হাদিস থেকে আমরা বেশ কিছু তথ্য পেতে পারি। তিনি বলেছেন, আমার প্রিয়তম রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম আমাকে তিনটি বিষয়ে ওসিয়ত করেছেন যেন আমি তা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ত্যাগ না করি। প্রতি মাসে তিন দিন রোজা রাখা, দুহার নামাজ আদায় করা, ঘুমানোর আগে বেতের আদায় করা। এই তিনটি বিষয়ে আমাকে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম ওশিয়ত করেছেন।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম আমাদেরকে যে সকল পথে চলতে বলেছেন সেই পথে আমরা চলবো। তিনিই যে সকল পথে চলতে আমাদেরকে নিষেধ করেছেন সেই পথে আমরা চলবো না। আমরা যদি তার দেখানো পথে জীবন যাপন করতে পারি তাহলে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক ভালো কাটবে। আমরা আমাদের সকল কার্যক্রম গুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পারব।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম একটি জীবন আদর্শ। তিনি যে জীবন যাপন করতে আদেশ করেছেন আমরা সকলেই তার দেখানো পথে জীবন যাপন করব। আমরা যদি মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর কথামতো জীবন যাপন করতে পারি তাহলে আমাদের কাছে জান্নাত অতিশন নিকটে। আমরা জান্নাতের থেকে খুব বেশি দূরে অবস্থান করছি না।