আপাতদৃষ্টিতে ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তার মধ্যে মিল থেকে থাকলেও অথবা একটা অন্যটল সমার্থক শব্দ বলে মনে করে থাকলেও এক্ষেত্রে কিন্তু ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে। আর এই পার্থক্যের জায়গাটা হল পরিমাপ যোগ্যতা। তাই এখানে আপনাদের উদ্দেশ্যে ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তার মধ্যে যে সকল সূক্ষ্ম পার্থক্য রয়েছে সেগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করব। এখান থেকে আপনারা ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তার মধ্যে পার্থক্য বুঝে নিয়ে সে অনুযায়ী বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর প্রদান করতে পারবেন অথবা এই বিষয়ে যাদের ধারণা স্পষ্ট হচ্ছে না তারা ধারণাটি স্পষ্ট করে নিতে পারবেন। তাই ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তার মধ্যে যে পার্থক্য রয়েছে তা নিচের দিকে আপনাদের জন্য প্রদান করা হলো।
বিশেষভাবে আপনাদের জন্য আলাদা করে পার্থক্য প্রদান না করে আমরা এখানে গল্প আকারে বিষয়গুলো উপস্থাপন করার চেষ্টা করি। তাহলে আপনারা যেমন প্রত্যেকটা বিষয় বাস্তবসম্মত ভাবে বুঝতে পারবেন এবং উদাহরণ এখান থেকেই পেয়ে যাবেন। প্রকৃতপক্ষে একটা প্রতিষ্ঠান যখন পরিচালনা করা হয় তখন সেই প্রতিষ্ঠানে উৎপাদন সংক্রান্ত কোনো কাজের জন্য ঝুঁকি নেওয়া হয়ে থাকে। ঝুঁকি হলো যে আয় করা হবে সেই আয়ের সাথে প্রকৃত আয়ের যে পার্থক্য রয়েছে অথবা যে পরিবর্তনশীলতা রয়েছে সেটাকেই বলা হয়ে থাকে।
অর্থাৎ একটা প্রতিষ্ঠানের যখন কোন আই সংক্রান্ত কাজে ইনভেস্ট করা হবে অথবা উৎপাদন সংক্রান্ত কাজে কোন একটা বিষয় বিনিয়োগ করা হবে তখন সে ক্ষেত্রে আমরা যে কাজটা করছে সেটা হচ্ছে ঝুঁকি নেওয়া। বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে শুরু করে প্রতিষ্ঠানের দক্ষতা এবং দক্ষশীল কর্মীদের মাধ্যমে এই ঝুঁকি নেওয়া হয়ে থাকে। এই ঝুঁকি নেওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের কর্মপদ্ধতি অনুসরণ করা হয় অথবা কাজটা যেন সফলভাবে হয় তার জন্য সকলকে পরিশ্রমে হয়ে উঠতে হয়। তাই কোন কিছু অর্জন করতে চাইলে আমরা ঝুঁকি নিব এবং এই ঝুঁকি নেওয়াটাই হচ্ছে প্রথম স্টেপ।
ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তার মধ্যে দুইটি পার্থক্য
ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তার মধ্যে দুইটি যদি পার্থক্য দেখতে চান তাহলে বলবো যে প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনের ক্ষেত্রে কোন কিছু খরচ করা এবং এক্ষেত্রে পর্যাপ্ত জ্ঞান ব্যবহার করার মাধ্যমে তা অর্জন করার চেষ্টা করাটাই হলো ঝুঁকি। এক্ষেত্রে তা ঝুঁকি নেওয়ার মাধ্যমে অর্জিত হতেও পারে অথবা কোন কিছু বিফলতার কারণে নষ্ট। অপরদিকে অনিশ্চয়তা হল এমন একটা সিস্টেম যেটার জন্য আপনি ভবিষ্যতের জন্য কোন কিছু করলেন এবং এক্ষেত্রে তা আপনার অর্জিত নাও হতে পারে।
অর্থাৎ এখানে ঝুঁকি বলতে গেলে কোন একটা কাজ সংগঠন করা হয়েছে এমনটা বোঝানো হয়ে থাকে। আর অনিশ্চয়তা হচ্ছে এমন একটা প্রসেস যেটার মাধ্যমে আপনি ধারণা অর্জন করতে পারেন অথবা এটা একটা পরিকল্পিত চিন্তাশীল ভাবনা।
ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তার মধ্যে সম্পর্ক দেখাও
ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তার মধ্যে যদি সম্পর্ক দেখাও বলতে চান অথবা এ বিষয়ে সম্পর্ক কি আছে তা দেখতে চান তাহলে বলব যে এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে একটি অপরটি পরিপূরক হিসেবে কাজ করছে বলে মেনে নিতে হবে। কারণ আপনি যদি ঝুঁকি না নেন তাহলে এক্ষেত্রে অনিশ্চয়তার বিষয়গুলো উঠে আসছে না। আর ঝুকি না নিলে কোন কিছু সেভাবে পরিচিত হচ্ছে না। আর ঝুকি নেওয়ার ফলে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হতে পারে।
ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তার উদাহরণ
কোন কিছু তাত্ত্বিক মডেল অনুযায়ী তৈরি করতে গেলে সেক্ষেত্রে ঝুঁকি নেওয়া যেতে পারে। অন্যদিকে পরিমাপগত কারণে অনিশ্চয়তার বিষয়গুলো উঠে আসতে পারে। যেহেতু ঝুঁকিতে আপনি নির্দিষ্ট পরিমাণ বিনিয়োগ করার মাধ্যমে সেটার একটা হিসাব রাখা হচ্ছে, অন্যদিকে অনিশ্চয়তার কারণে ভবিষ্যতে সেটা কতটুকু উঠে আসবে অথবা কতটুকু সেখান থেকে অর্জন করা যাবে তা পরিমাপ করা যাবে না। ভবিষ্যৎ নিশ্চিত নয় বলেই এই ধরনের অনিশ্চয়তা গুলো আমরা মেনে নিই এবং সেই অনুযায়ী আমরা সেটা ক্ষতির বলে ধরি।
ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তার ধারণা
আমরা মনে করি যে উপরের দিকের আলোচনার ভিত্তিতে আপনারা ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তা বিষয়ক বিভিন্ন ধরনের ধারণা ও পার্থক্য বুঝতে পেরেছেন। পরিমাপ গত দিকের থেকে অনিশ্চয়তার কোন ভিত্তি নেই এবং ঝুঁকির দিক থেকে আমরা যদি পরিমাপ করতে যাই তাহলে দেখা যাবে যে সেখান থেকে আমরা একটা নির্দিষ্ট এমন খরচ করছি এবং সেটা ঝুঁকি নিয়েছি তা বলতে পারা যায়। তাই বাস্তবিক জীবনে কোন প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে গেলে ঝুঁকি ও নিশ্চয়তা বিষয়গুলো মাথায় রেখে আমাদেরকে কাজ করতে হবে।