আমার পরিচয় কবিতা লিখেছেন সৈয়দ শামসুল হক। এই কবিতাটির মূলভাব যখন আপনারা ইন্টারনেটের মাধ্যমে জানার চেষ্টা করবেন তখন আমরা আপনাদের সর্বোত্তম ভাবে এবং সহজ উপায়ে এটা জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। কারণ মূলভাব ব্যাখ্যা করাটা অনেক শিক্ষার্থীর পক্ষে কঠিন হয়ে যায় এবং কবিতা পড়ে আসলে কি বোঝানো হচ্ছে তা অনেকেই বুঝতে পারে না। তাই আপনাদের উদ্দেশ্যে যখন আমরা আমার পরিচয় কবিতার মূলভাব ব্যাখ্যা করব তখন অবশ্যই সেটা আপনারা মনোযোগ দিয়ে পড়বেন যাতে করে আপনাদের ভেতরে যাবতীয় কনফিউশন দূর হয়ে যায়। তাছাড়া মূলভাব যখন জানা থাকবে তখন সেটা অনুযায়ী আপনারা অন্যান্য সকল সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর প্রদান করতে পারবেন।
সৈয়দ শামসুল হক এই কবিতাতে তার পরিচয় ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। এখানে তিনি তার ব্যক্তির জীবনের পরিচয় ফুটিয়ে তোলার চাইতে অন্যান্য বিষয়ের প্রতি বেশি আলোকপাত করেছেন। তিনি নিজেকে বলতে নিজের দেশ সম্পর্কে যেমন বুঝিয়েছেন তেমনিভাবে এই দেশের বর্তমান অবস্থান কিভাবে পরিচয় পেয়েছে সে বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন। আমার পরিচয় কবিতায় খুবই খুব সুন্দর হবে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের কথা তুলে ধরেছেন এবং আমাদের এই জাতিসত্তা যেন আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন হয় সে বিষয়গুলো জানিয়ে দিয়েছেন।
এ জাতিকে সুন্দরভাবে গড়ে তোলার জন্য অতীতের বিভিন্ন ইতিহাস এবং ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়েছে যাতে করে সেগুলোর ভিত্তিতে এবং সাংস্কৃতিক পটভূমির ভিত্তিতে একটি জাতি হিসেবে আমরা সঠিকভাবে সকল ধরনের বৈশিষ্ট্য বজায় রেখে চলতে পারি। এছাড়াও কবি নিজের আত্মপরিচয় প্রদান করতে গিয়ে বাঙালি জাতির যে অনেক পুরাতন ইতিহাস ঐতিহ্য রয়েছে সেগুলো এত সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন এত সুন্দর ভাবে সেই শব্দগুলো ব্যবহার করেছেন যাতে করে আমরা ব্যাখ্যা মাধ্যমে পুরোপুরি বিষয় সম্পর্কে অবগত হতে পারি।
তাই কবি এখানে চর্যাপদ থেকে শুরু করে আমাদের বর্তমান সময়ে যাবতীয় সমস্যা গুলোর কথা তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। বিশেষ করে বিভিন্ন ধরনের ইতিহাস তুলে ধরার ক্ষেত্রে আমাদের যে বিশেষ বিশেষ ঐতিহ্য রয়েছে সেগুলো ফুটে উঠেছে। সেই সাথে এখানে চর্যাপদ এর বিভিন্ন অসাম্প্রদায়িক চেতনা ফুটে ওঠার পাশাপাশি মুসলিম ধর্ম ও সাহিত্য সংস্কৃতির বিকাশ এবং এদেশের অতীতকালের শাসনব্যবস্থা সম্পর্কে অনেক বিষয় উঠে এসেছে।
ব্রিটিশ শাসনামলে বিভিন্ন ধরনের আন্দোলন অথবা বিভিন্ন ব্যক্তিদের ত্যাগ স্বীকার এখানে আমরা পড়ার মাধ্যমে বুঝতে পারি। শুধু যে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলের মধ্য দিয়ে আমাদের এই পরিচয় ফুটে উঠেছে তা নয় বরং শিল্প সংস্কৃতি ও সাহিত্যের মধ্য দিয়েও আমাদের পরিচয় অনেকাংশে বহন করছেন। তাই সেই দৃষ্টিকোণ থেকে বলতে পারে যে রবীন্দ্রনাথের বিশাল সৃষ্টি যেমন আমাদের মানবিক মূল্যবোধ সৃষ্টি করার ক্ষেত্রে কাজে দিয়েছে তেমনি ভাবে নজরুলের সমস্ত বিদ্রোহী চেতনাও আমাদের ভেতরে কোন অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার চেতনা জাগিয়েছেন।
তাছাড়া যুগে যুগে ব্রিটিশ শাসন আমল থেকে শুরু করে অন্যান্য শাসনামলে যে অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে বাঙালি জাতি ঝাঁপিয়ে পড়েছে অথবা নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য চেষ্টা করেছে সে বিষয়গুলো তুলে ধরার মধ্য দিয়ে আমাদেরকে এটা জানানো হয়েছে যে অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবশ্যই প্রতিবাদ করতে হবে। তাই আমাদের সব সময় মুক্তির পথ দেখতে হবে এবং আমরা যদি আড়ষ্টতার মধ্যে থেকে যাই তাহলে আমাদের উন্নতি কখনোই সম্ভব হবে না। তাছাড়া মুক্তিযুদ্ধের যে অবদান আমরা দেখেছি তাতে করে আমরা এটা বুঝতে পারি যে বাঙালি জাতি যদি একত্রিত থাকে তাহলে কোন ধরনের অপশক্তি আমাদেরকে গ্রাস করতে পারবে না।
তাই আমার পরিচয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা কবিতা যা আপনার পরিচয় ফুটিয়ে তুলতে সাহায্য করবে। নিজের পরিচয় ফুটিয়ে তোলার ক্ষেত্রে মাথা নিচু করে অন্যের সামনে নিজেকে ছোট করে কোন কাজ করা যাবে না। সত্য এবং শুদ্ধের পথে থেকে নিজের জীবনকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে হবে এবং এক্ষেত্রে জীবনে যদি ঝড় আসে তাহলেও সেই ঝড় মোকাবেলা করতে হবে। আর এক্ষেত্রে যদি আমরা দুর্বল প্রকৃতির হয়ে থাকি তাহলে অতি থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে এবং সেই শিক্ষা কাজে লাগিয়ে নিজেদের পরিচয় অন্যের সামনে ফুটিয়ে তুলতে হবে।