সপ্তাহের ছয় দিন দুপুরের যোহরের নামাজ হিসেবে আমরা চার রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করে থাকলেও মসজিদে একত্রিত হয়ে অথবা নারীরা বাড়িতে যে দুই রাকাত নামাজ আদায় করেন সেটা আসলে ফরজ নামাজ নাকি ওয়াজিব নামাজ তা অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন। তাই আপনাদের জন্য আমরা এখানে জুমার নামাজ ফরজ না ওয়াজিব সে প্রসঙ্গে আলোচনা করব এবং আপনারা অবশ্যই মনোযোগ দিয়ে এই তথ্যগুলো করে দেখবেন। অবশ্য এ বিষয়ে কারো যদি প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে আমাদেরকে জানালে অবশ্যই আমরা আপনাদেরকে সেটা উত্তর প্রদান করার চেষ্টা করব।
আমরা এটা সকলেই জানি যে শুক্রবার মানেই হলো জুম্মার দিন এবং এই দিন আমরা একত্রিত হয়ে মসজিদে গিয়ে সকলের সঙ্গে খুতবা শোনার পাশাপাশি সালাত আদায় করে থাকি। তাছাড়া এই দিনটি অনেক ফজিলতপূর্ণ একটা দিন এবং এই দিনের বিশেষ কিছু আমল রয়েছে যেগুলো আমরা করার মাধ্যমে নিজেদের জন্য দোয়া করতে পারি। তাই বাস্তবিক জীবনে যারা বিভিন্ন সমস্যায় আছেন তারা এই দিনে ভালোভাবে ইবাদত বন্দেগী করে আল্লাহপাকের কাছে কোন কিছু চাইলে তিনি অবশ্যই তা প্রদান করবেন।
তাই জুমান দিনে আমাদের দেশে ছুটি প্রদান করা হয়ে থাকে এবং সরকারি বেসরকারি প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠানে কম বেশি ছুটি দেয়। এই ছুটির দিনে পরিবারের সঙ্গে থাকার পাশাপাশি অথবা সপ্তাহের কর্মবিরতির জন্য আমরা এই দিনটি পেয়ে থাকি বলে পরিবারের সঙ্গে সুন্দরভাবে যেমন দিন কাটাবো তেমনি ভাবে মসজিদে গিয়ে মুসলমান ব্যক্তিরা নামাজ আদায় করব। তবে আপনারা যদি এই পোষ্টের মাধ্যমে জুমার নামাজ ফরজ নাকি ওয়াজিবটা জানতে চান তাহলে বলব যে জুমার দিনের যে দুই রাকাত আপনারা জামায়াতের সঙ্গে আদায় করেন সেটা ফরজ নামাজ।
অন্যান্য দিন দুপুরের যে নামাজ পড়া হয় অর্থাৎ যোহরের নামাজের চার রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করা হয়ে থাকলেও জুমার দিনে দুই রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করা হয়ে থাকে। তাছাড়া আপনি যদি জুমার দিনে আজানের আগে মসজিদে উপস্থিত হতে পারেন তাহলে তার জন্য আলাদাভাবে সওয়াব পাবেন। সেই সাথে সুন্নত নামাজ অথবা তাহিয়াতুল ওযুর নামাজ আদায় করার পাশাপাশি যখন আপনাদের উদ্দেশ্যে খুতবা প্রদান করা হবে তখন সেটা মনোযোগ দিয়ে শুনবেন।
কারণ মনোযোগ দিয়ে খুতবা শোনা একটা ওয়াজিব কাজ এবং এই ক্ষেত্রে সুন্নত নামাজ আদায় করা উচিত নয়। কিছু কিছু মসজিদে সুন্নতের চার রাকাত নামাজ আদায় করার সময় প্রদান করা হয়ে থাকলেও কিছু কিছু মসজিদে তা প্রদান করা হয় না বলে খুতবা চলাকালীন অবস্থায় অনেকেই চার রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করে নেন। তাই আপনারা এমতাবস্থায় নামাজ আদায় করতে পারেন এবং যদি পরের সুন্নত নামাজ পড়ার সময় দেয়া হয়ে থাকে তাহলে মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনুন এবং সুন্নত নামাজের সময় সুন্নত নামাজ পড়ুন।
জুমার নামাজ ফরজ নাকি ওয়াজিব
জুম্মার দিনে সুন্নত নামাজের পাশাপাশি তাহিয়াতুল ওযুর নামাজ অথবা দুখুলিল মসজিদের নামাজ আদায় করতে পারেন এবং নফল নামাজ আদায় করতে পারেন। সেই সাথে জামাতের সঙ্গে আপনারা অবশ্যই দুই রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করবেন। অনেকে দেখা যায় প্রথমে চার রাকাত সুন্নত পড়ে পরবর্তীতে দুই রাকাত ফরজ নামাজ পড়ে বের হয়ে আসেন। কিন্তু আপনি যদি কম করেও জুম্মার নামাজ আদায় করতে চান তাহলে আপনাকে চার রাকাত, সুন্নত দুই রাকাত ফরজ এবং চার রাকাত সুন্নত মিলিয়ে দশ রাকাত নামাজ আদায় করতে হবে।
জুমার নামাজ ফরজ হওয়ার শর্ত কয়টি
জুমার নামাজ ফরজ হওয়ার শর্ত হিসেবে বেশ কয়েকটি শর্ত রয়েছে। একাকী এ নামাজ পড়া যাবে না এবং বেশ কয়েকজন নিয়ে জামাত করতে হবে। জুম্মার নামাজে অবশ্যই খুতবা প্রদান করতে হবে এবং এই নামাজ যেন যোহরের ওয়াক্ত অনুযায়ী পড়া হয় সে বিষয়টি মাথায় রেখে ওয়াক্তের সময় নির্ধারণ করতে হবে। তাছাড়া নামাজ শুরু করার বিষয়ে সকলের অনুমতি থাকতে হবে এবং অনুমতি সাপেক্ষে জুমার নামাজ আদায় করাটা ফরজ শর্ত পালন করার সমান হবে। ধন্যবাদ।