জিকির শব্দের অর্থ হল মহান আল্লাহ পাককে স্মরণ করা। তাই মহান আল্লাহ পাকের এত এত নিয়ামতের মধ্য দিয়ে যেহেতু আমরা বেঁচে আছি এবং এই পৃথিবীর বুকে বিচরণ করতে পারছি সেহেতু আল্লাহ পাককে স্মরণ করতে আমরা নির্দিষ্ট কিছু জিকির করতে পারি। আমরা যদি এই সকল জিকির করতে পারি তাহলে আল্লাহ পাককে স্মরণ করার পাশাপাশি সওয়াব অর্জন করা সম্ভব হবে। তাই অবসর সময়ে আজেবাজে চিন্তা যদি মাথায় আসে তাহলে সেগুলো দূরে সরানোর জন্য কিন্তু জিকির খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া জিকির করার মধ্য দিয়ে অন্তরের পরিশুদ্ধি চলে আসে এবং মন খারাপ থাকলে মন ভালো হয়ে যায়।
তাই বাথরুম ব্যবহার করা ব্যতীত আপনারা প্রত্যেকটি সময়ে জিকির করতে পারেন এবং জিকির করলে সেটার ফজিলত অবশ্যই পাবেন। আপনি যদি অনবরত দরুদ শরীফ আমল করতে পারেন তাহলে দেখা যাবে যে সেই আমলের ফলে আপনার প্রতি মহান আল্লাহপাক দশটি গুনাহ মাফ করে দিবেন এবং সেই সাথে আপনার প্রতি 10 টি রহমত নাযিল করবেন। তাছাড়া এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা ইবাদত হিসেবে পরিগণিত হবে। আবার দুনিয়ার জীবনে আমরা উঠতে বসতে চলতে ফিরতে কত রকমের পাপ করেছি তা কিন্তু জানিনা।
সেই ক্ষেত্রে আমরা যদি ইস্তেগফার অথবা আস্তাগফিরুল্লাহ আমল করতে হলে আমাদের জীবনের ঘটে যাওয়া পাপগুলো আস্তে আস্তে মুছতে শুরু করবে।তাই জিকির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা জিনিস এবং এটার মাধ্যমে আপনার মনের ভেতরের যে পেরেশানি রয়েছে অথবা আপনার মানসিক চিন্তাগুলো দূর হওয়ার পাশাপাশি এর ব্যবস্থা এমন ক্ষেত্রে থেকে সৃষ্টি হয়ে যাবে যা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না। তাই একাগ্র চিত্রে আপনারা যখন জিকির করবেন তখন অবশ্যই সেটা মহান আল্লাহ পাকের উদ্দেশ্য হতে হবে এবং যে টাকা জিকির করছেন সেটার অর্থ জেনে নিতে পারলে আশা করি সেই জিকিরের প্রতি একজন অন্য ধরনের ভালোবাসা সৃষ্টি হবে।
এই সকল জিকির আমরা বিভিন্ন সময় করতে পারি এবং প্রতিদিনে জিকিরের মধ্যে আমরা যে সকল জিকির করলে সবচাইতে ভালো হয় সেগুলো আল্লাহপাক অবশ্যই খুশি হবেন। তাই প্রত্যেকটি ফরজ ইবাদতের পাশাপাশি এই সকল জিকির করার মাধ্যমে আমরা নফল ইবাদত করতে পারছি এবং আল্লাহ পাকের যখন গুণগান গাওয়া সম্ভব হবে তখন অবশ্যই আল্লাহ পাক আমাদের প্রতি আরো বেশি সন্তুষ্ট হবেন। এই জিকির যখন তখন করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার নিয়তটাই বেশি জরুরী।
জিকির কিভাবে করা উচিত
জিকির তিন ভাবে করা যায়। অর্থাৎ আপনি মনে মনে আল্লাহ পাক কে স্মরণ করতে পারেন অথবা আল্লাহ পাকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারেন। আবার আপনি চাইলে অন্তরে জিকির করার পাশাপাশি ঠোঁট নাড়িয়ে নাড়িয়ে শব্দ না করেও জিকির করতে পারেন। আবার যদি মনে করেন ঠোঁট নারিয়ে শব্দ করে জিকির করবেন তাহলে তাও করা যাবে। তবে কখনোই ফরজ ইবাদতকে উপেক্ষা করে জিকির করা যাবে না এবং এই জিকিরের কোন ফজিলত পাবেন না। তাই আল্লাহ পাকের নির্দেশিত প্রত্যেকটি ফরজ ইবাদতে আমরা অংশগ্রহণ করব এবং সান্নিধ্য লাভ করার চেষ্টা করব।
আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় জিকির
প্রকৃতপক্ষে আপনি বিভিন্ন আমল করতে পারেন এবং জিকির করার মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য চাইতে পারেন। তবে আপনি যেহেতু জানতে চেয়েছেন আল্লাহ পাকের সবচেয়ে প্রিয় জিকির কোনটি অথবা এক্ষেত্রে কোন জিকির গুলো করলে আল্লাহ পাক সবচেয়ে বেশি খুশি হবেন সেগুলো এখানে জানিয়ে দিচ্ছি। আল্লাহপাকের সবচেয়ে প্রিয় জিকির হল চারটি। সেগুলো হলো সুবহানাল্লাহি, আলহামদুলিল্লাহি, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু এবং আল্লাহু আকবার। এই চারটি জিকির করার পাশাপাশি আপনারা অন্যান্য আরো অনেক জিকির করতে পারেন এবং বিপদ আপদ থেকে রক্ষা করার জন্য এই জিকিরগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
প্রতিদিনের জিকির সমূহ
উপরের উল্লেখিত প্রত্যেকটা জিকির করার পাশাপাশি আপনারা বেশি বেশি করে দরুদ আমল করবেন। এছাড়াও আপনারা সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি, সুবহানাল্লাহিল আযীম ফজরের এবং মাগরিবের নামাজের পর আমল করবেন। তাছাড়া দোয়া ইউনুস এবং লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ আমল করবেন। বেশি বেশি করে তসবীহ পাঠ করতে হবে এবং আপনার মনের মত করে বিভিন্ন ধরনের ফজিলতপূর্ণ ইবাদত করার জন্য নির্দিষ্ট একটা রুটিন তৈরি করে নিয়ে সেগুলো জিকির করবেন।