বাংলাদেশ কত সালে জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে

বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে 1974 সালের 17 সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সদস্য পদ লাভ করে। জাতিসংঘের সদস্যপদ পাওয়ার পর 1974 সালে ২৫ শে সেপ্টেম্বর প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতিসংঘে তার ভাষণ প্রদান করেন।

কূটনৈতিক প্রতিনিধিত্ব

জাতিসংঘের সদর দপ্তরে বাংলাদেশের স্থায়ী ভাবে প্রতিনিধিত্ব করে। বর্তমানে জাতিসংঘের স্থায়ী প্রতিনিধিত্ব করছে আব্দুল মুহিত। তার নেতৃত্বেই জাতিসংঘের স্থায়ী মিশন ভিত্তিক অঙ্গ গুলির প্রতি বাংলাদেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট সকল ধরনের কার্যকলাপ পরিচালনা করা হচ্ছে।

জাতিসংঘ ও বাংলাদেশের ইতিহাস

বাংলাদেশের সাথে জাতিসংঘের সম্পর্কের সূচনা হয়েছে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের পর। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুধু মুক্তি আন্দোলনের জন্য ছিল না। এটি ছিল মানুষের মানবিক অধিকার এর আন্দোলন। সেই সময় বাংলাদেশের হয়ে অনেক বেশি বাংলাদেশকে সাপোর্ট করেছিল।

১৯৭১ সালে মার্চ মাসে অসহযোগ আন্দোলন শুরু হয়। সেই সময় বাংলাদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সহায়তা চেয়ে জাতিসংঘ তৎকালীন মহাসচিব এর কাছে প্রস্তাব দিয়েছিল। জাতিসংঘ বরাবরই উন্নয়ন কর্মসূচির প্রতিনিধির সঙ্গে একটি বিশেষ বৈঠক করার মাধ্যমে। ১৯৭১ সালে বাঙ্গালীদের ওপর যে অমানবিক আচরণ করা হয়। তার তীব্র প্রতিবাদ জানাই জাতিসংঘ। সেদিন জাতিসংঘের মহাসচিব এই গণহত্যা কে নিন্দা করেছিলেন, এবং বলেছিলেন মানব ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম কলঙ্কিত অধ্যায় এটি যা বাংলাদেশের ঘটেছে।মুক্তিযুদ্ধ এরপর ১৯৭১ সালের সরকার গঠন করার পর অন্যান্য দেশ মুক্তি উদ্যোগ আমি মানুষকে অনেক বাহবা দেয়।

বাংলাদেশের জাতিসংঘে যোগদান

নয় মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ হবার পরে জাতিসংঘ থেকে বাংলাদেশ সদস্য পদ লাভ করে। বাংলাদেশ জাতিসংঘের যোগদানের পর থেকে নানা ধরনের নিয়ম-কানুন, মানব অধিকারের বিষয়গুলো উঠে আসে, অর্থনৈতিক সমস্যা, আইনের শাসন, মৌলিক অধিকার সহ, ন্যায়বিচার নিশ্চয়তা দেয় জাতিসংঘ বাংলাদেশকে।

জাতিসংঘের বাংলাদেশের ভূমিকা

জাতিসংঘের সদস্য পদ পাবার পর থেকেই বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘের বিশ্ব সভায় নানা ধরনের পদক্ষেপ এ অংশগ্রহণ করেছেন। এছাড়াও বাংলাদেশ জাতিসংঘের বিভিন্ন সামাজিক, অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত রয়েছে। বাংলাদেশ জাতিসংঘ থেকে সদস্য পদ লাভ করার পর 1975 সালের সাধারণ পরিষদের সভাপতি নির্বাচিত হন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৪১তম অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী।

বাংলাদেশের জাতিসংঘের ভূমিকা

বর্তমান সময়ে জাতিসংঘের ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে পৃথিবীর প্রতিটি দেশে। বাংলাদেশে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। বাংলাদেশের জনগণের উন্নয়নের লক্ষ্যে জাতিসংঘ দশের বেশি সংস্থা বাংলাদেশে পাঠিয়েছে। জাতিসংঘ বাংলাদেশের যে সংস্থা গুলো পাঠিয়েছে তাদের উল্লেখযোগ্য কাজগুলো হলো বিদ্যুৎ শক্তি, পরিবেশ, জরুরী সহায়তা, শিক্ষা, দুর্যোগ মোকাবেলা, খাদ্য, সুশাসন, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, আদিবাসী জনগণের অভিগমন, পোস্টটি নিরাপত্তা, জনসংখ্যা নিরাপত্তা সহ নানা ধরনের সমস্যা সমাধানের জাতিসংঘ কাজ করছে।

জাতীয় উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য জাতিসংঘ থেকে বাঙালি সরকার বেশ কিছু টাকা ঋণ নিয়েছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নমূলক কাজের জন্য জাতিসংঘ থেকে যে সংস্থাগুলো আছে। তারা বেশিরভাগ সময় গ্রামের অসহায় মানুষের বিপদে আপদে পাশে থাকার চেষ্টা করে। স্বাস্থ্য চিকিৎসার দিকে জাতিসংঘ বেশি নজর দিয়েছে বাংলাদেশ।

শান্তিরক্ষা

বাংলাদেশে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনী রয়েছে, ২০১৭ সালে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ থেকে ৭২৪৬ জন মানুষ নিযুক্ত ছিল। ৭৯৮৮ সালের সর্বপ্রথম শান্তিরক্ষা বাহিনী হিসাবে বাংলাদেশ থেকে মানুষ পাঠানো হয়েছে। এ যাবত পর্যন্ত শান্তিরক্ষা প্রতিষ্ঠা করতে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের শান্তি রক্ষা বাহিনী গিয়েছে। সেই দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে পূর্ব তিমির, লেবানন, নামিবিয়া, দক্ষিণ সুদান সহ আরো বেশ কিছু দেখে বাংলাদেশ থেকে শান্তি রক্ষা বাহিনী প্রেরণ করা হয়েছে বিভিন্ন সময়।

বাংলাদেশ থেকে শান্তিরক্ষা বাহিনী অন্য দেশকে রক্ষা করতে গিয়ে এই যাবত পর্যন্ত 135 জন শান্তিরক্ষা বাহিনী সেনা মৃত্যুবরণ করেছেন। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ থেকে জাতিসংঘ কে তৃতীয় বৃহত্তম সংখ্যক ব্যক্তি সরবরাহ করেছিল বাংলাদেশ সরকার।আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করেছি বাংলাদেশে জাতিসংঘে ভূমিকা সম্পর্কে। জাতিসংঘ বাংলাদেশকে এ যাবৎ পর্যন্ত অনেক উপকার করেছে। বাংলাদেশের যেকোনো সমস্যায় তারা সব সময় এগিয়ে এসেছে।

 

Leave a Comment