আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা প্রয়োজন ছাড়া এতটা বেশি কথা বলেন না। প্রয়োজনে কথা বলেন, অপ্রয়োজনে বেশি কথা বলেন না। আপনি কি জানেন অপ্রয়োজনে কথা বলা ইসলামের অনেকভাবে নিষেধ করা হয়েছে। আপনি যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু কথা বলুন। আপনার যেটুকু প্রয়োজন নাই সেটা নিয়ে আপনি কেন কথা বলবেন। এই বিষয়ে অনেক উক্তি পাওয়া যায় ইসলামে, অনেকগুলো উক্তি রয়েছে পবিত্র কুরআনে এবং হাদিসে অনেক কথা উল্লেখ রয়েছে।
আজকে যদি আপনি আমাদের এই প্রবন্ধটি পড়েন তাহলে এখানে এরকম আরো অনেকগুলো উক্তি আপনারা দেখতে পাবেন যেগুলো আপনাদের ভালো লাগবে। আপনারা যদি এগুলো পড়েন তাহলে আপনাদের নিজেদের জীবন সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবেন। সেজন্য আপনাদেরকে যেটা করতে হবে সেটা হলো আমাদের এই প্রবন্ধটি আপনাকে মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। আপনি যদি মনোযোগ সহকারে এই প্রবন্ধটি পড়েন তাহলে এখানে যে সকল উক্তিগুলো উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলো আপনারা জানতে পারবেন।
অনেকেই আমাদের কাছ থেকে এই উক্তিগুলো চেয়েছেন তাদের জন্যই আমরা এই প্রবন্ধটি সাজাচ্ছি যেখানে চুপ থাকা নিয়ে অনেকগুলো উক্তি একসাথে সংযুক্ত করে আমাদের প্রবন্ধের মাধ্যমে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করার চেষ্টা করছি। আপনারা প্রত্যেকে আমাদের এই প্রবন্ধ গুলো মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আপনি যদি মনে করেন যে এই প্রবন্ধগুলো অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে দিবেন তাহলে সেটাও করতে পারেন। আর সেজন্য আপনি এই প্রবন্ধটি আপনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন।
আপনাদের জন্য আল্লাহ প্রদত্ত বেশ কিছু কথা এবং মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর কার্যক্রম ও তার কথা সম্পর্কে বেশ কিছু উক্তি এখানে উপস্থাপন করা হচ্ছে।
আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে আল্লাহ ও পরকালের ওপর ঈমান রাখে, সে যেন উত্তম কথা বলে; নতুবা চুপ থাকে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস নং : ১০২)
আবু হুরাইরা (রা.) হতে বর্ণিত হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন ভাল কথা বলে; নচেৎ চুপ থাকে।’ (বুখারি, হাদিস : ৬০১৮; মুসলিম, হাদিস নাম্বার : ১৮২)
আবু মুসা (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘হে আল্লাহর রাসুল! সর্বোত্তম মুসলিম কে?’ তিনি বললেন, যার জিহ্বা ও হাত থেকে মুসলিমরা নিরাপদ থাকে। (বুখারি, হাদিস : ১১, মুসলিম, হাদিস নং : ১৭২)
সূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়াসাল্ল বর্ণিত কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ হাদীসঃ
০১] “যে আল্লাহ এবং আখিরাতের ওপর ঈমান রাখে; তাঁর উচিত ভালো কথা বলা অথবা চুপ থাকা।” (বুখারী শরীফ)
০২] “যে চুপ থেকেছে, সে নাজাত পেয়েছে।”(তিরমিজী শরীফ)
০৩] “যে মানুষ তার জবান ও যৌন জীবনের জামীন হতে পারে, আমি তার জান্নাতের জামীন হবো।(বুখারী শরীফ)
০৪] “যে নিরাপদ থাকতে চায়, তার চুপ থাকা অতি জরুরী।” (মুসনাদ আবী ইয়া`লা)
০৫] “জিহবা মানুষের অধিকাংশ পাপের মূল।”
০৬] “চুপ থাকা একতা ইবাদত। চুপ থাকা হলো আলেমের সৌন্দর্য। আর জাহেলের পর্দা।” (জামেউস সগীর)
০৭] চুপ থাকা আখলুক সমূহের সরদার।” (মুসনাদুল ফিরদাউস)
০৮] “তোমার ওপর নেকীর কথা বলা ছাড়া(বাকি সময়ে) বেশি চুপ থাকা জরুরী করে নাও। কারণ, এটি শয়তানকে তোমার নিকট থেকে দূর করে দেবে। আর ইসলামের কাজে তোমার সহায়তাকারী হবে।” (ইবনে হিব্বান)
০৯] “হিকমতের ১০টি অংশ আছে। এর ৯টি অংশ একাকীতে। আর ১টি অংশ চুপ থাকাতে আছে।” (মুসনাদুল ফিরদাউস)
১০] “হক কথা বলা ছাড়া চুপ থাক। তাহলে এর কারণে তুমি শয়তানের ওপর জয়ী হবে।”
(ক) চুপ থাকা যা ইবাদতের খুঁটি।
(খ) আল্লাহ এর নিকট মিনতি।
(গ) দুনিয়ার প্রতি অনাসক্তি এবং
(ঘ) অল্পে তুষ্টি।
■ হজরত সুলায়মান(আঃ) বলেনঃ “যদি কথা বলা রৌপ্য হয়, তাহলে চুপ থাকা হলো স্বর্ণ!”
■ হজরত দাউদ(আঃ) বলেনঃ “আমি কথা বলে অনেক বার লজ্জিত হয়েছি! কিন্তূ চুপ থেকে কখনো লজ্জিত হইনি।”
■ হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মুবারক(রহঃ) বলেনঃ “যদি আল্লাহর কাজ করার কথা বলা রূপা হয়, তাহলে তাঁর নাফরমানীমূলক কথাবার্তা থেকে চুপ থাকা হলো সোনা!”
■ হজরত সুফিয়ান সওরী(রহঃ) বলেনঃ “দীর্ঘ সময় চুপ থাকা ইবাদতের ভান্ডার।”
তিনি আরো বলেনঃ “ইবাদতের শুরু চুপ থাকা। অতঃপর ইলম হাসিল করা। এরপর তা মনে রাখা। তারপর তার ওপর আমল করা। সবশেষে তা শেয়ার করা।”
চুপ থাকা সম্পর্কে ইসলামিক উক্তি
মহানগর হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে আমাদের জীবন পরিচালনার দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। আমরা সেই দিক নির্দেশনা মেনে আমাদের জীবন অতিবাহিত করার চেষ্টা করি। আর তাই তিনি যে সকল কথা আমাদেরকে বলেছেন সে সকল কথা আমরা মেনে চলবো।
আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম বলেন “যে আল্লাহর পরকালের উপর ঈমান রাখে সে যেন উত্তম কথা বলে অথবা চুপ থাকে” এটি সহীহ বুখারী হাদিস নম্বর ১০২ এ রয়েছে।
এই কথা দ্বারা আমরা বুঝতে পারি যে আমরা যে কথা বলব সেই কথা যেন অবশ্যই কার্যকরী হয়, সেই কথা যেন অবশ্যই আমাদের জীবন সম্পর্কে হয়। আমরা যদি জীবন সম্পর্কের কথা বলি তবে সেটা বলতে হবে। আর যদি জীবনের বহির্ভূত কথা বলতে চাই তাহলে সেটা আমাদের বলার প্রয়োজন নেই। কেননা সেটা ব্যক্তিজীবনে কোন উপকারে আসবে না। সেইজন্য আপনারা যখন কথা বলবেন তখন অবশ্যই খেয়াল রাখবেন যে আপনি যখন কথা বলছেন তখন সে কথাটি যেন অবশ্যই মানুষের কল্যাণী হয়।