আপনারা যদি পুরুষ মানুষ হয়ে জুম্মার নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে অবগত হতে চান তাহলে এই নামাজ অবশ্যই মসজিদে গিয়ে আদায় করবেন। পুরুষ মানুষের জন্য প্রত্যেকটা নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করা উচিত। তাই জুম্মার নামাজ আপনারা যদি অন্যান্য দিনের জোহরের নামাজের মত করে পড়তে চান তাহলে বলব যে এই ক্ষেত্রে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। কারণ অন্যান্য দিন জোহরের ফরজ নামাজ চার রাকাত হয়ে থাকল জুম্মার ফরজ নামাজ দুই রাকাত হয়ে থাকে।
তাই আপনারা জুম্মার নামাজ যদি আদায় করতে চান তাহলে সঠিকভাবে আপনাদেরকে অবশ্যই নামাজ আদায় করতে হবে এবং যে নামাজ যত রাকাত সেটা সেভাবেই আদায় করতে হবে। সাধারণত আপনি যখন মসজিদে উপস্থিত হয়ে থাকবেন তখন অবশ্যই তাহিয়াতুল অজুর দুই রাকাত নামাজ আদায় করবেন। এরপরে আপনারা নিয়ম অনুযায়ী কাবলাল জুমার চার রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করবেন। এক্ষেত্রে আপনারা নিয়ত করার ক্ষেত্রে কাবলাল জুম্মার চার রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করার জন্য কিবলোমুখি হইয়া মহান আল্লাহ পাকের কাছে নিয়ত বেঁধে নামাজ শুরু করছেন এভাবে নিয়ত করবেন।
জুম্মার নামাজের খুতবা শোনা ওয়াজিব এবং এক্ষেত্রে আপনারা যদি আজানের আগ দিয়ে মসজিদে উপস্থিত হতে পারেন তাহলে এই ক্ষেত্রে অনেক সওয়াব হাসিল করতে পারবেন। এই মসজিদে উপস্থিত থেকে ইমাম সাহেব যে খুতবা প্রদান করছেন সেটা অবশ্যই মনোযোগ দিয়ে শুনবেন এবং কেউ যদি দেরিতে প্রবেশ করেন তাহলে অনেক সময় মসজিদে সুন্নত নামাজ আদায় করার সময় প্রদান করে থাকে বলে সেই সময় নামাজ আদায় করে নেবেন।
এভাবে আপনারা জুম্মার সুন্নত নামাজ শেষ করার পর ইমাম সাহেবের বাংলা এবং আরবি খুতবা শোনা শেষ করে যখন জামাতে দুই রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করার জন্য সকলকে দাঁড়াতে বলবে তখন অবশ্যই দাঁড়াবেন। তারপরে জুম্মার দুই রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করার জন্য কিবলামুখিয়া ইমামের পেছনে নিয়াত বাধছি বলে নিয়ত করবেন। এক্ষেত্রে কেরাত ইমাম সাহেব পড়ে থাকেন বলে আমাদেরকে অন্যান্য ক্ষেত্রে সকল নিয়ম মেনে চলতে হবে। জুম্মার নামাজ শেষ করার পরে অনেক মসজিদে মোনাজাত হয়ে থাকে এবং অনেক মসজিদে মোনাজাত হয় না। তাই আপনাদের ইচ্ছার উপর নির্ভর করে অথবা নিয়মের উপর নির্ভর করে মনোযোগের শরীক হতে পারেন।
এভাবে আপনারা জুম্মার নামাজ আদায় করবেন এবং নামাজ শেষ হলে আবার চার রাকাত বাদাল জুমার সুন্নত নামাজ আদায় করার জন্য নিয়ত করবেন। জুমার নামাজ যদি আপনি পরিপূর্ণ ভাবে পড়তে চান তাহলে দুখুলিল মাসজিদ, নফল নামাজ মিলিয়ে অনেক কয়েক রাকাত নামাজ আদায় করতে হবে। তবে সকল ক্ষেত্রে আপনার যদি সময় না থাকে তাহলে প্রথমে চার রাকাত কাবলাল জুমার নামাজ এবং দুই রাকাত ফরজ নামাজ থেকে শুরু করে চার রাকাত বাদাল জুমার সুন্নত নামাজ মিলিয়ে সর্বমোট ১০ রাকাত নামাজ বাধ্যতামূলকভাবে পড়তে হবে।
জুম্মার নামাজ পড়ার নিয়ত
আপনারা যদি জুম্মার নামাজ পড়ার নিয়ত সম্পর্কে অবগত হতে চান তাহলে এখানে উপরের উল্লেখিত নামাজের নাম উচ্চারণ করে সেটা সুন্নত নামাজ নাকি ফরজ নামাজ এবং কত রাকাত বিশিষ্ট নামাজ তা কিবলামুখী হইয়া অবশ্যই নিয়ত করবেন। তাছাড়া আপনারা যদি বিশেষভাবে কোন নামাজের নিয়ত সম্পর্কে অবগত হতে চান তাহলে আরবিতে এবং বাংলায় উভয়ভাবে এভাবে আপনাদের এই নিয়ত প্রদান করা হবে। তাই এখানকার আলোচনার ভিত্তিতে আপনারা এগুলো বুঝতে পারলেন এবং এই আলোচনার ভিত্তিতে আপনারা জুমার নামাজ আদায় করবেন।
জুম্মার নামাজ বাসায় পড়ার নিয়ম
কেউ যদি মসজিদে উপস্থিত না হতে পারেন এবং চরম অসুস্থতার কারণে বাড়িতে কোন মতে নামাজ আদায় করতে চান তাহলে অবশ্যই উপরের নিয়ম অনুযায়ী আপনাদের নামাজ আদায় করতে হবে। তবে পায়ে হেঁটে মসজিদে গিয়ে খুতবা শোনা থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি কাজে অংশগ্রহণ করার মধ্য দিয়ে আপনি ওয়াজিব এবং সুন্নত পালন করতে পারবেন। জুম্মার দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ একটা দিন হওয়ার কারণে এই দিনে যে সকল আমল বা ইবাদত হয়েছে সেগুলোতে অবশ্যই অংশগ্রহণ করে আপনারা অশেষ সওয়াব হাসিল করার চেষ্টা করবেন।