কুষ্ঠ রোগ হলো এক ধরনের চর্মরোগ। আমরা আমাদের আশেপাশে অনেক কুষ্ঠ রোগীকে দেখেছি। কুষ্ঠ রোগী বলতে শুধু চর্মরোগকে বোঝানো হলেও দীর্ঘদিন ধরে যারা কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত তারা কিন্তু শারীরিক দিক থেকে ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে যায়। কুষ্ঠ রোগী বলতে আমরা বুঝি শরীরের স্বাভাবিক চামড়া যখন আস্তে আস্তে সাদা বর্ণ ধারণ করে এবং খবরাকৃত দেখতে ভয়ংকর তৈরি হয় তাকেই কুষ্ঠ রোগী বলা হয়। সমাজের কষ্ট রোগীদের নিচু দৃষ্টিতে দেখা হয়। কুষ্ঠ রোগের ছবি অর্থাৎ কুষ্ঠ রোগীদের কিছু ছবি আজকে আমরা আপনাদের দেখাবো। এবং কুষ্ঠ রোগ সম্পর্কে অজানা কিছু তথ্য আমাদের জানা প্রয়োজন সেগুলোই আজকে আমরা আমাদের এই প্রতিবেদনটির মাধ্যমে জানতে পারবো।
স্কিন স্মীয়ার নামে একটি পরীক্ষার মাধ্যমে কুষ্ঠ রোগের ধরণ নির্ধারণ করা হয়। ত্বকের কুষ্ঠ আক্রান্ত অংশ থেকে সামান্য একটি অংশ কেটে নিয়ে এই টেস্ট করা হয়।কুষ্ঠ বা লেপ্রসি রোগের লক্ষণগুলো তেমনভাবে উল্লেখ করা না থাকলেও সব রোগের মত এই রোগেরও কিছু উপসর্গ এবং লক্ষণ থাকে।
মাল্টিবেসিলারি কুষ্ঠ হলে উপসর্গগুলি স্পষ্ট দেখা যায় যা এই রোগকে সহজে বুঝতে সাহায্য করে। এই ধরণের লেপ্রসির লক্ষণগুলি এরকম-
ফ্যাকাশে দাগ বা ছোপযুক্ত চামড়া।ত্বকের একেকটি অংশ অনুভূতিহীন ও বিবর্ণ হয়ে পড়ে। রোগাক্রান্ত অংশটি তার পাশের এলাকার তুলনায় হালকা রঙের হয়ে যায়।
*চামড়ার উপর ক্ষুদ্র ও উঁচু ফোঁড়া জাতীয় পদার্থ সৃষ্টি হয়।
*ত্বক শুষ্ক, খসখসে ও পুরু হয়ে ওঠে।
*পায়ের পাতার নিচে ঘা হয়।
*মুখ বা কানের কিছু অংশ উঁচু হয়ে ফুলে যায়।
*চোখের পাতা ও ভুরু সম্পূর্ণ বা আংশিক নষ্ট হয়ে যায়।
*সংক্রামিত জায়গায় অসারভাব ও ঘাম হওয়া, পঙ্গুত্ব, পেশীতে দুর্বলতা, স্নায়ুর বৃদ্ধি, বিশেষত কনুই ও হাঁটুর চারপাশে এবং গলার দুধারে মুখের স্নায়ুতে রোগ ছড়িয়ে পড়লে অন্ধত্ব চলে আসে।
বাড়াবাড়ি পর্যায়ে আরো কিছু উপসর্গ লক্ষ্য করা যায়। যেমন দীর্ঘদিন ধরে যদি কোন ব্যক্তি কুষ্টিয়া আক্রান্ত হয় তাহলে তার বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। আক্রান্ত জায়গায় ক্যান্সার পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। এছাড়াও যেগুলো রোগ দেখতে পাওয়া যায় কুষ্ঠ রোগীদের শরীরে সেগুলো হলো:-
পা ও হাত একদম অকেজো হয়ে যায়।
আঙ্গুল ও পা ছোট হয়ে আসে এবং শুকিয়ে যায়।
পায়ের আলসার বা ঘা নিরাময় হয় না।
নাক বিকৃত হয়ে যায়।
চামড়ায় জ্বালা করে।
স্নায়ুতে ব্যথা হয়।
কুষ্ঠ রোগ একটি চর্ম রোগ। কিন্তু কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা ধীরে ধীরে তাদের বিভিন্ন শারীরিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে বিভিন্ন আক্রান্ত হয়।এমনিতে ত্বকের রঙে উল্লেখযোগ্য বদল দেখে অভিজ্ঞ ডাক্তারেরা এই রোগ নির্ণয় করতে পারেন। কুষ্ঠ সংক্রমণ হলে আক্রান্ত অংশের চামড়ার রং ত্বকের আসল রঙের চেয়ে গাঢ় বা হালকা হয়ে যায়। সাধারণত এই ছোপগুলি লালচে আভাযুক্ত হয়। লেপ্রসি হয়েছে নিশ্চিত করে বুঝতে ডাক্তার ত্বক বা নার্ভ বায়োপসির নিদান দিতে পারেন।
কুষ্ঠ রোগ নির্ণয় করা হয় করা হয় ত্বকের রঙের দ্বারা যা ত্বকের আসল রঙের চেয়ে গাঢ় বা হালকা হয়। এই ছোপগুলি লালচে হতে পারে।পরীক্ষার ফলাফল নিশ্চিত করতে, ডাক্তার একটি ত্বক বা নার্ভ বায়োপসি পরিচালনা করতে পারে।
এই অবস্থায় এন্টিবায়োটিকের দ্বারা চিকিৎসা করা যাতে পারে, এই বহু-ড্রাগ থেরাপি অ্যান্টিবায়োটিক সহ্য করার ক্ষমতা এড়াতে গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ড্যাপসন, ক্লোফাজিমিন ও রিফাম্পিসিন।যদি এই ওষুধ থেকে অ্যালার্জি হয় তাহলে মিনোসাইক্লিন, ক্ল্যারিথ্রোমাইসিন ও অফ্লক্সাসিন কার্যকারী বিকল্প।সারহীনতা এড়াতে বিশেষ জুতাগুলি বেছে নিন যা পাটিকে সুরক্ষিত করে স্বাভাবিক গতিপথে আনবে। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে দৃশ্যমান বিকৃতির চিকিৎসা করা যেতে পারে এবং আত্মবিশ্বাস উন্নত করতে সাহায্য করে।
ম্পূর্ণভাবে, এই রোগের চিকিৎসা করতে প্রায় এক বছরের উপর লাগবে। আপনার ডাক্তারের কাছ থেকে দ্রুত পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। জোর করে সময় মতো চিকিৎসা করলে এটি সম্পূর্ণ নির্মূল হতে পারে। কিন্তু কুষ্ঠ রোগের সেরকম চিকিৎসা আজও আবিষ্কৃত হয়নি। কুষ্ঠরোগীরা বাহ্যিক দিক থেকে স্বাভাবিক মানুষ থেকে আলাদা দেখায়। এটি সাধারণত একটি চর্ম রোগের মধ্যে অন্তর্গত।