আমরা প্রায় অনেক সময় দেখি বাচ্চারা মোগো দাঁতের ব্যথায় খুব কষ্ট পাই। বিশেষ করে ছোট বাচ্চারা খাবার চিবানোর সময় অনেক কষ্ট পাই। কিন্তু ছোট বাচ্চাদের কোথায় ব্যথা হচ্ছে এটা আসলে বোঝা খুব মুশকিল কারণ তারা সঠিকভাবে বলতে পারেনা তাদের কোথায় ব্যথা হচ্ছে। এর জন্য বাবা-মাকেই সঠিকভাবে পরিচর্যার মাধ্যমে এই ব্যথাটি খুঁজে বের করতে হয়। কারণ প্রথমে গুরুত্ব না দিলে পরে বিষয়টা জটিল হয়ে উঠতে পারে তাই কোন কারণ ছাড়া কান্নাকাটি করলে বা খাবার খেতে সমস্যা করলে আপনাকে অবশ্যই দাঁত ব্যাথা কিনা এ বিষয়ে নজর দিতে হবে।
শিশুদের মুখ ও দাঁতের ব্যথার অন্যতম কারণগুলো হলো:
- বাচ্চাদের দাঁতের ব্যথার অন্যতম কারণ ক্যাভিটি। বাচ্চাদের দাঁতে ছোট বা বড় কোনো গর্ত দেখলে বুঝতে হবে সে ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছে।
- বাচ্চাদের মারি ফুলে বা লাল হয়ে থাকলে বুঝে নিতে হবে এটা এক ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে দাঁতের।
- বাচ্চাদের তো আর মুখ প্রতিদিন পরিষ্কার করানো যায় না তাই তাদের মুখে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে দাঁতের শক্ত আবরণ ক্ষয় হয়ে যেতে পারে। দাঁত ক্ষয়ে গেলে দাঁতের শিরশির অনুভূতি ও ব্যথা হয়।
- আমরা বাচ্চাদের প্রায় সময় দেখি তারা নিচের পার্টির ডাক দিয়ে উপরের পাটি দাঁত জোরে ঘষা দেয়। এছাড়া ঘুমের মধ্যেও তারা এটা করতে পারে এজন্য তাদের দাঁতে ব্যথা হতে পারে।
- বাচ্চাদের দুধের দাঁত পড়ে নতুন দাঁত ওঠার সময় মাড়ি ফুলে যেতে পারে এবং ব্যথা হতে পারে।
- বাচ্চারা বিভিন্ন সময় খেলাধুলা করতে গিয়ে আঘাত পেয়ে দাঁত ভেঙে যেতে পারে, দাঁতের শিরশির করতে পারে।
- মুখের ভেতর বিভিন্ন রকমের ভাইরাসজনিত অসুখ হতে পারে আলসারসহ কিছু সমস্যা দেখা দিল মুখ জ্বালা পোড়া করতে পারে এবং বাচ্চা কিছু খেতে চাইবে না।
- অনেক সময় বাচ্চাদের জিহ্বায় সাদা আস্তরণ দেখা দিতে পারে এই সমস্যার কারণে খাবারের অরুচি চলে আসতে পারে।
বাচ্চার দাঁতে ব্যথা হলে যা করবেন
বাচ্চার দাঁতে ব্যথা হলে অবশ্যই একজন নিকৃষ্ট চিকিৎসককে দেখাতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বাচ্চাকে চিকিৎসা দিতে হবে। এ সময় বাচ্চাকে বেশি ঠান্ডা বা গরম খাবার দেওয়া যাবে না ব্যথা কমানোর জন্য ঘরোয়া ভাবে কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়ে যেতে পারে চলুন দেখে নেয়া যাক সেই পদক্ষেপ গুলো কি কি:
- মাঝেমধ্যে বাচ্চাদের দাঁতের ফাঁকে জমে থাকা ময়লা খাদ্যগুলো বের করে দিতে হবে যে কোন উপায়ে।
- বাসায় কুসুম গরম পানিতে সাবান নেওয়া লবণ মিশিয়ে মুখে ৩০ সেকেন্ড রেখে কুলি করে ফেলতে হবে। এবং ব্যথা স্থানটি পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করতে হবে।
বাচ্চাদের দাঁত ব্যথায় প্রতিকার ও প্রতিরোধ
- প্রতিটি দুধ দাঁত একটি নির্দিষ্ট বয়সে এসে বাচ্চাদের উঠে থাকে। আমরা প্রায়ই সময় দেখতে পাই বাচ্চাদের ছয় বছর থেকে ১৩ বছরের মধ্যেই এই দাঁত উঠে। বাচ্চাদের কখন কোন দাঁত উঠে বা নড়ে যায় সেদিকে আমাদের মা-বাবাদের খেয়াল রাখতে হবে। দাঁতে ময়লা যুক্ত খাবার আটকে থাকলে অবশ্যই সেগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে হবে।
- দাঁতে বড় ধরনের কেভিটি বা ময়লা জমে গেলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিতে হবে। বাচ্চাদের ছোটবেলায় প্রতিবার খাবারের পর বাচ্চাদের মুখমণ্ডল সুন্দর করে পানি দিয়ে পরিষ্কার করে দিতে হবে।
- বাচ্চাদের মুখমণ্ডল পরিষ্কার রাখলে সকল ধরনের ব্যাকটেরিয়া বাচ্চাদের আক্রমণ করতে পারবে না। শিশুর ছয় মাস পার হলে অবশ্যই শিশুকে সকল ধরনের ফলমূল খাবার খেতে দিতে হবে। এতে করে শিশুর সকল ধরনের ব্যথা কম হবে।
- অবশ্যই বাচ্চাকে নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করার তাগিদ দিয়ে তাকে অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। ভালো ব্যান্ডের টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করতে হবে নিয়মিত তাহলে দাঁত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকবে এবং তাতে সকল ধরনের ব্যাথা ও কম হবে। খুব বেশি দাঁত ব্যাথা হলে অবশ্যই নিকটস্থ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে।