যুগে যুগে মানব জাতির হেদায়েতের জন্য আল্লাহ তাআয়ালা নবী রাসূলকে পাঠিয়েছেন। নবী-রাসুল মূলত আল্লাহর নির্দেশে ইসলাম পরিচালনার জন্য আত্মনিয়োগ করেছেন এবং ইসলামের জীবন দর্শন অনুযায়ী তাদের জীবন পরিচালনা করতেন। আর মানবজাতিকে ইসলামের পথে আনার জন্য যাবতীয় কার্যাবলী তিনি পালন করতেন। মূলত তারা আল্লাহ তায়ালার দেখানো ধর্ম ইসলামের প্রতি আত্মনিয়োগ করেছেন এবং ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে গেছেন।
আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য প্রত্যেকটি মুসলমান ব্যক্তি চেষ্টা করে এবং আল্লাহ তাআলার ইবাদতের মাধ্যমে জীবন অতিবাহিত করতে পছন্দ করে। কিন্তু কোন মুসলমান ব্যক্তি যদি আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য চেষ্টা না করে তাহলে দুনিয়াতে যেমন তার জন্য আল্লাহর রহমত নাযিল হয় না, তেমনিভাবে মৃত্যুর পরের জীবন বা পরকালের জীবনেও সে চিরশাস্তির স্থান জাহান্নাম লাভ করতে পারে। এজন্য প্রত্যেকটা মুসলমান ব্যক্তির উচিত আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির জন্য তার ইবাদতের মাধ্যমে সময় অতিবাহিত করা।
নবী ও রাসূলগণের মধ্যে সর্বশেষ এবং সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হলেন, রাসুল হলেন হযরত মুহাম্মদ (সাঃ). তিনি আল্লাহ তায়ালার দেখানো পথ অনুযায়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন এবং মুসলমান জাতিকে বা মানব জাতিকে আলোর পথ দেখানোর জন্য, সত্যের পথ দেখানোর জন্য, ইসলামের পথ দেখানোর জন্যই আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত হয়েছিলেন। তিনি তার জীবন দশায় কখনো খারাপ কাজ করেনি। প্রত্যেকটা মুসলমান ব্যক্তির তিনি ভালো চেয়েছেন এবং তিনি ইসলাম প্রতিষ্ঠা করে গেছেন।
ইসলাম হলো মূলত আল্লাহ তায়ালার দেখানো ধর্ম। ইসলাম শ্রেষ্ঠ ধর্ম। ইসলাম ধর্মের সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ হল আল কোরআন। আল্লাহ তায়ালা নবী- রাসুলগণের মাধ্যমে মানবজাতিকে দিকনির্দেশনা যেমন দিয়েছেন, তেমনিভাবে মুসলমান জাতিকে, মানবজাতিকে দিকনির্দেশনা প্রদানের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্মগ্রন্থ আল কুরআন নাযিল করেছেন। এটি এমন একটি ধর্মগ্রন্থ যেখানে ইসলামিক দিক নির্দেশনার সমস্ত বিষয় উপস্থাপন করা হয়েছে।
কোন মুসলমান ব্যক্তি যদি আল কুরআন শুদ্ধভাবে পাঠ করে এবং আল কুরআনের অর্থগুলো পড়ে, তাহলে তার জীবনে এমন কোন বিষয় থাকবে না যে সে অজানা। অর্থাৎ তার প্রয়োজনীয় সকল বিষয়ে কুরআনে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তাই প্রত্যেকটি মুসলমান ব্যক্তির কোরআন পড়া উচিত। আল্লাহ তায়ালার ইবাদতের মাধ্যমে জীবন অতিবাহিত করা উচিত। আল্লাহ তায়ালার ইবাদত করলে আল্লাহ পাক অনেক বেশি খুশি হন। তিনি দুনিয়ার জীবনে রহমত বর্ষণ করেন। শুধু দুনিয়ার জীবনে সফলতা লাভ করা যায় না, বরং পরকালীন বা আখেরাতের জীবনেও সফলতা লাভ করা যায় এবং পরকালীন জীবনে সফলতা লাভ করতে হলে এবং আল্লাহতায়ালা সন্তুষ্টি অর্জন করতে হলে অবশ্যই আল্লাহতালার ইবাদত করতে হবে।
আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা করা যায়। যেমন মিথ্যা কথা না বলা, সর্বদা সত্য কথা বলা, নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা, কুরআন তেলাওয়াত করা, একে অন্যকে সহযোগিতা করা, অন্যের বিপদে এগিয়ে আসা, কারো ক্ষতি না করা ইত্যাদি বিষয়গুলো হচ্ছে অন্যতম ইবাদত। তাছাড়া রয়েছে যাকাত, রোজা, সালাত, হজ্জ, কালেমা ইত্যাদি। কোন মুসলমান ব্যক্তি যদি এই সকল ইবাদতগুলো মেনে চলে এবং একনিষ্ঠ ভাবে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য চেষ্টা করে, তাহলে তার জন্য অবশ্যই ইহকালীন ও পরকালীন জীবনে মুক্তির পথ রয়েছে ও আল্লাহতালার রহমত রয়েছে।
অনেক মুসলমান ব্যক্তি দেখা যায় যে রাসূল (সাঃ) এর ছবি দেখতে চায় বা তিনি কেমন ছিল তা জানতে চায়। মূলত রাসূলের কোন ছবি সংগ্রহ করা নেই এবং কোন ছবি রাখা হতো না। এজন্য রাসূল (সাঃ) এর কোন ছবি পাওয়া যাবে না। তবে রাসুল (সাঃ) আল্লাহ তায়ালার সাধনায় তিনি তার সারাজীবন অতিবাহিত করেছেন এতে কোন রকমের সন্দেহ নেই। ইসলামকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য এবং মানবজাতিকে আলোর পথ দেখানোর জন্য রাসূল (সাঃ) তার সারা জীবন অতিবাহিত করেছেন এবং তিনি বিভিন্ন রকম বিপদের সম্মুখীন হয়েছেন। তবুও ইসলামের পতাকা তিনি কাঁধে নিয়ে চলেছিলেন।