কাঁথা সম্পর্কে আমরা সবাই কমবেশি জানি। কারণ এমন কোন বাঙালি নেই যে বাঙালি কাঁথা সম্পর্কে অবগত নয়। অর্থাৎ পুরনো অথবা নতুন কাপড় দিয়ে তৈরি করা বস্ত্র বিশেষ। যেখানে বিভিন্নভাবে সেলাই করা হয়ে থাকে। অর্থাৎ পুরনো বা নতুন কাপড় পড়াতে পড়াতে সাজিয়ে বিছানায় পারার জন্য অথবা শুয়ে থাকার জন্য যে বস্ত্র বিশেষ তৈরি করা হয় তাকে সাধারণত কাঁথা বলা হয়ে থাকে। আর নকশি কাঁথা হলো যে কথায় বিভিন্ন ধরনের ছবি সমাজ চিত্র তুলে ধরা হয়ে থাকে তাকে সাধারণত নকশি কাঁথা বলা হয়।
বাংলাদেশের বিভিন্ন ঐতিহ্যের মধ্যে অবশ্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহ্য। এবং বাঙালি বাংলাদেশ বাঙালি সমাজ কে চেনা যায় নকশী কাথার মাধ্যমে। যখন বর্ষাকাল বিশেষ করে তখনই নকশী কাঁথা বেশি তৈরি করা হয়। গ্রাম বাংলার মেয়েরা অবসর সময়ে অর্থাৎ সংসারের অন্যান্য কাজ করার অবসরে তারা এই কথা তৈরি করে থাকে। এই কাঁথা তৈরিতে মেয়েদের অনেক শ্রম এবং বিভিন্ন কাহিনী জড়িত থাকে। তাই এই কাহিনী গুলো সবগুলোই নকশী কাঁথার সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়।
নকশী কাথার ডিজাইন
নকশী কাঁথার ডিজাইন এর বিভিন্ন ধরনের নকশা ফুটিয়ে তোলা হয়। এই নকশার মধ্যে থাকে বিভিন্ন ধরনের বিষয়। যেমন গ্রাম বাংলার কোন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অথবা থাকতে পারে বিভিন্ন ধরনের চালচিত্র। পশু পাখির ছবি ইত্যাদি অনেক কিছু। নকশী কাঁথা মনের মাধুর্য মিশিয়ে সেলাই ফরায়ে এর মাধ্যমে অর্থাৎ সেলাইয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিকৃতি যেমন ফুটিয়ে তোলা হয় তেমনি ফুটিয়ে তোলা হয়। তবে এ সকল ডিজাইনগুলোর মধ্যে আমরা দেখি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই গ্রাম বাংলার সমাজ চিত্র। চট্টগ্রাম বাংলার যে প্রাকৃতিক ছবি সেগুলোই বেশি দেখা যায়। তাই বোঝা যায় যে গ্রাম বাংলার চিত্রই ফুটে উঠে নকশি কাঁথা। এবং নকশি কাঁথা এজন্যই একেবারে বাংলার নিজস্ব সম্পদ।
গ্রাম বাংলার মেয়েরা যখন অবসর সময় কাটায় তখন তারা বিভিন্ন বাড়ির বৌ- ঝি একসঙ্গে এসে বিভিন্ন আড্ডায় মেতে ওঠে এবং তার সঙ্গে তারা তাদের হাতের কাজ করে যায়। আর এই হাতের কাজ গুলোই হল বিভিন্ন ধরনের নকশা নকশি কাঁথা। আর এ কারণেই বলা হয় যে একটি কথা তৈরি করতে একটি পরিবারের অনেক দিন সময় পর্যন্ত লাগে এবং তার সঙ্গে অনেক কিছু মিশে থাকে। অর্থাৎ সুখ দুঃখ হাসি কান্না ভালোবাসা ইত্যাদি সকল কিছুই এই নকশী কাঁথার সাথে জড়িয়ে থাকে। এ কারণে নকশি কাঁথাতে যে শুধু কাঁথা বলা চলে এমন নয় এর সঙ্গে বাংলাদেশের সমাজের বিভিন্ন মেয়েদের বা তাদের পরিবারের সুখ-দুঃখ হাসি কান্না সকল কিছুই লুকিয়ে থাকে।
নকশী কাঁথা নিয়ে শেষ কথা
নকশী কাঁথা বাংলার ঐতিহ্য হলেও দেখা যাচ্ছে যে এই ঐতিহ্য এখন বিদেশেও পাড়ি জমাচ্ছে। বাংলাদেশের নকশি কাঁথা গুলো বিদেশে বেশ সমাদৃত হয়েছে। এই কারণে বিভিন্ন তৈরি পোশাক কারখানা থেকে নকশী কাঁথাও বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে এবং এখান থেকে বেশি কিছু বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হচ্ছে। একটি দেশের অর্ধেক মানুষ যদি বসে থাকে বা অর্ধেক মানুষ যদি এমনি এমনি সময় কাটায় বা সংসার ের কাজ করে বিনাতেপাত করে থাকে তাহলে অবশ্যই অর্থনৈতিক উন্নতি হতে পারে না। তাই গ্রাম বাংলার মেয়েরা যদি এই নকশি কাঁথা তৈরি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারে তাহলে অবশ্যই আমাদের দেশের জন্য অনেকটাই সুগম বয়ে আনবে।
তাই নকশী কাঁথা অবশ্যই আমাদের দেশের ঐতিহ্য এবং বিদেশী মুদ্রা অর্জনের একটি বিষয়। তাই আপনারা আজকে যেহেতু এই বিষয়টি সম্পর্কে আমাদের এখানে জানতে এসেছেন তা আপনারা অবশ্যই জেনে নিতে পারবেন আমাদের এখান থেকে। আমরা আজকে নকশি কাঁথা সম্পর্কে সব তথ্য আপনাদেরকে উত্থাপিত করলাম। এ ধরনের সকল তথ্য আপনারা আমাদের এখান থেকে জানার জন্য অবশ্যই দেখে নিতে পারবেন। তাই আপনারা আমাদের ওয়েবসাইট বারবার ভিজিট করে আমাদের পাশে থাকবেন বলে মনে করি।