বর্তমানে 2024 মে মাস অনুযায়ী দুবাই এর মুদ্রা অর্থাৎ এক দিরহাম সমান বাংলাদেশি ৩১.৮৪ টাকা।দুবাইয়ের মুদ্রার নাম দিরহাম। দুবাই দিরহামকে বাংলাদেশী টাকায় কনভার্ট করলে কত টাকা পাওয়া যায় সেটাই আজকের আমাদের আলোচিত বিষয়। আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা জানতে পারবো যে দুবায়ে কর্মরত বাংলাদেশী নাগরিকগণ কত টাকা ইনকাম করলে বাংলাদেশে স্বচ্ছল এবং সুন্দরভাবে জীবন যাপন করা সম্ভব।
সাপোজ অর্থাৎ আনুমানিক যদি কোন মানুষ অর্থাৎ যদি কোন বাংলাদেশী নাগরিক যদি দুবাইয়ে গিয়ে ১০০ টাকা বেতনের কোন চাকরি করে তাহলে সেটা বাংলাদেশে মাসিক বেতন হিসেবে কত টাকা হবে। তাহলে আমরা ১০০কে ৩১. ৮৪ পয়সা দিয়ে গুন করলে সহজে সেটা বের করে নিতে পারব।
(৩১.৮৪×১০০) = ৩১৮৪ বাংলাদেশী টাকা।তাহলে দুবাইয়ের ১০০ টাকা সমান ৩১৮৪ টাকা। তিন হাজার টাকা ধরে নিতে হবে কারণ এই কারেন্সি এর মান প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল। ২০২৪ সালে এটা এই রেট রয়েছে ২০২৫ সালের তার দ্বিগুণ অথবা তার অর্ধেক ও হয়ে যেতে পারে। মুদ্রা এর মান প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল।
দুবায়ে বহু সংখ্যক প্রবাসী রয়েছে যার অধিকাংশই বাংলাদেশী নাগরিক। বাংলাদেশ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের খাত গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে এই প্রবাসী নাগরিক বন্ধুগণ। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রবাসী বন্ধুগণব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলছে। বাংলাদেশের দরিদ্র বিমোচনে বিদেশি কর্মসংস্থানের গুরুত্ব অপরিসীম। একটি গ্রামের লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে প্রায় অধিকাংশ ঘরের একজন করে সদস্য বিদেশে রয়েছে। এবং তারা বিদেশে কঠোর ৎপরিশ্রমের মাধ্যমে উপার্জিত টাকা দেখে নিজের পরিবার-পরিজনদের কাছে পাঠায়। বাংলাদেশী বেকারত্ব বিমোচনে অপরশীম এই প্রবাসী কর্মসংস্থান।
বাংলাদেশের অনেক পরিবার সচ্ছলতার মুখ দেখতে পেয়েছে নিজেদের প্রিয়জনদের বিদেশ পাঠানোর মাধ্যমে। বিদেশ যাওয়া অনেক ব্যয়বহুল বলে অনেকে এটা এফার্ট করতে পারে না। তবে বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। প্রবাস কল্যাণ ব্যাংক এর মাধ্যমে বাংলাদেশী নাগরিকদের বিদেশে যাওয়ার জন্য আর্থিক লোন প্রদান করা হয়। এভাবে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচির মাধ্যমে দিন দিন প্রবাসী নাগরিকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
শুধু বেকারত্ব বিমোচন বা কর্মসংস্থানের জন্যই নয় অনেক বাংলাদেশী নাগরিক উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য স্কলারশিপ এর মাধ্যমে বিদেশ যায়। বিশেষ করে উন্নত দেশগুলোতে প্রবাস এর সংখ্যা বেশি। সেখানে বাংলাদেশী নাগরিক অল্প বেতনে শ্রমিকের কাজ করে যে অর্থ উপার্জন করে সেটা বাংলাদেশী টাকায় কনভার্ট করলে অনেক বড় অংকে পরিণত হয়। উন্নয়ন দেশের মুদ্রার মূল্য বাংলাদেশে অনেক।
এখন অধিকাংশ যুবকদের একটাই স্বপ্ন যে বিদেশে কর্মসংস্থানের মাধ্যমে অর্থনৈতিক সচ্ছলতা অর্জন করার পর বাংলাদেশে সুখ শান্তিতে বসবাস করা। বিদেশে কাজ করার মাধ্যমে অনেক দরিদ্র পরিবার সচ্ছল হয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি বড় খাত আসে এই প্রবাসী নাগরিকদের মাধ্যমে।প্রবাসীরা বিভিন্ন মানবহিতৈষী কর্মকা-ের পাশাপাশি ব্যবসায়িক উন্নয়ন এবং বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখছেন। প্রবাসী এবং অভিবাসী কর্মীদের প্রেরিত রেমিট্যান্স বাংলাদেশের বৈদেশিক রিজার্ভকে মজবুত এবং অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
বাংলাদেশের রেমিটেন্স প্রবাহ
বাংলাদেশী নাগরিক বিদেশে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে নিজেদের জীবনযাপনের জন্য সামান্য কিছু রেখে অধিক পরিমাণ মুদ্রা নিজের পরিবারের জন্য দেখে প্রেরণ করে। প্রবাসীদের প্রেরণকৃত এই বৈদেশিক মুদ্রাকে ই রেমিট্যান্স বলা হয়। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের রেমিটেন্স প্রভা ও ব্যাপকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরে রেকর্ড ২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন (২ হাজার ৪৭৭ কোটি) ডলার রেমিট্যান্স দেশে আসে। কিন্তু ২০২১-২২ অর্থবছরে রেমিট্যান্স প্রবাহ ১৫ দশমিক ১২ শতাংশ কমে নেমে আসে ২১ দশমিক শূন্য ৩ বিলিয়ন ডলারে। আর ২০২২-২৩ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছে ২১ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার। তাহলে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে বাংলাদেশের দরিদ্র বিমোচনে এবং আর্থিক উন্নয়নে রেমিটেন্স এর গুরুত্ব অপরিসীম।বাংলাদেশ একটি দরিদ্র দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেখে পরিণত হয়েছে। অর্থনৈতিকভাবে অগ্রগতির পেছনে বৈদেশিক মুদ্রার ভূমিকা যথেষ্ট প্রশংসনীয়।