আমরা যারা ইসলাম ধর্মের মানুষ তাদের প্রতিটি ক্ষেত্রে দোয়া করার হাদিস রয়েছে। প্রাকৃতিক প্রয়োজন পূরণ করতে আমরা পায়খানা বা বাথরুমে যেয়ে থাকি। বাথরুমে গেলে অবশ্যই আমাদের টিস্যু এবং পানি ব্যবহার করে পরিষ্কার পরিছন্নতার বিষয়টা খেয়াল রাখতে হবে। আমরা যদি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন না থাকি। নিজেকে পবিত্র না রাখি তাহলে আমাদের কোন ইবাদত কবুল হবে না। খেয়াল রাখতে হবে আমরা যেন সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকি।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, হে লোকেরা! আল্লাহ ‘তাইয়িব’ বা পবিত্র। তিনি পবিত্র জিনিস ছাড়া কিছু গ্রহণ করেন না। আল্লাহ তাঁর রাসুলদের যেসব বিষয়ের নির্দেশ দিয়েছেন, মুমিনদেরও সেসব বিষয়ের নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন হে রাসুলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার করতর এবং সৎ কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন । তোমরা যা করো সে সম্পর্কে আমি অবগত।সৃষ্টিকর্তা আমাদের সবকিছু দেখেন আমাদের উচিত সময় সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করা।
তিনি আরো বলেন, ‘হে মুমিনরা! তোমাদের আমি যে জীবিকা দিয়েছি তা থেকে পবিত্র বস্তু আহার করো। তাই আমাদের চেষ্টা করতে হবে ভালো কিছু করার এবং হালাল জিনিস গুলো খেতে হবে।
অতএব, ইবাদত কবুলের জন্য পবিত্রতা অর্জন গুরুত্বপূর্ণ। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও বাথরুম ব্যবহারের পর পবিত্রতা অর্জনের বিষয়গুলো শিক্ষা দিয়েছেন। অবশ্যই আমাদের এই গুরুত্বপূর্ণ কথাগুলি মানতে হবে।
এক হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘আমি তোমাদের জন্য পিতার মতো। আমি তোমাদের সব কিছু শিক্ষা দিয়ে থাকি। তোমরা প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গেলে কেবলাকে সামনে বা পেছনে দিয়ে বসবে না। ডান হাত দিয়ে শৌচকার্য সম্পাদন করবে না।’ তিনি তিনটি ঢিলা ব্যবহারের নির্দেশ দিতেন এবং গোবর ও হাড্ডি দ্বারা ঢিলা করা থেকে বারণ করতেন। -(আবু দাউদ, হাদিস : ০৭) তাই আপনারা চেষ্টা করবেন এই হাদিসগুলো মেনে চলার।
বাথরুমে প্রবেশের দোয়া
এর পাশাপাশি আল্লাহর রাসুল বাথরুমে প্রবেশ ও বের হওয়ার সময় দোয়া পড়ার কথা বলেছেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘নোংরা জায়গাগুলো জ্বিন ও শয়তানদের থাকার জায়গা। অতএব তোমাদের মধ্যে কেউ যখন প্রসাব-পায়খানায় যায়, সে যেন এই দোয়া বলে-
اللَّهُمَّ إِنِّى أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْخُبْثِ وَالْخَبَائِثِ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল খুবুসি ওয়াল খাবা-ইস।
অর্থ : হে আল্লাহ, আমি আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি দুষ্ট পুরুষ-জ্বিন ও দুষ্ট নারী-জ্বিনের অনিষ্ট থেকে। (বুখারি, হাদিস : ১৪২ )
অথবা যেন এই দোয়া বলে-
ﺑﺴﻢ ﺍﻟﻠﻪ اللَّهُمَّ إِنِّى أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْخُبْث وَالْخَبَائِثِ
উচ্চারণ : বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল খুবুসি ওয়াল খাবা-ইস।
অর্থ : আল্লাহর নামে শুরু করছি, হে আল্লাহ! আমি আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি দুষ্ট পুরুষ-জ্বিন ও দুষ্ট নারী-জ্বিনের অনিষ্ট থেকে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবাহ, হাদিস : ৫)
বাথরুম থেকে বের হওয়ার দোয়া
বাথরুম থেকে বাইরে আসার পর আরেকটি দোয়া পড়ার কথা বলা হয়েছে। দোয়াটি হলো—
الحمدُ للهِ الذي أَذْهَبَ عَنَّى الأَذَى وعَافَانِي
উচ্চারণ : আলহামদুলিল্লা হিল্লাজি আজহাবা আন্নিল আজা ওয়া আফানি
অর্থ : সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর যিনি আমার হতে কষ্টদায়ক বিষয়সমূহ দূর করেছেন এবং আমাকে নিস্তার দিয়েছেন।