পূজার ছুটি ২০২৪ দূর্গা পূজার ছুটি

বাংলাদেশের বড় বড় কয়েকটি উৎসবের মধ্যে দুর্গাপূজা অন্যতম। দুর্গাপূজা হচ্ছে হিন্দু ধর্মের সবচেয়ে বড় উৎসব। সে হিসেবে বলা যায় ঈদের পরে দুর্গাপূজা হল বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রধান উৎসব। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে প্রায় সবাই দূর্গা পূজার দিনগুলোতে আনন্দ করে থাকে।

বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র। এই দেশে প্রতিটি ধর্মের মানুষ শান্তিতে বসবাস করে। প্রত্যেক ধর্মের মানুষ একে অপরের বিপদে এগিয়ে আসে। ঠিক একইভাবে প্রতিটি ধর্মের প্রধান উৎসবগুলোও একই সাথে পালন করে থাকে। মুসলমানদের ঈদে যেমন হিন্দুরা দাওয়াত পায় তেমনি হিন্দুদের দুর্গাপূজোতেও মুসলমানদের দাওয়াত করা হয়। সুতরাং এ থেকেই বোঝা যায় দুর্গাপূজা বাংলাদেশের কত বড় একটি উৎসব।

সরস্বতী পূজার ছুটি

বর্তমান বছরে আপনারা যারা সরস্বতী পূজার ছুটি সম্পর্কে জানতে চান তাদের উদ্দেশ্যে আমরা এই ছুটির তারিখ সম্পর্কে অবগত করব। ইংরেজি মাসের সঙ্গে মিল রয়েছে এই তারিখ যদি আমরা আপনাদেরকে জানিয়ে দিতে পারি তাহলে আপনারা হয়তো নিজেরা সেই পূজার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারবেন। তাই সরস্বতী পূজার ছুটি সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতে অথবা সঠিক বিষয়ে জানার আগ্রহ নিয়ে যারা আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করেছেন তাদেরকে আমরা এই তথ্য প্রদান করতে পারি। বিদ্যার দেবী এই সরস্বতী পূজা যারা করতে চান তারা অবশ্যই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করবেন এবং আপনার এই বিদ্যার দেবীকে অবশ্যই স্মরণ করার পাশাপাশি তার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভক্তি নিবন্ধন করতে পারেন।

তবে ২০২৩ সালে অল্প কিছুদিন আগে সরস্বতী পূজা শেষ হয়ে গেল এবং এর মাধ্যমে সারাদেশে অনেক মানুষ এই পূজার সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই সরস্বতী পূজা হয়েছে এবং সুন্দরভাবে বোঝার শেষ হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা তাদের বিদ্যার দেবীর কাছে শিক্ষা বিষয়ক বিভিন্ন ধরনের সাহায্য চেয়ে প্রার্থনা করেছেন। তাই পরবর্তীতে যখন সরস্বতীর পূজার ছুটি প্রদান করা হবে তখন এই ছুটি সম্পর্কে আপনাদেরকে আমরা জানিয়ে দেবো যাতে করে আপনারা আগে থেকে সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারেন। বিদ্যার দেবীকে সন্তুষ্ট রাখার মধ্য দিয়ে আপনারা খুব সহজেই যখন বিদ্যা অর্জন করতে পারবেন তখন সেটা আপনার জন্য অনেক ভালো হবে এবং এটা আপনার পড়ালেখা জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়।

দূর্গা পূজার ছুটি

আমাদের আজকের পোস্টে দুর্গাপূজার ছুটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। অনেকেই দুর্গাপূজার ছুটির জন্য ওদের আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। একটা সময় ছিল যখন বছরের মাঝামাঝি সময় গুলোতে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হতো। সে সময় ঈদ ও দূর্গা পূজার ছুটি কাছাকাছি হত। অনেক সময় ঈদ ও দুর্গাপূজার ছুটি একসাথেও পাওয়া যেত। কিন্তু প্রতিবছর ক্যালেন্ডারে পরিবর্তন আসায় দূর্গা পূজার দিনগুলো অনেক পিছিয়ে এসেছে। আমাদের আজকের পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা দূর্গা পূজার তারিখ এবং ছুটি সম্বন্ধে সকল তথ্য জেনে নিতে পারবেন।

হিন্দু ধর্মের আরো অনেক উৎসব রয়েছে যেমন কালীপূজা, লক্ষী পূজা, সরস্বতী পূজা, শিবরাত্রি ইত্যাদি। তবে এই সব উৎসবের মধ্যে দুর্গাপূজা সবচেয়ে বড় উৎসব।

এ সময় দেবী দুর্গা কৈলাস থেকে পৃথিবীতে অর্থাৎ বাপের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। দেবী দুর্গার সাথে তার সকল সন্তানরাও পৃথিবীতে আসেন। দেবী দুর্গার সাথে আসেন লক্ষ্মী-সরস্বতী ,কার্তিক ও গণেশ। দুষ্টের দমনই হল দেবী দুর্গার প্রধান কাজ। পৃথিবী থেকে সকল দুষ্ট মানুষকে বিনাশ করার লক্ষ্যেই দেবী দুর্গা পৃথিবীতে আসেন। তাই হিন্দু ভাইদের জন্য দুর্গাপূজা সবচেয়ে প্রধান উৎসব। দূর্গা পূজার মধ্যে হিন্দু ভাই-বোনেরা দেবীর কাছে প্রার্থনা করে থাকেন। নিজের চাওয়া পাওয়া গুলো দেবীর কাছে জানিয়ে দেওয়ার উপযুক্ত সময় এটা।

দুর্গাপূজার সময় প্রতিটি মন্দির উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। মন্দিরের আশেপাশের প্রতিটি জায়গায় মেলা বসে। ঢাকের শব্দে মুখরিত হয় মন্দিরের আঙিনা। মনের মধ্যে অদ্ভুত এক ভালো লাগা কাজ করে এ সময়। পুজোর সময় গুলোতে মন্দিরে নানা ধরনের প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। প্রায় সকলেই এসব প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে থাকে। পুজোর সময় ধুনুচি নাচের প্রতিযোগিতা ভীষণ জনপ্রিয় হয়ে থাকে। ছোট বড় যুবক বৃদ্ধ সকলেই ধুনুচি নাচের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। ঢাকের তালে তালে হাতে ধুনুচি নিয়ে নৃত্য করতে হয়।

দুর্গাপুজোর দিনগুলোতে প্রতিটি মন্দিরে সুন্দর সুন্দর গান বাজানো হয়। এইসব গানগুলো পুজোর আমেজকে কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয়। গানের তালে তালে নাচতে থাকে প্রতিটি মানুষের মন। এদিন ছোট বড় ধনী-গরিব যুবক বৃদ্ধ কারো মধ্যে কোন ভেদাভেদ থাকে না। মেয়েরা এই দিন গুলোতে সুন্দর সুন্দর জামা কাপড় পড়ে এবং সুন্দরভাবে সেজে থাকে।

২০২৪ সালের দুর্গাপূজা হবে অক্টোবর মাসে। ৬ অক্টোবর মহালয়া অনুষ্ঠিত হবে। ১০ অক্টোবর পঞ্চমীর মাধ্যমে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হবে। ১০ অক্টোবর থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত দুর্গাপূজা চলবে।

প্রতি বছরের মত এ বছরও প্রতিটি পূজা মন্ডপে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোন দুষ্টু মানুষ যেন কোন ধরনের ঝামেলা সৃষ্টি করতে না পারে তা নিশ্চিত করতেই কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা জরুরী। আশা করি ২০২৪ সালের দুর্গাপূজা খুব সুন্দরভাবে উদযাপন করা সম্ভব হবে।

এবছর দুর্গাপূজায় অনেকদিন ছুটি থাকবে বলে আমাদের ধারণা। আপনারা যারা অধীর আগ্রহে ছুটির জন্য অপেক্ষা করছেন তাদের জন্য এটি নিশ্চয়ই অনেক খুশির খবর। আপনাদের অপেক্ষার প্রহর খুব শীঘ্রই শেষ হতে চলেছে। খুব শীঘ্রই আপনারা পরিবারের সাথে সুন্দর কিছু মুহূর্ত উপভোগ করতে পারবেন। এই মুহূর্তগুলো আপনাদের কাছে কতটা দামি তা আমরা অনুধাবন করতে পারি। পুরো একটি বছর আপনারা এই দিনগুলোর জন্য অপেক্ষা করে বসে আছেন।

দুর্গাপূজায় সারাদেশেই সাধারণ ছুটির ঘোষণা করা হয়। প্রতিটি মানুষই এই ছুটি ভোগ করে থাকে। দুর্গাপূজার সময় সকল সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। যেসব প্রতিষ্ঠান নিয়মিত জনসেবা দিয়ে থাকে সেসব প্রতিষ্ঠানগুলো সাময়িক খোলা থাকে।

পুজোর দিনগুলোতে শিশুদের মধ্যে ভীষণ আনন্দ বিরাজ করে। পূজোর প্রতিটি দিন তারা নতুন নতুন জামা কাপড় পরে এবং বিভিন্ন মন্ডপে দেবী দর্শন করতে যায়। সকলে মিলে গাড়ি ভাড়া করে বিভিন্ন মণ্ডপ পরিদর্শন করার মজা অন্যরকম। কোন মন্ডপের প্রতিমা বেশি সুন্দর হয়েছে তা নিয়ে সবার মধ্যে আলোচনা চলতে থাকে। প্রতিটি শহর জুড়েই এ সময় উৎসবের আমেজ থাকে। সকল ধর্মের মানুষেরাই প্রতিমা দর্শন করতে মন্ডপে উপস্থিত হয়ে থাকে। এ সময় পূজোর আয়োজকরা অতিথিদের যথেষ্ট আপ্যায়নের চেষ্টা করে থাকে।

আপনারা অনেকেই মনে মনে ভীষণ উত্তেজিত হয়ে আছেন পুজোর ছুটি নিয়ে। অনেকদিন পর দীর্ঘ একটি ছুটি পেতে যাচ্ছেন এবং এই ছুটিতে পরিবারের সকল সদস্য একসাথে অনেক মজা করতে পারবেন। এ সময় নিশ্চয়ই বাড়িতে সুন্দর সুন্দর খাবারের ব্যবস্থা করা হবে। নারিকেলের নাড়ু, মোয়া সহ ভীষণ মজাদার সব খাবার পূজোর মধ্যে তৈরি করা হয়। এ সময় নিমন্ত্রিত অতিথিদের এইসব মজাদার খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়।

নিজের খুব কাছের বন্ধুগুলোর সাথে দেখা হওয়ার উপযুক্ত সময় হল দুর্গাপূজা। পূজার ছুটিতে সব কাছের মানুষগুলোকে একসাথে পাওয়া যায়। ছোটবেলার বন্ধুগুলোকে কাছে পাওয়ার মত সময় হলো পুজোর ছুটি। ফ্রেন্ড সার্কেলের সকলেই বিভিন্ন পরিকল্পনা করে থাকে পূজার ছুটি নিয়ে। পূজার ছুটিতে একসাথে ঘুরতে যাওয়া, একসাথে কোথাও খেতে যাওয়া, কাছের বন্ধুদের বাড়িতে যাওয়া এই সবই করা যায়। এ সময় সকল কাছ থেকে কিছুদিনের জন্য বিশ্রাম নেওয়া হয়।

আপনারা অনেকেই হয়তো পূজোর ছুটি নিয়ে অনেক পরিকল্পনা করে রেখেছেন। অনেকদিন পর দীর্ঘ একটি ছুটি পেলে নানা রকম পরিকল্পনা করে রাখা অস্বাভাবিক কিছু নয়। আপনাদের সকল পরিকল্পনা যেন সফল হয় এই কামনা করি। আপনার পুজোর দিনগুলো হোক অনেক অনেক আনন্দময় এবং ভীষণ উপভোগ্য। নিজের কাছের মানুষগুলোকে সাথে রেখে পূজোর প্রতিটি দিন মজা করে উপভোগ করুন।

পূজার ছুটিতে যারা কোন পরিকল্পনা রাখেননি তাদের উচিত হবে এখনই নির্দিষ্ট পরিকল্পনা সেরে ফেলা। এখনই ভাবতে শুরু করুন পুজোর ছুটিতে কোন দিন কি করবেন। পঞ্চমী ষষ্ঠী সপ্তমী অষ্টমী ও নবমীর জন্য নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে ফেলুন। দশমীর দিনটাতে সবাই অবশ্য নিজেদের পূজা মন্ডপে ব্যস্ত সময় পার করে।

দশমীর দিনে সকলের মন ভীষণ খারাপ হয়ে থাকে। একে তো পুজোর দিনগুলো শেষ হতে থাকে এবং ছুটিও শেষ হয়ে যায়। তবে এত মন খারাপের মাঝেও সবাই হাসিমুখে দেবী দুর্গাকে বিদায় জানায়। এরপর থেকে আবার সকলে নিজ নিজ কাজে মনোযোগ দেয় এবং পরের বছরের জন্য আবার অপেক্ষা করতে থাকে।

আশা করি আমাদের এই পোস্ট থেকে দুর্গাপূজা সংক্রান্ত ও দুর্গাপূজার ছুটি সংক্রান্ত সকল তথ্য জেনে নিতে পেরেছেন। দূর্গা পূজার ছুটি সংক্রান্ত আরো তথ্য জানতে আমাদের ওয়েব সাইটে চোখ রাখুন এবং যেকোনো মন্তব্য থাকলে নিচে কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিন। বাংলাদেশের যে কোন উৎসবের ছুটি ও ছুটির তালিকা আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত প্রকাশ করা হয়। যে কোন নতুন সরকারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হওয়া মাত্রই আমরা আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করি। আশা করি সব সময় আমাদের সাথে থাকবেন এবং আপনাদের প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো যথাসময়ে জেনে নেবেন।

Leave a Comment