মহাপবিত্র গ্রন্থ আল কুরআন মুসলমান ধর্মের অনুসারী হয়েও যদি পড়া না শিখে না থাকা না করেন তাহলে এটা না পড়লে কি ধরনের শাস্তি হতে পারে অথবা কোন ধরনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হলেন তা এখানে আলোচনা করব। মুসলমান ধর্মে কিছু কিছু কাজ আমাদের জন্য ফরজ করে দেওয়া হয়েছে অথবা সেগুলো আমাদের জীবনে অবশ্যই বাধ্যতামূলকভাবে সম্পন্ন করতে হবে। যেমন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আপনি যে পরিস্থিতিতেই থাকুন না কেন পড়তেই হবে এবং যেখানেই থাকুন না কেন আপনাকে তাড়াতাড়ি করতেই হবে। তেমনি ভাবে কুরআন মাজীদ আমল করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা ইবাদত এবং এটা যদি না করেন থাকেন তাহলে কি কি সুযোগ সুবিধা থেকে দুনিয়ার জীবনে এবং পরকালে বঞ্চিত হলেন তা জেনে নিন।
কুরআন মাজীদ না পড়ার শাস্তি হিসেবে যদি আমরা বিভিন্ন হাদিস উল্লেখ করে তাহলে সেটা হয়তো অনেক দীর্ঘায়িত আলোচনা হয়ে যাবে। তবে হাদিসের বিষয়গুলো উল্লেখ না করে আমরা স্বাভাবিকভাবে দুনিয়ার জীবনে এবং আখিরাতের জীবনে আপনি কোন কোন সুযোগ-সুবিধা থেকে অথবা বিশেষ ব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত হলেন তা জেনে নিতে পারেন। যদি আপনি কোরআন শরীফ আমল না করেন এবং এই আমল না করার কারণে কি হতে পারে তা জানতে চান তাহলে সর্বপ্রথমে বলবো যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ পেশ করবেন।
অর্থাৎ আপনি দুনিয়ার জীবনে সুযোগ পাবার পরেও কোরআন মাজীদের শিক্ষা গ্রহণ করেননি এবং কোরআন মাজীদের শিক্ষা গ্রহণ না করার কারণে সঠিকভাবে দ্বীনি জীবন ব্যবস্থা অনুসরণ করতে পারেননি। যদিও বর্তমান সময়ে আপনারা প্রত্যেকটি সূরার বাংলা অনুবাদ পেয়ে যাবেন অথবা বাংলা উচ্চারণ পেয়ে যাবেন তারপরও সেটার সহিহ ওভাবে উচ্চারণ করা হবে না। অথচ আপনি যে নামাজ আদায় করছেন সেই নামাজের ভেতরে ঠিকঠাক মতো উচ্চারণ না করার কারণে কিছু কিছু অর্থ এতটাই বিকৃত হয়ে যাচ্ছে যে আপনার স্বভাবের পরিবর্তে গুনাহ লেখা হচ্ছে।
তাই কুরআন শরীফ শিক্ষা অথবা আরবি ভাষা যদি আমরা শিক্ষা অর্জন করতে পারি তাহলে সেটা দিয়ে আমাদের যে সকল নামাজের সূরা পড়তে হয় সেগুলো সম্পর্কে সঠিক ধারণা অর্জন করতে পারব। তাছাড়া আমরা যদি মহান আল্লাহ পাকের এই সকল গুরুত্বপূর্ণ বাণী পড়তে পারি তাহলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অভিযোগ পেশ করা থেকে বিরত থাকবেন। মহান আল্লাহপাক আপনার চোখ দান করার পরও আপনি যেহেতু কোরআন শরীফ আমল করেন নি সেহেতু কেয়ামতের দিন অন্ধ হয়ে যাবেন।
আপনি মুখ এবং বধির অবস্থায় কিয়ামতের দিন অথবা আখেরাতের দিন থাকবেন। দুনিয়ার জীবনে আপনি কোরআন তেলাওয়াত করেছেন সেগুলো প্রমাণ হিসেবে অথবা দলিল হিসেবে আসবে এবং কুরআনের পক্ষে ছিলেন নাকি বিপক্ষে ছিলেন সে বিষয়গুলো প্রমাণিত হবে। কোরআন শরীফ আমল করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা এবাদত এবং প্রত্যেকটি হরফের জন্য আপনারা দশটি করে নেকি অর্জন করতে পারবেন। তাই নেকির পাল্লা ভারী করতে বিশেষ কিছু আমল করার পাশাপাশি কোরআন শরীফ তেলাওয়াত করতে পারলে জাহান্নামে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে পারবেন। তাছাড়া আখেরাতে যে সকল প্রশ্ন করা হবে সে সকল প্রশ্নের সঠিক জবাবদিহিতা করতে পারবেন।
কোরআন না পড়লে কি হয়
উপরের উল্লেখিত এত এত আলোচনার ভিত্তিতে আপনারা বুঝতে পারলেন যে কোরআন শরীফ পাঠ করলে অথবা তেলাওয়াত করলে কি ধরনের সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায়। আখিরাতের সেই সকল সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার পাশাপাশি এটা যদি তেলাওয়াত করেন তাহলে মনের ভেতরে প্রশান্তি বিরাজ করবে। দুনিয়ার জীবনে কঠিন সময় পার করলে অথবা মনের দিক থেকে আপনি যদি চরম বিষন্ন অবস্থায় থাকেন তাহলে কোরআন শরীফ তেলাওয়াত করা আপনার মনকে ভালো করে দিতে পারবে। তাই কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করার মধ্য দিয়ে দুনিয়ার এবং আখেরাতের জীবনের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা উপভোগ করুন।
কোরআন শিক্ষা না করার পরিণতি
আপনার কাছে সুযোগ-সুবিধা রয়েছে এবং বর্তমান সময়ে আপনাকে যখন মসজিদে কোরআন শরীফ শিক্ষা গ্রহণ করার জন্য আহ্বান করা হয় তখন আপনিও হয়তো সময় নষ্ট করছেন কিন্তু কোরআন শরীফ শিখছেন না তাহলে এক্ষেত্রে শাস্তি ভয়াবহ হবে। উপরের উল্লেখিত আলোচনার ভিত্তিতে বুঝতে পারছেন কুরআন শরীফ শিক্ষা অর্জন না করলে কি ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে এবং আখিরাতের জীবনে আপনি পদে পদে আটকে যাবেন।
কোরআন ভুলে যাওয়ার শাস্তি
অনেকেই আছেন যারা কুরআন শিক্ষা অর্জন করার পর হয়তো রমজান মাসে একবার করে আমল করেন এবং পরবর্তীতে আবার ছেড়ে দেন। এটা কখনোই করা যাবে না এবং দিনের একটা নির্দিষ্ট সময় নিজের জন্য সময় রাখতে হবে এবং কুরআন শরীফ তেলাওয়াত করতে হবে। দুনিয়ার জীবনে তো কত কাজে ব্যস্ত থাকে কিন্তু কুরআন শিক্ষার কাজে আমরা যদি সময় দি এবং তেলাওয়াত করার কাজে সময় দিই তাহলে অবশ্যই আমাদের সময়ের ক্ষেত্রে বরকত আসবে এবং আমরাও মানসিকভাবে শান্তিতে থাকতে পারবো।