আমরা জানি যা মানুষকে ধারণ করে তাই হল ধর্ম। সংস্কৃত ধী ধাতু থেকে ধর্ম শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে। তাই ধর্ম বলতে আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কিছুকে বুঝে থাকি। তবে মানুষের একটাই ধর্ম আর তা হলো মনুষ্যত্ব। তবে আমরা ধর্ম সম্পদ সম্পর্কে যে বিষয়গুলি বুঝি তা হলো হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান মুসলিম ইত্যাদি বিষয়কে। কিন্তু আসলে একটি মানুষের ধর্ম হওয়া উচিত মনুষ্যত্ব অর্জন করা অর্থাৎ মানুষের মনুষত্ব না থাকলে মানুষ হওয়া যায় না।
আপনারা খেয়াল করলে দেখবেন যে জল বা পানির ধর্ম হল ভিজিয়ে দেওয়া বা সিক্ত করা আবার আগুনের ধর্ম হল দহন করা বা পোড়ানো তেমনি ভাবে যদি অন্যান্য পশুর যে ধর্ম গুলি কি লক্ষ্য করি সেই ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা ধর্ম আমরা পরিলক্ষিত করে থাকি। তাই মানুষের ধর্ম সম্পর্কে আলোচনা করলেও এটির দেখা যায় যে মানুষের ধর্ম আসলে মনুষ্যত্ব অর্জন করা। তাই মনুষ্যত্ব অর্জন করাকেই মানুষের একমাত্র ধর্ম বলে বিবেচনা করা যেতে পারে।
ধর্ম নিয়ে উক্তি
মানুষ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের উক্তি করে থাকেন। তবে সমাজের বিশিষ্ট জনেরা এই কথাগুলো বলে থাকেন এবং তাদের কথাগুলোকেই আমরা উক্তি হিসেবে ধরে নিই। তাই আমরা দেখব যে সমাজের বিশিষ্টজনেরা ধর্ম সম্পর্কে যে কথাগুলো বলেছেন সেই কথাগুলো উক্তি হিসেবে আমরা বিবেচনা করি সেই কথাগুলো সম্পর্কে এখন আমরা দেখব। মানুষ ধর্ম সম্পর্কে কোন ধরনের উক্তি করেছেন সেই উক্তিগুলো। সেই উক্তিগুলো দেখব এবং ভারতের পক্ষে আমরা প্রত্যেকটা উকির বিচার বিশ্লেষণ করে দেখব যে সেটি আমাদের জীবনের সঙ্গে কেমন ভাবে জড়িয়ে আছে।
“মানবতাই মানুষের একমাত্র ধর্ম হওয়া উচিত”।
-বার্নার্ড রাসেল
আমরা যে কথা এর আগে বলেছি আসলে সেই কথাগুলোই এই উক্তির মধ্যে উঠে এসেছে। কারণ প্রত্যেকটা প্রাণীর যে আলাদা আলাদা ধর্ম রয়েছে সেই ধর্মগুলো মানুষের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। অর্থাৎ মানুষ হতে হলে মানুষকে মনুষত্ব অর্জন করতে হয় আর মানুষ হতে অর্জন করাটাই মানুষের ধর্ম বা একমাত্র ধর্ম বলে মনে করা হয়। মানুষ যদি মনুষ্যত্ব অর্জন করে তাহলে আর কিছুই লাগে না এই পৃথিবী কে সুন্দর করে গড়ে তুলতে। এবং এটাই মানুষের একমাত্র ধর্ম হওয়া উচিত।
“ধার্মিকতা আর ধর্মান্ধতা এক জিনিস নয়। ধার্মিকতা মানুষকে আলোর পথে নিয়ে যায় আর ধর্মান্ধতা মানুষকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়। এ দেশের মানুষকে আমি ধার্মিক বলব না কারণ এ দেশের বেশিরভাগ মানুষই ধর্মান্ধ”।
– রেদোয়ান মাসুদ
প্রত্যেক মানুষ ধার্মিক হোক এতে কোন আপত্তি নাই কিন্তু প্রত্যেক মানুষ যদি ধর্মান্ধতায় ভোগে তাহলে এই পৃথিবীটা নরকে পরিণত হবে। কারণ প্রত্যেক ধর্মই শিখায় মানুষকে উন্নত হতে মানুষকে ত্যাগ করতে তাই পৃথিবীতে যত ধর্ম প্রচলিত রয়েছে সব ধর্মই অত্যন্ত সুন্দর আর এই কারণেই আমাদের এই মনীষী এই কথা বলেছেন। ধার্মিকতা অর্জন করা বা ধার্মিক হওয়া মানুষের জন্য কোন দোষের নয় কিন্তু ধর্মকে নিয়ে ধর্মান্ধতা তৈরি করা অনেকটাই দোষের।
“যে ধর্মের নামে বিদ্বেষ সঞ্চিত করে, ঈশ্বরের অর্ঘ্য হতে সে হয় বঞ্চিত”। -রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
তাই এই পৃথিবীতে ধর্মের নামে বিদ্বেষ করা কোন ধার্মিকের কথা হতে পারে না। তাই সকল ধর্ম যেহেতু পৃথিবীতে মনুষ্যত্ব অর্জন করা কেই শেখায় তাই ধর্মের নামে অন্য কেউ যদি ভণ্ডামি করে তাহলে সেটি কখনোই মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।
তাই ধর্মান্ধতা এবং ধর্মের নামে ভন্ডামি আসলে একই ধরনের বিষয় এই জন্য আমরা অনেক উগ্রবাদী ধর্ম প্রচারক দেখে থাকি তাদের কথা সব সময় অন্য ধর্মকে কটাক্ষ করে বলা। এইসব ভন্ড ধর্ম ব্যবসায়ীরা তাদের নিজ ধর্মকেই সব সময় ছোট করে। তাই ধার্মিকতা যদিও মানুষকে ভালো কিছু শেখায় শেখায় কিন্তু ধর্মান্ধতা মানুষকে অনেক খারাপ পথে নিয়ে যেতে পারে। এজন্য ধার্মিকতা অর্জন করুন কিন্তু ধর্মান্ধতা নয়।