রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ উক্তি

রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ একজন জনপ্রিয় কবিতা সাহিত্যিক, তিনি অসংখ্য জনপ্রিয় কবিতা উপন্যাসের বই লিখে গিয়েছে। রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বেশ কিছু জনপ্রিয় গানও লিখে গিয়েছেন। তার জনপ্রিয় রচনাবলীর মধ্যে যেগুলো মানুষ সবচেয়ে বেশি গ্রহণ করেছিল সেগুলো হল উপ দ্রুত উপকূল, ফিরে চাই স্বর্ণগ্রাম, মানুষের মানচিত্র, ছোবল, গল্প দিয়েছিলে সকল আকাশ, মৌলিক মুখোশ, আরো বেশ কিছু উপন্যাস ও রচনা বলেছে লিখেছে, রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ ১৯৮০ সালে ২১ শে পদক পেয়েছে। বাংলাদেশের জনপ্রিয় মহিলা কবি সাহিত্যিক তসলিমা নাসের সাথে তার বিয়ে হয় ১৯৮২ সালে।

তিনি ১৬ অক্টোবর ১৯৫৬ সালে বরিশাল জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ মৃত্যুবরণ করে একুশে জুন ১৯৯১ সালে মাত্র ৩৪ বছর বয়সে।

রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ জন্মগ্রহণ করেন বরিশাল জেলায়, তার আসল বাড়ি হল বাগেরহাট জেলার মংলা উপজেলা সাহেব এর মেড গ্রামে। তিনি হলেন উচ্চমাধ্যমিক্ত পরিবারের জন্মগ্রহণ করা ছেলে। ছোটবেলা থেকেই তার কবি সাহিত্যের ওপর আলাদা একটি টান ছিল। ছোটবেলায় মূলত সিনেমা দেখতে যাবার কথা বলে টাকা নিয়ে সে টাকা দিয়ে সে একটি লাইব্রেরী করার চিন্তা ভাবনা করেন। তিনি তার লাইব্রেরীর নাম দিয়েছিল বনফুল, রুদ্র ছোটবেলায় অনেক অভিমানী ছিলেন একটা ঘটনা থেকে আট করা যায় দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ার সময় তিনি স্কুল জীবনের কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছিলেন। তিনি যে স্কুলে পড়তেন সেই স্কুলে চাকরি করতো তার বাবা।

রুদ্র ছিলেন একজন পাগল তো পুরুষ সে খেয়ালীপনা তার মধ্যে ছিল না। সে সব সময় অবস্থান থাকলেও সে ভালো কবিতা লিখতে পারতো। তার মাথার চুলগুলো ছিল কোঁকড়া, মুখে দাড়ি ছিল, তিনি সবসময়ই জিন্সের পোশাক পড়তে বেশি পছন্দ করতেন এবং বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে বেশ পছন্দ করতেন। তিনি ঢাকা ওয়েস্ট বেঙ্গল হাই স্কুল থেকে ১৯৭৪ সালে এসএসসি পাস করেন। রুদ্র মুহাম্মদ একজন ভালো ও মেধাবী স্টুডেন্ট ছিলেন। সেই সময় সবচেয়ে ভালো রেজাল্ট করে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন পরে সে ঢাকা কলেজে উনিশশো ছিয়াত্তর সালে এইচএসসি পাস করেন। ১৯৮০ সালের সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগের ভর্তি হয়ে যান। সে ভালো স্টুডেন্ট হওয়ার কারণে সে বিবিএ এবং এমে ডিগি লাভ করেন।

তিনি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জায়গায় চাকরি করেছেন, এছাড়াও তিনি বেশ কিছু স্বৈরাচারী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। তিনি প্রতিটা আন্দোলনে প্রতিবাদী কবি হিসেবে খ্যাত রয়েছেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ দেশাত্মবোধক গান গণ আন্দোলন ধর্মনিরপেক্ষতা অসম্প্রদায়িকতা সহ বিভিন্ন জায়গায় তার উপস্থিতি রয়েছে।

রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর উক্তি

রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বেশ কিছু জনপ্রিয় প্রেমের কবিতা ও উপন্যাস লিখেছেন। বর্তমান যুগে এসেও রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর উক্তি মানুষ অনলাইনে এসে সার্চ করে। আমরা এই মুহূর্তে রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর বেশ কিছু উক্তি প্রকাশ করব যেই উক্তিগুলো আমরা তার গল্পের বই কবিতার বই ও উপন্যাসের বই থেকে সংগ্রহ করেছি। নিচে রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর উক্তিগুলো তুলে ধরা হলো।

রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বিদ্রোহী কবিতা

রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশের গণ আন্দোলন, স্বৈরাচার বিরোধী সকল আন্দোলনের সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের বিদ্রোহী কবি বলে খ্যাত ছিলেন এ সময়। তিনি অনেক বিদ্রোহী কবিতা লিখেছেন যে বিদ্রোহী কবিতা গুলো মানুষ এখনো মন প্রাণ দিয়ে পছন্দ করে থাকে। আমরা এই মুহূর্তে তার বেশ কিছু বিদ্রোহী কবিতা তুলে ধরব যে কবিতাগুলো আপনারা করলে বুঝতে পারবেন তার লেখার মধ্যে কতটা আবেগ ও ভালোবাসা ছিল। নিচে বিদ্রোহী কবিতাগুলো তুলে ধরা হলো:

১#

আঁকড়ে থেকো না কিছু।
যে যাবার তাকে যেতে দাও
যে ফেরার সেতো ফিরবেই..

২#

এমন কি ভালোবাসাও
ইদানীং আমাকে আর
ভালোবাসে না।

৩#

চলে যাওয়া মানেই প্রস্থান নয় ,
বিচ্ছেদ নয় ,
চলে যাওয়া মানেই নয় বন্ধন ছিন্নকরা আর্দ্র রজনী ।
চলে গেলে আমারো অধিক কিছু থেকে যাবে আমার না থাকা জুড়ে…

____রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ

৪#

যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন্য হতে পারে,,
সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন্য হতে পারে,,
তবুও ভালোবাসা থেকে যায়,,
হয়তো আক্ষেপে
নয়তো অপেক্ষায়।
—-রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ

৫#

আমি একা
এই ব্রহ্মান্ডের ভেতর একটি বিন্দুর মত আমি একা।

৬#

কে থাকে এমন একলা থাকায়
কে ডাকে অমন নিরব ডাকায়।

৭#

যুবতী বুক থেকে ঝলমলে তলপেট উলঙ্গ কোরে
বিনিময়ে দুখানা ঝলসানো রুটি নিলো।

৮#

বাড়াই তৃষ্ণার হাত ফিরে আসে শূন্যতাকে ছুঁয়ে।

৯#

বিস্মিত তুমি যতোবার টানো বন্ধন – সুতো ধ ’রে ,
আমি শুধু যাই দূরে।

১০#

নিদ্রার বুকে মাথা রেখে জেগে আছি আজো
অনিদ্রা মিশে গেছে বুকের রক্তে।

১১#

দূরত্ব জানে শুধু একদিন খুব বেশী নিকটে ছিলাম,

১২#

না-পাওয়া ব্যথার আছে উদ্ধার,
পাওয়ার বেদনা প্রতিকারহীন ।

১৩#

এমন কি ভালোবাসাও
ইদানীং আমাকে আর
ভালোবাসে না।

১৪#

কী ভয়ংকর এই একাকীত্ব!
কী নির্মম এই বান্ধবহীনতা!
কী বেদনাময় এই বিশ্বাসহীনতা!

১৫#

এবং জন্ম মানেই মৃত্যুর প্রতি অমােঘ যাত্রা

১৬#

প্রেম দুর্বোধ্য, নারী দুর্বোধ্য
এবং তুমিও তোমার
প্রেমের মতোই দুর্বোধ্য।

১৭#

মাঝে মাঝে ভুল হয়ে যায় । আগে হতোনা
ভুলবশত অনেক ভুল হয় ইদানিং আমার ।

১৮#

দিচ্ছো ভীষন যন্ত্রনা
বুঝতে কেন পাচ্ছ না ছাই
মানুষ আমি, যন্ত্র না।

১৯#

নীলাকে কখনো নীল শাড়ি পরতে দেখিনি।

২০#

হয়েছো গোপন ঘুন, শাঁস কাটো লুকায়ে ভেতরে –
পুড়ে মরি, কেমনে গো আমি তারে বাইরে দ্যাখাবো!

২১#

নিজের কাছে নিজেই আমি
প্রশ্নবোধক রেখা !

২২#

প্রত্যেকের বুকের নিভৃতে কিছু দগ্ধ ক্ষত থাকে লুকানো ,
কিছু অসম্পূর্ণ নির্মান , ভাংগাচোরা গেরস্হালি ঘরদোর ,
প্রত্যেকের নিজস্ব কিছু নিদ্রাহীন রাত্রি থাকে
যাকে চিরদিন নষ্ট নোখের মতো রেখে দিতে হয় কোমল অনিচ্ছার বাগানে
যাকে শুধু লুকিয়ে রাখাতেই সুখ , নিজের নিভৃতে রেখে
গোপনে পোড়াতেই একান্ত পাওয়া ।

২৩#

দুটি চোখ মনে আছে, আর কিছু নেই…

২৪#

আমার বয়স যেন সভ্যতার সমান

২৫#

নিদ্রার সম্মোহনে ফিরে গেলে তুমি খুলবে পোশাক
স্নানঘরে জলের শব্দ হবে, ভেজা চুলে খেলবে এক
বাতাশের দারুন কিশোরী।

২৬#

এলবামে স্মৃতি নেই বলে
আদৌ দুঃখ করিনা,
সোনালি নিসঙ্গতায় আমার
বিচিত্র দুঃখের সমাবেশ সঞ্চয় – ।

২৭#

শেষমেশ যে যার সন্ধার কাছে ফিরে যায়,
যে যার অন্ধকারের কাছে।

২৮#

কেন এলে বলো বেশতো ছিলাম
শুধু শুধু করাঘাত করলে চেতনায়
বড়ো অবেলায় এলে – বড়ো অবেলায় ।

২৯#

আমি একা
এই ব্রহ্মান্ডের ভেতর একটি বিন্দুর মত আমি একা

৩০#

নিজেকে নিয়ে আছি, নিজে নিজে আছিনা-পাওয়া ব্যথার আছে উদ্ধার,
পাওয়ার বেদনা প্রতিকারহীন।

রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বেশ কিছু গান লিখেছে তার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় গান হল ভালো আছি ভালো থেকো প্রিয় রুদ্রা রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ সবচেয়ে জনপ্রিয় গানটি হল আমার ভিতর বাহিরে অন্তরে অন্তরে আছো তুমি হৃদয় জুড়ে। এরকম আরো বেশ কিছু জনপ্রিয় গান রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ লিখেছেন। তিনি যে সময় গান লেখা শুরু করেন তার কিছুদিন পরেই তিনি এই দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে চলে যান।

Leave a Comment