প্রত্যেকটি মুসলমানের জন্য নামাজ আদায় করা ফরজ। জীবনে আমাদেরকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে হবে এবং যদি সময় পাওয়া যায় তাহলে নফল ইবাদত হিসেবে আরো কিছু ইবাদত রয়েছে যেগুলো আমরা নামাজের মাধ্যমে আদায় করতে পারি। ইবাদত যদি কোন কারনে ছুটে যাই অথবা জরুরী মুহূর্তের জন্য আপনি যদি কোনো কারণেই এটা আদায় করতে না পারেন তাহলে পরবর্তীতে আপনাকে কাজা নামাজ আদায় করতে হবে। তবে কাজা নামাজ আদায় করার নিয়ম সম্পর্কে অনেকেই অবগত নাই বলে এখানে আমরা আলোচনা করতে চলেছি কিভাবে কাজা নামাজ আদায় করতে হয়।
আমাদের জীবনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ বাধ্যতামূলক করে দেয়া হয়েছে বলে আমরা দৈনন্দিন জীবনের যাবতীয় কাজ এক দিকে রেখে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের শামিল হওয়ার চেষ্টা করব। আপনি যদি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজী হয়ে থাকেন তাহলে দেখবেন যে আপনার দৈনন্দিন জীবনের কাজের প্যাটার্ন অন্যরকম হয়ে গিয়েছে এবং সকল কাজ শেষ করে যখন আপনি দিনশেষে নামাজ আদায় করতে যাবেন তখন আপনার ভেতরে কাজ শেষ করার তাগাদা অনুভব করবেন। কারণ নামাজ আপনার মনের ভেতরে প্রশান্তি এনে দিবে এবং যখন নামাজ আদায় করতে পারবেন তখন মনে হবে বড় ধরনের একটা দায়িত্ব আপনি পালন করতে পেরেছেন।
তাছাড়া মানুষের জীবনে উত্থান পতন রয়েছে এবং মানুষের জীবনে সব সময় যে ভালো সময় যাই এমনটা নয়। মানুষের জীবনের এই সংকটকালীন মুহূর্তগুলো যেমন আল্লাহ পাককে ডাকতে হবে তেমনি ভাবে আপনি ভাল মুহূর্ত কাটালে অবশ্যই আল্লাহ পাকের শোকর গুজার করতে হবে। তাই কোনভাবে নামাজ বাদ দেওয়া চলবে না এবং আপনার যত কাজই থাকুক না কেন প্রত্যেকটি কাজের ক্ষেত্রে আপনি সেগুলো আলাদাভাবে রেখে নামাজের সময় অবশ্যই আপনারা জামাতে নামাজ আদায় করার জন্য উপস্থিত হতে হবে।
কিন্তু কোন কারনে যদি নামাজ ছুটে যাই অথবা আপনার যদি কোনভাবেই সময় মতো নামাজ আদায় করার সম্ভাবনা না থাকে তাহলে আপনারা পরবর্তীতে সেটা কাজা নামাজ আদায় করতে পারবেন। যদি ছোটবেলা থেকেই অথবা নির্দিষ্ট বয়সের পর থেকেই আপনি নামাজ আদায় করা শুরু করে থাকেন তাহলে দেখা যাবে যে আপনার জীবনে কাজা নামাজের পরিমাণ অনেক কম। কিন্তু কোন কারণে যদি আপনি মাঝেমধ্যে নামাজ ছাড়েন এবং ধরেন তাহলে এই হিসাব করলে দেখা যাবে যে আল্লাহ পাক যেমন আপনার প্রতি অসন্তুষ্ট হচ্ছেন তেমনি ভাবে আপনার জীবনে অনেক কাজা নামাজ থেকে গিয়েছেন।
তবে আপনি নির্দিষ্টভাবে কোন ওয়াক্তের নামাজ যদি কাজা হিসেবে আদায় করতে চান তাহলে অবশ্যই নামাজ আদায় করার সময় আপনারা সেই ওয়াক্তের কাজা নামাজ আদায় করছেন বলে এবং কত রাকাত আদায় করবেন সেভাবে নিয়ত করে যেভাবে নামাজ আদায় করতে হয় সেভাবেই আদায় করুন। অর্থাৎ স্বাভাবিকভাবে যে নামাজের নিয়ম রয়েছে সেভাবেই আপনারা নামাজ আদায় করবেন এবং এক্ষেত্রে কাজা নামাজ এটা অবশ্যই উল্লেখ করবেন। তবে কাজা নামাজ আদায় করার ক্ষেত্রে আরও একটা নিয়ম প্রচলিত রয়েছে এবং এক্ষেত্রে আপনারা নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসরণ করতে পারেন।
অর্থাৎ আপনার জীবনের যে সকল নামাজ কাজা হয়েছে সেই সকল নামাজের দোহাই দিয়ে অথবা সেভাবে নিয়ত করে আপনার প্রথম কাজা নামাজের নিয়ত করতে হবে। এভাবে প্রতি ওয়াক্তের নামাজে আপনারা যদি পূর্ববর্তী কাজা নামাজগুলো আদায় করতে পারেন এবং একটা সময় যদি আপনার ভেতরে মনে হয় যে নামাজগুলো আদায় করা সম্পন্ন হয়েছে তাহলে তখন থেকে আপনারা তা বাদ দিতে পারেন।
তাই কাজা নামাজ আদায় করার নিয়ম সম্পর্কে এখানে আলোচনা করা হলো বলে আপনারা তা বুঝতে পারলেন এবং আশা করি আপনাদের উদ্দেশ্যে আমরা এ বিষয়গুলো জানিয়ে দিয়েছি। সাধারণত নামাজের যে নিয়ম অথবা নামাজে যে সকল দোয়া পড়তে হয় সেগুলোই আপনারা কাজে নামাযে একই নিয়ম অনুসরণ করে পড়বেন। তাই জীবনে যে সকল ফরজ নামাজ ছুটে গিয়েছে অথবা সুন্নত নামাজ ছুটে গিয়েছে সেগুলো আপনারা কাজে নামাজের মাধ্যমে পড়ে ফেলতে পারেন। তবে সব সময় চেষ্টা করতে হবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ অবশ্যই আদায় করা এবং সময় মত আদায় করা।