প্রত্যেকটি প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমান ব্যক্তির জন্য নামাজ আদায় করা ফরজ। অর্থাৎ নামাজ আদায় করা বাধ্যতামূলক। এজন্য খেয়াল করলে দেখা যায় যে মুসলমান ব্যক্তিরা প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে। আর নামাজ আদায় করার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জন করার চেষ্টা করা। আল্লাহ তাআলা মানুষকে সৃষ্টি করেছে তার ইবাদতের জন্য। তাই প্রত্যেকটি মানুষের আল্লাহর ইবাদতের জন্য নিজেকে নিবেদিত করে বা নিজেকে সৃষ্টিকর্তার নিকট উৎসর্গ করে। সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি অর্জন করার জন্য মানুষ বিভিন্ন ধরনের কাজ করে থাকে। আর এই সকল ভাল কাজের মাধ্যমে চায় আল্লাহকে খুশি করতে এবং বিভিন্ন ধরনের নেকি অর্জন করতে।
আল্লাহ তায়ালাকে খুশি করার জন্য এবং পরকালীন জীবনে শান্তি লাভ করার জন্য মুসলমান ব্যক্তিগণ বিভিন্ন ধরনের ইবাদত পালন করে থাকে। তার মধ্যে নামাজ, রোজা, হজ, যাকাত প্রধান ইবাদত হিসেবে পরিগণিত হয়। এ সকল ইবাদত গুলোর মধ্যে নামাজ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের মুসলমান বাচ্চাদের প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে হয়। প্রতিদিন যদি কোন মুসলমান শুদ্ধভাবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে তাহলে আল্লাহতালা অবশ্যই তার উপর অনেক বেশি খুশি হয়। তার উপর রহমত বর্ষণ করে। এজন্য প্রত্যেকটি মুসলমানের উচিত আল্লাহর দেখানো পথে আল্লাহর দেওয়া নির্দেশ মতো এবং নবী রাসূলের দেওয়া নির্দেশ মতো নামাজ আদায় করার মাধ্যমে আল্লাহতালার সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করা।
তবে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য নামাজ আদায় করতে হলে অবশ্যই শুদ্ধভাবে করতে হবে। কোন মুসলমান ব্যক্তি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে অশুদ্ধভাবে নামাজ আদায় করে এবং সে সঠিকভাবে নামাজ আদায়ের পদ্ধতি জানা সত্ত্বেও এভাবে নামাজ আদায় করে, তাহলে আল্লাহ তায়ালা তার উপর অনেক বেশি অসন্তুষ্ট হবেন এবং তার জন্য অনেক বেশি কষ্ট অপেক্ষা করছে। অথবা পরকালের জীবনের শাস্তি পারে।
তাই প্রত্যেকটি মুসলমানের উচিত নবী- রাসুলের দেখানো পথ অনুসারে সঠিকভাবে নামাজ আদায় করা। কেউ যদি এভাবে সঠিকভাবে সকল ইবাদত পালন করে এবং নামাজ আদায় করে, তাহলে আল্লাহ তার উপর অনেক বেশি খুশি হন। তার উপর রহমত বর্ষণ করেন। সে দুনিয়ার জীবনে যেমন খুশিতে থাকে, শান্তিতে থাকে, তেমনি ভাবে পরকালীন জীবনে তার জন্য শান্তির ব্যবস্থা রয়েছে এবং চিরকালের সুখের স্থান জান্নাতের ব্যবস্থা করা হবে।
কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় যে আমাদের বিভিন্ন কারণে অনেক সময় নামাজ কাযা হয়ে যায় বা কোন সময় আমরা নামাজ আদায় করতে পারি না। কিন্তু কোন কারনে যদি নামাজ আদায় করতে না পারা যায়, তাহলে অবশ্যই পরবর্তীতে সে কাজা নামাজকে আদায় করে নিতে হবে। কারণ ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ আদায় না করলে অনেক বেশি শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। তার উপর আল্লাহ তালার রহমত বর্ষিত হয় না। তাই কোন ব্যক্তি যদি অনিচ্ছাকৃতভাবে নামাজ আদায় না করে থাকে, তাহলে সেই কাজা নামাজ সে পরবর্তীতে আদায় করে নিতে পারবে। তবে অনেকে মনে করে যে কাজা নামাজ পরবর্তীতে আদায় করলে হয় না। এ বিষয়টা আসলে ঠিক না। কাজা নামাজ পরবর্তীতে আদায় করলেও হবে।
তবে কাজা নামাজ আদায় করার একটি নির্দিষ্ট বা নির্ধারিত নিয়ম রয়েছে। নবী করীম (সাঃ) নিয়মের কথা বলে গেছেন। আমাদের সবার উচিত সঠিক নিয়মে কাজা নামাজ আদায় করা। কাজা নামাজ আদায় করার জন্য যে নিয়ম সে নিয়ম পালন করে কোন ব্যক্তি যদি কাজা নামাজ আদায় করে, তাহলে তার ফরজ নামাজ আদায় করা হবে। তাই কোন ব্যক্তির যদি কোন কারনে নামাজ কাজা হয়ে যায়, তাহলে পরবর্তীতে কাজা নামাজ আদায় করে নেওয়া উচিত এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। আল্লাহ তাআলা অনেক মহান এবং ক্ষমাশীল। তিনি নিশ্চয়ই তার বান্দাকে ভুল কাজের জন্য ক্ষমা করে দেবেন। সাথে সাথে আল্লাহ নিশ্চয়ই তার বান্দার ভুল গুলো ক্ষমা করে দিয়ে তার ইবাদত গুলো কবুল করে নিবেন।