জীবিকার প্রয়োজনে হোক কথা বলবে ভিন্ন কারণে হোক আমাদের অনেক সময় দূরপাল্লার যাত্রা করা লাগে। তাই আপনি যখন কোন গাড়িতে ছয় ঘন্টার বা সাত ঘণ্টার জানেনই করবেন এবং এক্ষেত্রে পাশাপাশি যদি দুই তিনটি ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার সময় চলে আসে তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনি কিভাবে নামাজ আদায় করবেন তা এই পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পারেন। বাসে হোক অথবা ট্রেনে হোক নামাজ আদায় করার ক্ষেত্রে একই নিয়ম অনুসরণ করবেন তাহলে আশা করি আপনাদের নামাজ আদায় করা হবে।
যেহেতু বাসে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করা সম্ভব নয় সেহেতু এখানে আপনাকে সিটের উপর বসেই নামাজ আদায় করতে হবে। তবে কম দূরত্বের রাস্তা হয়ে থাকলে অবশ্যই আপনারা এই দূরত্বের রাস্তা গুলো শেষ করার পরেই নির্দিষ্ট স্থানে নামাজ আদায় করে নিতে পারবেন অথবা যাত্রা শুরু করার আগে নিকটবর্তী মসজিদে নামাজ আদায় করে নিবেন। তবে এই ক্ষেত্রে আপনি যদি 6, 7 ঘন্টার জার্নি করলেন এবং এই ক্ষেত্রে জহুর আসর এবং মাগরিবের পর পর তিন ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা লাগল সেই ক্ষেত্রে আপনি এটা যদি কাজা করেন তাহলে অনেক খারাপ লাগবে।
তাই আপনি যে যানবাহনে চলাচল করছেন সেই যানবাহনের সিটের উপরে বসেই নামাজ আদায় করতে হবে এবং নামাজ আদায় করার ক্ষেত্রে যে সকল নিয়ম রয়েছে সেভাবে আদায় করতে হবে। যেহেতু এখানে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়া সম্ভব নয় অথবা সিজদা দেওয়ার মত জায়গা নেই সেহেতু আপনাকে বসে ইশারায় নামাজ সম্পন্ন করতে হবে। অর্থাৎ সিজদা দেওয়ার স্থানে যেহেতু মাথা দেওয়া সম্ভব নয় সেহেতু আপনাকে ইশারাই সিজদা দিতে হবে এবং পরিপূর্ণ মনোযোগের সঙ্গে নেওয়া যাবেই করতে হবে।
চলতে গাড়িতে নামাজ পড়ার নিয়ম
তাই চলতি গাড়িতে যখন নামাজ আদায় করবেন তখন অবশ্যই নামাজ আদায় করার ক্ষেত্রে আপনার ফোনে থাকা gps অথবা অন্য কোন মাধ্যম ব্যবহার করে কিবলামুখী দিক নির্ধারণ করে নিতে হবে। যখন একটা নির্দিষ্ট দিকে কিবলামুখী দিক নির্ধারণ করে নিতে পারবেন তখন সে দিকে বসে নামাজ আদায় করবেন। তবে নামাজ আদায় করার ক্ষেত্রে ওজন বিষয়টা যেহেতু গুরুত্বপূর্ণ সেহেতু কোন একটা স্টপেজে থেমে গেলেই আপনারা ওযু করে নিবেন অথবা সেখান থেকে নামাজ আদায় করে নিতে পারেন।
ট্রেনে নামাজ পড়ার নিয়ম
বাসে অথবা ট্রেনে নামাজ পড়ার নিয়ম যেহেতু জানতে এসেছেন সেহেতু বলবো যে এক্ষেত্রে নামাজ আদায় করতে হবে এবং এক্ষেত্রে কিবলা মুখী বিষয়টা নির্ধারণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই যখন কিবলামুখী বিষয়টা নির্ধারণ করতে চাইবেন তখন অবশ্যই ফোনের থাকা gps অথবা কাটা কম্পাসের মাধ্যমে এগুলো নির্ণয় করে নিতে পারলে আশা করি আপনাদের জন্য ভালো হবে। তবে কোনো কারণে যদি মনে হয় কিবলামুখী আস্তে আস্তে দিক পরিবর্তন করছে অথবা গাড়ি অন্যদিকে মোর ঘোড়াচ্ছে তখন আপনারা নিজেদের কাজ অথবা সিনা ঘুরিয়ে নিয়ে নেওয়া যাবে করবেন।
জাহাজে নামাজ পড়ার নিয়ম
বিশেষ করে জাহাজ এবং ট্রেনে নামাজ আদায় করা আশা করি কোন অসুবিধার বিষয় নয়। কারণ ট্রেন একটা স্থির গতিতে চলে এবং জাহাজ পানিতে স্থির গতিতে ভাসমান থাকে। এক্ষেত্রে আপনারা কিবলা নির্ধারণ করে নামাজ আদায় করতে পারেন অথবা যদি ট্রেনে যাতায়াত করে থাকেন তাহলে সেখানে নামাজ আদায় করার জন্য আলাদা কেবিন রয়েছেন। ট্রেনে বেশি ভিড় থাকলে কেবিন পর্যন্ত যাওয়া সম্ভব হয় না অথবা কেবিনেও মানুষজন বসে থাকে বলে সেখানে নামাজ আদায় করা সম্ভব হয় না। তবে উড়োজাহাজে যদি আপনারা নামাজ আদায় করতে চান তাহলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই ফ্লাইটের সময় গুলো কম হয়ে থাকে বলে আপনারা যাত্রা শেষ করে নামাজ আদায় করতে পারবেন।
মহিলাদের গাড়িতে নামাজ
মহিলারা গাড়িতে নামাজ পড়তে পারেন কিনা সে বিষয়ে যদি জানতে চান তাহলে বলবো যে অবশ্যই তারা নামাজ পড়তে পারবেন। যেহেতু তারা পর্দা দিয়ে আবৃত থাকবেন সেহেতু তারা নামাজ আদায় করতে পারবেন এবং এক্ষেত্রে কারা তাকালো সেটা কোন ব্যাপার নয়। বরং যারা তাকাবে তাদের জন্য সেটা পাপ হবে। তাই আপনি আল্লাহপাকের নিয়তে গাড়িতে বসে একই নিয়মে পুরুষদের মত নামাজ আদায় করতে পারবেন।