কথা মানুষের অত্যন্ত মূল্যবান একটা সম্পদ। শুধু মুখ জোর করে কথা বললে যে আপনি বড় মানুষ হয়ে যাবেন অথবা মুখ জোর করে কথা বলার কারনেই যে আপনি নিজেকে বিশাল বলে প্রমাণ করলেন এরকম কোন মহত্ত্ব নেই। বরং আপনাদের চাইতে তারাই বেশি দামী যারা কথা বলার ব্যাপারে সংযত ভাব অবলম্বন করে এবং কথা বলার ব্যাপারে যারা বিনয়ীভাব প্রকাশ করে। তাই কথা মানুষের একটি অমূল্য সম্পদ হওয়ার কারণে অবশ্যই এটা আমরা ভেবেচিন্তে বলবো এবং কোন কথার প্রেক্ষিতে যদি কথা বলি তাহলে অহেতুক কথাবার্তা কম বলে কাজের কথা বলার চেষ্টা করব।
কিছু মানুষ রয়েছে যারা নিজেদেরকে মনে করে কথা বলে জিততে পারলে সবচাইতে নিজেকে বড় দেখাবে। আর আপনারা যখন এ বিষয়টা অপছন্দ করবেন তখন অবশ্যই নিজেদের ভেতরে সংযত ভাব মেনে চলবেন। যখন কোন মানুষ আপনাদের কাছে আসবে তখন হয়তো আপনারা তার ভাবসাব বুঝে আগেভাগেই কোন কিছু বলে দেওয়ার চাইতে সে আসলে কি বোঝাতে চাইছে সেটা মনোযোগ দিয়ে শোনার চেষ্টা করুন। হতে পারে তার বিরক্তিকর কথার চাইতে মূল্যবান কিছু কথা রয়েছে যেটা আপনাদের কাছে শেয়ার করতে চাচ্ছে।
অর্থাৎ এমন কিছু কথা নিয়ে আপনার কাছে এসেছে যে কথাগুলো অন্য কাউকে বলা যাবে না এবং আপনার কাছে যেহেতু বলার মত আছে সেহেতু বুঝতে হবে আপনি তাদের কাছে অবশ্যই একজন বিশেষ ব্যক্তি। তাই বলার চাইতে শুনতে বেশি পছন্দ করি এ বিষয়টা যখন আপনারা অন্যের সামনে প্রমাণ করবেন অথবা মানুষজন যখন আপনার এই ভালো গুণ সম্পর্কে রপ্ত হতে পারবে তখন দেখা যাবে যে তারা নিজের থেকেই আপনাদেরকে অনেক বেশি সম্মান করছে।
তাই অধিক কথার চাইতে আপনারা যদি শান্ত বা বিনয়ীভাব ভাব প্রকাশ করে প্রত্যেক ব্যক্তির কথা মনোযোগ দিয়ে শোনার পরে সেটা অনুযায়ী উত্তর প্রদান করেন তাহলে আপনার কথার যেমন মূল্য থাকবে তেমনি ভাবে আপনিও ভালোমতো বিষয়টা বুঝে নিয়ে সে অনুযায়ী সাজেশন প্রদান করতে পারবেন। তাই মুখজন করার চাইতে বর্তমান সময়ে আমরা যদি চুপচাপ থাকতে পারি এবং সেই চুপচাপ থাকার ফলে কাউকে প্রাধান্য দিতে পারি তাহলে সেই মানুষের থেকে যেমন সম্মান পাওয়া যাবে তেমনি ভাবে আপনারা মুসলমান ধর্মের অনুসারী হলে এখান থেকে একটা বিশেষ গুণ অর্জন করতে পারলেন।
সাধারণত বাজারে চায়ের স্টলে গেলে দেখা যায় যে একজন চুপচাপ থাকা মানুষও বিভিন্ন মানুষের কথার প্রেক্ষিতে উত্তর প্রদান করে। আর অহেতুক কথার কারণে সেখানে বিভিন্ন ধরনের ঝগড়া-বিবাদ এর সৃষ্টি হয় অথবা মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। তাই কোন কিছু না বুঝেই যখন নিজেকে বড় হিসেবে প্রমাণ করতে চাইবেন তখন সেটা বোকামি ছাড়া আর কিছুই হবে না। আর যারা গায়ের জোর এবং লাঠির জোর দেখে নিজের কথাকে উপরে তুলতে চান তারা আসলে এই কথার মাধ্যমে উপরে উঠে না বরং নিজেরাই নিজেকে অপমান করে।
তাছাড়া কিছু কিছু প্রেক্ষিতে কথা বলার চাইতে চুপচাপ থাকা অনেক ভালো এবং এটা আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একটা বিশেষ গুণ। প্রয়োজন ছাড়া কথা বলার দরকার নেই এবং প্রয়োজন হলে অবশ্যই আমরা কাজের কথা বলব। তবে জীবনে চলতে ফিরতে আমাদেরকে বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে মিশতে হয় এবং জীবনে আনন্দের জন্য হয়তো সুস্থ বিনোদনের চর্চা করতে হয়।তাই কথার ছলে কেউ অশ্লীল বাক্য বা অস্রাব্য বাক্য ব্যবহার না করে বিনয়ী ভাবে যদি কথা বলতে পারা যায় তাহলে সেটা সবচাইতে বড় গুণ হবে।
1. যাদের চিন্তা কম তারাই বেশি কথা বলে ।
2. কথা বেশি বলাটা গর্বের কিছু নয়, এমন কথা বলা উচিত যাতে বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পাওয়া যায়।
3. বেফাস কথা বলার চেয়ে চুপ থাকাটাই নিরাপদ ।
4. সত্য কথা বলে শয়তানকে অপমান করো ।
5. যে ব্যক্তি সত্য কথা বলে সে সবসময় শান্তিতে থাকে ।
6. মাঝে মাঝে মানুষ সত্য শুনতে চায় না কারণ তারা চায় না তাদের ভ্রম ধ্বংস হয়ে যাক ।
7. আমরা যা শুনি তা হলো মতামত,বাস্তবতা না;আমরা যা দেখি তা হলো দৃষ্টিভংগি, সত্য না ।
8. ভালো কথা খারাপ লোক বললেও তা গ্রহণ করবে ।
9. কথায় যদি নিজের বোকামি প্রকাশ পায়।তবে চুপ করে থাকা বুদ্ধিমানের কাজ ।
10. বিশ্বস্ত কথার আছে শোক নিরাময়ের গুণ ।
11. মুখ খোলা থাকা সত্ত্বেও সবসময় সব কথা বলা যায় না ।
12. তুমি যদি কথা বলতে ভালবাসো তবে নিম্নস্বরে কথা বলো ।
13. তোমার কথাগুলো মনে পড়ে যায়।অসহায় ছিলাম তোমাকে ভালবেসে অতঃপর তোমার কথারা হৃদয় ভেঙে চলে গেলো ।14. মনে হয় আমিই জগতে সবথেকে সুখী মানুষ।তোমার কথা শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়ি আবার তোমার গলার স্বরেই ঘুম ভাঙে আমার।শব্দেরা যেনো ফুলের বৃষ্টি ঝরায় কানে,তোমার কথার প্রেমে পড়ি বারবার ।
15. জীবনের সব কথা তো কথা নয় ,কিছু কথা আমাদের মনের প্রতিফলন।কিছু কথা হৃদয় নিঙড়ানো ব্যাথা ,কিছু কথা আনন্দের বসন্তের কোকিল,কিছু কথা অহেতুক আর কিছু কথা হাহাকার। জীবন আসলে কথাদেরই সমষ্টি।কথারা ফুরিয়ে গেলে মৃত্যু গনিয়ে আসে ।
বর্তমান সময়ে অনেক শিক্ষিত মানুষ রয়েছে যারা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ করার পরও কথাবার্তার ভিতর কোন ধরনের বিনয়ীভাব প্রকাশ করে না। তাই কথা বিষয়ে আপনাদেরকে অবশ্যই সঠিক ভাবে কথা বলতে হবে এবং কথা নিয়ে যে সকল উক্তি প্রদান করা হয়েছে সেগুলো যদি আপনারা পড়তে পারেন তাহলে আশা করি কিভাবে কথা বলতে হবে তা জেনে নিতে পারবেন। তাছাড়া কথা বলার ব্যাপারে সংযত ভাব যুদ্ধ ধরে রাখতে পারেন তাহলে সেটা দিয়েই আপনি নিজেকে মানুষ হিসেবে প্রমাণ করতে পারবেন।