শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড এবং এই শিক্ষা ব্যবস্থাকে যত বেশি ভালো করা যাবে একটি জাতি তত বেশি উন্নত হবে। সেই লেখকের সামনে রেখে বাংলাদেশে বিভিন্ন পর্যায়ের সরকার এবং বিভিন্ন সময়ের শিক্ষা বোর্ড সব সময় মনোযোগ দিয়েছে কিভাবে শিক্ষা ব্যবস্থা ভালো করা যায় এবং শিক্ষার মান ভালো করা যায়।
তাইতো বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। আজকে আমরা সেই শিক্ষা ব্যবস্থাকে উন্নত করার এবং গরিব মেধাবী শিক্ষার্থী যাতে ঝরে না পড়ে তার একটি ব্যাকআপ ব্যবস্থা হিসেবে উপরবৃত্তির আবেদন সম্পর্কে আলোচনা করব। কালক্রমে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সরকার এসেছে এবং বিভিন্ন সময় বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তার পরিবর্তন হয়েছে।
তবে সব ধরনের পরিস্থিতিতেই সকলের চিন্তা-ভাবনা ছিল সর্বস্তরের শিক্ষা ব্যবস্থা ছড়িয়ে দিতে তাইতো তারা গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন উপায়ে এবং বিভিন্ন অনুদানের মাধ্যমে শিক্ষা বৃত্তির ব্যবস্থা করেছে। শুধুমাত্র যে এই শিক্ষাবৃত্তি প্রাইমারি স্কুলে আছে এমন নয় হাই স্কুল থেকে শুরু করে কলেজ এবং অনার্স লেভেল পর্যন্ত আপনি এই শিক্ষাবৃত্তির ব্যবস্থা বর্তমানে পাবেন।
অবশ্যই এই ক্ষেত্রে যোগ্য ব্যক্তিকেই শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয় সহজ ভাষায় বলতে গেলে যেই শিক্ষার্থীর সাধারণত মেধাবী কিন্তু আর্থিকভাবে অসচ্ছল তাদের ক্ষেত্রে শিক্ষা বৃত্তি প্রদান করা হয়। এছাড়াও যারা প্রতিবন্ধী রয়েছে সঙ্গে তৃতীয় লিঙ্গের সকলের জন্য শিক্ষা বৃত্তি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তবে আপনি যদি শিক্ষাবৃত্তি গ্রহণ করতে চান এবং নিজেকে সেই শিক্ষাবৃত্তির যোগ্য মনে করেন তাহলে কিভাবে আবেদন করবেন সেটা জানা অত্যন্ত জরুরি একটি ব্যাপার। সেই জরুরী ব্যাপার নিয়েই আজকে কথা বলব।
শিক্ষাবৃত্তির জন্য আবেদন
যারা পারিবারিক আর্থিক অবস্থার কারণে শিক্ষাবৃত্তির জন্য আবেদন করতে চান তাদেরকে বলব যে আপনি যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছেন সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়ম অনুযায়ী আবেদন করতে পারেন। প্রাইমারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অথবা মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অথবা উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যদি পড়াশোনা করে থাকেন তাহলে এগুলো স্থানীয় পর্যায়ের হয়ে থাকার কারণে অনেকেই আপনার পরিবারকে চিনে এবং আপনার পরিবারের আর্থিক অবস্থার কথা জানে। শিক্ষাবৃত্তির কথা লিখে যদি আপনারা আবেদন করেন এবং প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছে যদি আবেদন সাবমিট করতে পারেন তাহলে দেখা যাবে যে আপনার বিষয়টি বিবেচনা করবে এবং পরবর্তীতে যখন সরকারিভাবে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হবে তখন আপনার নাম সেখানে লিখে দেওয়া সম্ভব হবে।
তাই শিক্ষাবৃত্তি পাওয়ার জন্য সর্ব প্রথমে আপনাকে অফিসিয়াল ভাবে যে প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেন সেই প্রতিষ্ঠানের প্রধান বরাবর আপনার পরিবারের সদস্য সংখ্যা এবং আপনার পরিবারের আর্থিক দুরবস্থার কথা উল্লেখ করবেন। তারপরে সেই অনুযায়ী আপনার এই শিক্ষাবৃত্তি পেলে অত্যন্ত ভালো হতো এবং পড়ালেখার ক্ষেত্রে কোন ধরনের সমস্যা হতো না বিষয়গুলো উল্লেখ করতে পারলে অবশ্যই বিষয়টি বিবেচনা করা হবে এবং সেই বিষয়টি বিবেচনা করার পরে আপনাকে শিক্ষাবৃত্তি পাওয়ার জন্য মনোনীত করা হবে। তাই একজন শিক্ষার্থী হিসেবে নিজের পড়ালেখাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সরকারি উদ্যোগে যে শিক্ষা উপবৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে সেখানে অংশগ্রহণ করতে পারেন অথবা সেটি পাওয়ার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান বরাবর আবেদন এবং অন্যান্য তথ্য সংযুক্ত করে তা প্রদান করতে পারেন। তাহলে সেই অনুযায়ী সরকারি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আপনারা শিক্ষাবৃত্তি পাওয়ার জন্য মনোনীত হয়ে যাবেন।
উপবৃত্তির জন্য আবেদনপত্র লেখার নিয়ম (নমুনা পত্র)
আপনি এমন একটি পর্যায়ে পড়াশোনা করেন যেখানে উপবৃত্তির ব্যবস্থা আছে এবং আপনি নিজেকে এই উপবৃত্তি পাওয়ার যোগ্য শিক্ষার্থী মনে করেন। তাহলে অবশ্যই আপনাকে উপবৃত্তি পাওয়ার জন্য আবেদন করতে হবে। কিন্তু এক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের উপবৃত্তির জন্য বিভিন্নভাবে আবেদন করতে হয় তাই আমরা আপনাদের জন্য নমুনা পত্র নিয়ে হাজির হয়েছে যেই নমুনা অনুযায়ী আপনারা জানতে পারবেন উপবৃত্তির জন্য কিভাবে আবেদন করতে হয়।
আপনারা যারা দীর্ঘদিন ধরে এই উপরবৃত্তির আবেদনের সমস্যায় ভুগছেন তাদের বলব আর চিন্তা না করে সরাসরি আমাদের দেওয়া আর্টিকেল থেকে শিক্ষা ও উপবৃত্তি আবেদনের ফরমটি জানুন এবং এখান থেকে সঠিক তথ্য সংগ্রহ করুন। নিচে আমরা বেশ কয়েকটি নমুনা পত্র আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি যেগুলো আপনাদের কাজে আসবে বলে আমরা মনে করি।
স্কুল ও কলেজের জন্য উপবৃত্তি পাওয়ার আবেদনপত্র লেখার নিয়ম
তারিখ
বরাবর,
প্রধান শিক্ষক,
শিক্ষার্থীর স্কুলের নাম অথবা কলেজের নাম,
শিক্ষার্থীর স্কুল অথবা কলেজের ঠিকানা,
বিষয় উপবৃত্তির জন্য আবেদন।
জনাব,
সবিনয় বিনীত নিবেদন এই যে আমি ….(শিক্ষার্থীর নাম), আপনার বিদ্যালয়ের …শ্রেণীর একজন নিয়মিত শিক্ষার্থী। বর্তমানে আমরা তিন ভাই ও এক বোন এবং আমরা তিন ভাই একজন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করছি। আমার বাবা একজন দিনমজুর। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণে আমাদের পড়ালেখা করার খরচ চালানো আমার বাবার পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে না। যার কারণে অনেক সময় আমরা শিক্ষা উপকরণগুলো সঠিকভাবে কিনতে পারি না এবং আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারি না। যার কারণে আমাদের শিক্ষা বৃত্তির অনেক বেশি প্রয়োজন যার মাধ্যমে আমরা আমাদের ভবিষ্যতের পড়ালেখার সকল খরচ চালিয়ে নিতে পারব।
এমতাবস্থায় মহোদয়ের নিকট আকুল আবেদন এই যে, উপরিউক্ত কারণ বিবেচনা করে আমাকে আপনার স্কুল থেকে উপবৃত্তির প্রদান করে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে আপনার একান্ত মর্জি হয়।
বিনীত নিবেদক
শিক্ষার্থীর নাম
শিক্ষার্থীর শ্রেণী
রোল নাম্বার
উপরের নমুনা পত্রটি খুব ভালোভাবে লক্ষ্য করুন কিছু বুঝতে পেরেছেন? এটি হচ্ছে একটি আবেদন পত্র যেটা আপনি লিখবেন এবং আপনার স্কুলের অথবা কলেজের প্রধান শিক্ষক অথবা প্রিন্সিপাল এর কাছে জমা দিবেন। তবে এই ক্ষেত্রে কিছুকিছু জায়গাতে নিজের তথ্য বসাবেন এবং নিজের তথ্য ভালোভাবে বসাবেন যাতে তদন্তের সময় কোন ধরনের ভুল না হয়। আশা করছি আপনার আবেদনটি গ্রহণ করা হবে।
শিক্ষার্থীর আর্থিক অনুদান ২০২৩ আবেদন লেখার নিয়ম
২০২৩ সালে শিক্ষার্থীদের জন্য যে আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়েছে তার আবেদন করার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে 28 ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সকল ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষক ও কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীদের আর্থিক অনুদান ২০২৩ এর আবেদন শুরু হবে ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখ থেকে এবং এই আবেদন চলতে থাকবে ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখ পর্যন্ত। তবে এই ক্ষেত্রে বিশেষ মঞ্জুরীর অনুদানের টাকা পেতে বিভিন্ন স্কুল কলেজ এবং শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের একই সময়ের মধ্যে আবেদন করতে হবে।
যারা এখন পর্যন্ত এই আবেদনের কোন ফরম্যাট জানেন না অথবা কিভাবে আবেদন করতে হবে সেটা জানেন না তাদের একটি ফরমেট দেখাবো যে ফরমেট এর মাধ্যমে সহজেই আপনারা আবেদন করতে পারবেন। নিচে একটি নমুনা দেব যার মাধ্যমে আর্থিক সাহায্যের জন্য আবেদন পত্র লিখতে পারবেন।
তারিখ,
বরাবর,
প্রধান শিক্ষক অথবা অধ্যক্ষ মহোদয়,
স্কুল অথবা কলেজের নাম,
স্কুল অথবা কলেজের ঠিকানা,
বিষয় :- উপবৃত্তের জন্য আবেদন।
জনাব,
সবিনয় নিবেদন এই যে, আমি মোহাম্মদ আজিজুর রহমান আপনার বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর একজন নিয়মিত শিক্ষার্থী। নিজের পারিবারিক বিষয়ে যদি বলতে হয় তাহলে আমার পরিবারে তিন ভাই এবং দুই বোন রয়েছে যারা সকলে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছে। আমার বাবা একজন গরীব কৃষক এবং তার একার পক্ষে আমাদের সকলের পড়াশোনার খরচ চালিয়ে যাওয়া একেবারেই কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তাই আপনার পক্ষ থেকে কোন ধরনের উপবৃত্তির মাধ্যমে যদি আমাকে আর্থিক সাহায্য প্রদান করা হতো তাহলে ভবিষ্যতের পড়াশোনার সকল খরচ চালানো আমার পক্ষে সহজ হত। এছাড়াও বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির পাশাপাশি শিক্ষা দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে যার কারণে শিক্ষা খরচ চালিয়ে নেওয়া আমাদের পক্ষে খুব কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
এমতাবস্থায় মহোদয়ের নিকট আবেদন এই যে, উপরোক্ত কারণ বিবেচনা করে আমাকে স্কুল থেকে অথবা কলেজ থেকে উপবৃত্তি প্রদান করে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দিয়ে চির কৃতজ্ঞতায় বাধিত করবেন।
বিনীত নিবেদক
শিক্ষার্থীর নাম
শ্রেণী
রোল নাম্বার
শিক্ষাবৃত্তির জন্য আর্থিক অনুদানের আবেদন লিংক ২০২৩
আপনারা যারা অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে চাচ্ছেন তাদের জন্য সুখবর হলো একটি লিংক ব্যবহার করে আপনারা অনলাইনের মাধ্যমে এই আবেদন করতে পারবেন।২০২৩ সালে শিক্ষার্থীদের আর্থিক অনুদানের আওতায় যে উপবৃত্তি প্রদান করা হবে তার জন্য আবেদনের ক্ষেত্রে সবার প্রথমে আপনাকে অফিশিয়াল ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। আরো একবার মনে করিয়ে দিচ্ছি এই আবেদন করার শেষ তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে 28 ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখ পর্যন্ত।
নিচের তিনটি ধাপে আবেদন করার ক্ষেত্রে আমরা লিংক শেয়ার করছি আপনারা সেই লিঙ্ক ব্যবহার করে অনায়াসে সেখান থেকে আবেদন সম্পন্ন করতে পারবেন। তাই আর দেরি না করে আমাদের দেওয়ার লিংক ব্যবহার করে ঝটপট অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে সেখান থেকে আবেদন করুন আর্থিক অনুদানের জন্য।
যে সকল ছাত্র-ছাত্রী বা শিক্ষার্থীদের আর্থিক অনুদানের অনলাইন আবেদন করতে হবে তাদের ক্ষেত্রে www.shed.gov.bd এই অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ব্যবহারের মাধ্যমে তারা আবেদন করতে পারবে।
অনলাইনে আর্থিক অনুদানের আবেদনের ক্ষেত্রে শিক্ষক ও কর্মচারীদের আর্থিক অনুদানের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট হচ্ছে এটি www.shed.gov.bd যার মাধ্যমে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদনের সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারবে।
এ ছাড়াও সবার শেষে যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আর্থিক অনুদানের জন্য অনলাইনে আবেদন করবে তাদের জন্য www.shed.gov.bd এই অফিশিয়াল ওয়েবসাইট ব্যবহার করে অনলাইন এর মাধ্যমে আবেদনের সকল কার্যক্রম শেষ করতে হবে।