প্রিয় শিক্ষার্থীরা, আমাদের আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের আজকের আর্টিকেলে আমরা টার্ম পেপার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। আপনার অনেকেই ট্রাম্প পেপার সম্বন্ধে অনেক প্রশ্ন করেছেন যেগুলো সব উত্তর আমাদের আজকের পোষ্টের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। আশা করি আমাদের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে শেষ পর্যন্ত পড়বেন এবং আপনার অজানা সকল তথ্য জেনে নিবেন।
সাধারণত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স শেষ বর্ষের দ্বিতীয় পর্বে শিক্ষার্থীদের টার্ম পেপার লিখতে দেওয়া হয়। টার্ম পেপার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার আগে আপনাকে টার্ম পেপার সম্বন্ধে স্পষ্ট ধারণা দিতে হবে। সবকিছুর আগে জেনে নিতে হবে টার্ম পেপার আসলে কি। আপনাদের অনেকেরই টার্ম পেপার সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা রয়েছে আবার অনেকে জানেনই না যে টার্ম পেপার কি জিনিস। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক টার্ম পেপার আসলে কি।
টার্ম পেপার আসলে একটি মেজর অ্যাসাইনমেন্ট। এখানে আপনাকে একটি গবেষণার কাজ দেওয়া হবে যে গবেষণা থেকে প্রাপ্ত তথ্য টার্ম পেপারে লিখতে হবে। এই গবেষণাটি সম্পূর্ণ মৌলিক হতে হবে এবং বিভিন্ন বই পত্র অথবা পত্রিকা ঘেটে নতুন নতুন তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। এই গবেষণাটি আপনাকে নিজেকেই করতে হবে এবং টার্ম পেপারটিও নিজেকেই লিখতে হবে। অন্য কারো টার্ম পেপার কপি করলে আপনার ট্রাম্প পেপারটি মৌলিকতা হারাবে। সুতরাং আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন টার্ম পেপার কি জিনিস এবং কি জন্য টার্ম পেপার লিখতে হয়।
টার্ম পেপার একজন নির্দিষ্ট তত্ত্বাবধায়কের অধীনে লিখতে হবে অর্থাৎ পুরো গবেষণা কর্মটি একজন তত্ত্বাবধায়কের অধীনে করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক আপনাকে একটি টপিক দিয়ে দিবে এবং সেই টপিক অনুযায়ী আপনাকে গবেষণা করে টার্ম পেপার বানাতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক আপনার টার্ম পেপারটি মূল্যায়ন করবেন।
আপনাদের একটা কথা জানিয়ে রাখা ভালো যে মাস্টার্সের শেষ পর্বের এই টার্ম পেপার এর উপর পঞ্চাশ মার্ক রয়েছে। সুতরাং আপনারা বুঝতে পারছেন টার্ম পেপারটি মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তাই বিষয়টি খুব গুরুত্বের সাথে নিতে হবে এবং সুন্দরভাবে টার্ম পেপার তৈরি করার চেষ্টা করতে হবে। এক্ষেত্রে কোন ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দেওয়া যাবে না। আমাদের আজকের আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনারা টার্ম পেপার তৈরি করার সকল নিয়ম জেনে নিতে পারবেন এবং টার্ম পেপারের পিডিএফ ফাইল ডাউনলোড করতে পারবেন যা দেখে নিজের টার্ম পেপার তৈরি করার ধারণা পেয়ে যাবেন।
এখন আসি টার্ম পেপার কিভাবে তৈরি করতে হবে তা নিয়ে। সব সময় চেষ্টা করবেন আপনার টার্ম পেপারটি যেন নির্ভুল ও আকর্ষণীয় হয়ে থাকে। আপনাদের অনেকের মনে প্রশ্ন রয়েছে টার্ম পেপার কতটুকু লেখা উচিত অথবা কত পেজ লেখা উচিত। একটি টার্ম পেপার ৩০০০ শব্দের মধ্যে অথবা ৩০০০ শব্দের কিছু বেশি মধ্যে লেখা উচিত। মোটামুটি ২৫ থেকে ৩০ পেজের মধ্যে টার্ম পেপার লিখতে হয়। আশা করি টার্ম পেপার কত বড় লেখা উচিত সে প্রশ্নের উত্তর আপনারা পেয়ে গেছেন।
টার্ম পেপার লেখার নিয়ম
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে যারা মাস্টার্সে পড়াশোনা করছেন তাদের একটি উল্লেখযোগ্য কোর্স হলো টার্ম পেপার। এছাড়াও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষে অথবা বিভিন্ন ইয়ারে টার্ম পেপার লিখতে দেওয়া হয় এবং এটার উপর নির্দিষ্ট কোর্স থাকে। তাই কোন বিষয়ের টান পেপার কিভাবে লিখবেন সে বিষয়ে আমরা যদি আপনাদেরকে জানিয়ে দিতে পারি তাহলে সেটা আপনাদের জন্য অনেক ভালো হবে এবং টাইম পেপার সঠিকভাবে লিখে নিয়ে সে অনুযায়ী তা সাবমিট করলে পূর্ণ নাম্বার পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যেহেতু এটা একটা একাডেমিক বিষয় এবং সব সময় একাডেমিক ক্ষেত্রে আপনার কাছ থেকে কর্তৃপক্ষ সৃজনশীলতা খুঁজে সেহেতু আপনি অবশ্যই ট্রার্ম পেপার লেখার ক্ষেত্রে আপনার সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটাবেন।
তাই টার্ম পেপার লেখার ক্ষেত্রে আপনাকে যে সকল টপিক প্রদান করা হবে সেই সকল টপিকের ভেতর থেকে সাধারণত সবাই যে টপিকের উপরে লিখছে সেটা বাদ দিয়ে অন্য একটা টপিক নির্বাচন করবেন। টার্ম পেপার লেখার ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি হেডিং আপনাদেরকে সংযুক্ত করতে হবে এবং আলাদা আলাদা বিভাগ অনুযায়ী এই হেডিং হয়ে থাকার কারণে আমরা এখানে প্রধান না করে আপনার বিভাগের বিগত টার্ম পেপার থেকে একটু জ্ঞান অর্জন করুন।
এক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্লার্কের কাছে গিয়ে বিগত বছরের টার্ম পেপারের নমুনা চাইলে তারা আপনাদেরকে যেমন প্রদান করবে তেমনিভাবে ডিপার্টমেন্টের বড় ভাইদের থেকে আপনারা এ বিষয়ে সহায়তা চাইলে তারাও হয়তো আপনাকে বন্ধুসুলভ আচরণ দেখে টান পেপার লেখার নিয়ম জানিয়ে দিতে পারে। তাই টার্ম পেপারের প্রত্যেকটি টপিক এবং প্রত্যেকটি হেডিং যাতে ঠিকঠাক মতো থাকে এবং সে অনুযায়ী নিজেদের মতামত প্রকাশ করতে পারেন সে বিষয়টি আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে।
টার্ম পেপার কেমন পেজে লেখা উচিত
টার্ম পেপার লেখার জন্য সবচেয়ে ভালো কাগজ বেছে নেওয়া উচিত। আমাদের বিভিন্ন অফিসিয়াল কাজে আমরা সাধারণত A4 সাইজের কাগজ ব্যবহার করে থাকি। টার্ম পেপার লেখার জন্যও আপনারা এ ফোর সাইজের কাগজ ব্যবহার করবেন। সাধারণত ফটোকপির দোকানগুলোতে স্বল্প মূল্যে এফোর সাইজের কাগজ সব সময় পাওয়া যায়। প্রয়োজন মত এফোর সাইজের কাগজ কিনে আপনার টার্ম পেপার লেখা সম্পন্ন করূন।
টার্ম পেপারের কভার পেজ
টার্ম পেপারের সকল সৌন্দর্য এর কভার পেজে। টার্ম পেপারের কভার পেজ যত সুন্দর হবে এটি দেখতে তত সুন্দর হবে। টার্ম পেপারের কভার কিভাবে তৈরি করবেন তা এখন আলোচনা করব। টার্ম পেপারের cover এ কি কি তথ্য দেওয়া লাগবে তা জেনে নিন।
টার্ম পেপারের কভারে বেশ কিছু তথ্য দেওয়ার প্রয়োজন হবে। প্রথমত আপনি যে টপিকের উপরে টার্ম পেপারটি লিখছেন সেই টপিকটি শিরোনাম হিসেবে দিতে হবে। কভার পেজের উপরের দিকের মাঝখানে শিরোনাম লিখে টপিকটি লিখতে হবে। কভার পেজের বাম দিকে তত্ত্বাবধায়কের নাম, পদবি এবং কলেজের নাম দিতে হবে। কভার পেজের ডানদিকে উপস্থাপকের নাম, শিক্ষাবর্ষ, রোল ও কলেজের নাম দিতে হবে। এখানে একটি কথা জানিয়ে রাখা ভালো যে উপস্থাপক বলতে আপনাকে বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ উপস্থাপকের নামের জায়গায় আপনার নাম ,শিক্ষাবর্ষ, রোল ও আপনার কলেজের নাম দিতে হবে। এভাবে আপনি আপনার টার্ম পেপারের জন্য একটি সুন্দর কভার পেজ তৈরি করতে পারবেন।
কভার পেজের পরে প্রথম পেজটাতে প্রত্যয়ন পত্র লিখতে হবে। এই প্রত্যয়ন পত্রটি আপনাকে লিখতে হবে কিন্তু প্রত্যয়ন করবে তত্ত্বাবধায়ক। প্রত্যয়নপত্রে দেওয়া থাকবে যে এই টার্ম পেপারটি উপস্থাপক নিজে গবেষণা করে টার্ম পেপারটি তৈরি করেছেন এবং তত্ত্বাবধায়ক প্রত্যক্ষভাবে তা মূল্যায়ন করেছেন। প্রত্যয়ন পত্রের নিচে তত্ত্বাবধায়ক এর নাম পদবী ও স্বাক্ষর থাকবে।
ঘোষণাপত্র
প্রত্যয়ন পত্রের পরের পৃষ্ঠায় ঘোষণা পত্র লিখতে হবে। অর্থাৎ আপনি, এই টার্ম পেপারের উপস্থাপক ঘোষণা করবেন যে এই টার্ম ব্যাপারে সকল তথ্য নিজের সংগ্রহ করে উপস্থাপন করেছেন এবং আপনার গবেষণাপত্রটি সম্পূর্ণ মৌলিক। ঘোষণা পত্র টির নিচে আপনার নাম শিক্ষাবর্ষ রোল ও কলেজের নাম দিতে হবে। ঘোষণা পত্রে লিখতে হবে যে এই গবেষণাপত্র টি আপনি অন্য কোন প্রতিষ্ঠানে অথবা প্রকাশনায় প্রকাশ করেননি। আপনার গবেষণাপত্র টি যে একেবারে মৌলিক তা প্রমাণ করবে এই ঘোষণা পত্র। তবে আপনি যদি এই গবেষণাপত্রটি অন্য কোথাও প্রকাশ করে থাকেন তবে আপনার টার্ম পেপারটি বাতিল হয়ে যেতে পারে।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার
টার্ম পেপারের এই অংশে আপনাকে তত্ত্বাবধায়ক এর কাছে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতে হবে। আপনার তত্ত্বাবধায়ক কিংবা সুপারভাইজার নিজে প্রত্যক্ষভাবে আপনার গবেষণা পত্রটি মূল্যায়ন করেছেন এই জন্যই তার কাছে আপনি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করবেন।
সারসংক্ষেপ
আপনার টার্ম পেপারের লেখাগুলো নিয়ে যদি কোন কথা থেকে থাকে তবে এই অংশে লিখে দিতে পারবেন। আপনার নিজের সম্বন্ধে যদি কোন কথা থাকে বা গবেষণা টপিক নিয়ে যদি কোন আলোচনা থাকে তবে স্বল্পপরিসরে এখানে বর্ণনা করতে পারবেন।
সূচিপত্র
প্রতিটি বইয়েরই একটি সূচিপত্র থাকে। সূচিপত্রের মাধ্যমে আমরা নির্দিষ্ট পৃষ্ঠায় খুব সহজে পৌঁছে যেতে পারি। টার্ম পেপারের সৌন্দর্য ধরে রাখতে একটি সূচিপত্র তৈরি করতে হবে। কোন পৃষ্ঠায় কি আছে তা সঠিকভাবে বর্ণনা করতে হবে সূচিপত্রের মধ্যে।
সূচিপত্রের পরের পৃষ্ঠায় ভূমিকা দিতে হবে। এখানে আপনার গবেষণার টপিকটির কিছু শুরুর দিকের কথা আলোচনা করতে পারেন। ভূমিকায় খুব বেশি কিছু না দিলেও চলবে তবে স্বল্প পরিসরে আলোচনা করা ভালো।
সহায়ক গ্রন্থাবলী
সম্পূর্ণ গবেষণায় আপনি কোন কোন বইয়ের সাহায্য নিয়েছেন তা এখানে সংযুক্ত করে দিতে পারেন। এ থেকে আপনার তত্ত্বাবধায়ক নিশ্চিত হবেন যে আপনি নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে তথ্যগুলো সংগ্রহ করেছেন। এরপরের পৃষ্ঠা থেকে আপনি নির্দিষ্ট অধ্যায় ভাগ করে সম্পূর্ণ টার্ম পেপারটি লিখে ফেলতে পারবেন। যে পৃষ্ঠায় যে অধ্যায় লিখবেন তার শিরোনাম সূচিপত্রে সংযুক্ত করে দিবেন। আশা করি এভাবেই আপনি একটি আকর্ষণীয় টার্ম পেপার তৈরি করতে সক্ষম হবেন।
আপনার টার্ম পেপারটি অবশ্যই টেপ বাইন্ডিং করবেন। সুন্দর ভাবে একটি ফাইল এর সাথে যে বাইন্ডিং করলে ট্রার্ম পেপারটি দেখতে ভীষণ সুন্দর দেখাবে। আশা করি টার্ম পেপার সংক্রান্ত সকল প্রশ্নের উত্তর আপনারা পেয়ে গেছেন এবং এখন ট্রাম পেপার তৈরি করা আপনার কাছে খুব একটা কঠিন হবে না। দেরি না করে এখনি আপনার টপিকটি নিয়ে রিসার্চ শুরু করুন এবং টার্ম পেপার তৈরি করার প্রস্তুতি নিন। এ বিষয়ে আরো কোন তথ্য প্রয়োজন হলে কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিন।
টার্ম পেপার লেখার নিয়ম