দৈনন্দিন জীবনে আমরা অনেকে আছি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে থাকলেও সেখানে বিভিন্ন ধরনের ভুল ভ্রান্তি হয়। আবার বাড়ির আশেপাশে কেউ যদি মারা যায় তাদের জানাজার নামাজে যদি আমরা উপস্থিত হই তাহলে সঠিকভাবে নিয়ম না জানার কারণে আশেপাশের লোকের দিকে আমাদের খেয়াল করতে হয়। তবে আপনি যখন কোন নামাজ আদায় করবেন তখন অবশ্যই নামাজে পূর্ণ মনোযোগ থাকতে হবে এবং এদিক ওদিক তাকানো যাবে না। তাই লজ্জা না নিয়ে আপনারা যারা জানাজার নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে এসেছেন তাদের উদ্দেশ্যে আমরা এখানে এই নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করলাম।
বাস্তবিক জীবনে আপনি কোন কিছু না জানতেই পারেন কিন্তু সেটা জেনে নেওয়ার আগ্রহ অবশ্যই দেখাতে হবে এবং জানতে হবে। তাই সেই হিসেবে আপনারা যদি জানাজার নামাজ আদায় করতে চান তাহলে প্রথমে বলবো এটা হচ্ছে ফরজে কিফায়া নামাজ। সাধারণত একজন মুসল্লী যদি মারা যায় তাহলে তার জন্য দোয়া করতে হবে এবং ইস্তেগফার পাঠ করতে হবে। অর্থাৎ আপনি যদি জানাজার নামাজে উপস্থিত হতে পারেন তাহলে সেটা আপনার জন্য সওয়াব বৃদ্ধি হবে এবং মৃত ব্যক্তির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা সম্ভব হবে।
তবে জানাজার নামাজের নিয়ম ও রীতি সম্পর্কে আপনাদের অবগত হতে হবে এবং এ বিষয়ে যারা জানেন না তারা জেনে নিবেন। তাছাড়া যাদের ভুল রয়েছে তারা সংশোধন করে নিবেন। আশা করি আপনাদের জন্য আমরা এখানে প্রত্যেকটি তথ্য সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারব। জানাযার নামাজের নিয়ম থেকে শুরু করে যে সকল দোয়া আমল করা হয় বা পাঠ করা হয় সেগুলো আপনাদেরকে জানিয়ে দিলে আপনারা এ বিষয়ে একেবারে জ্ঞান অর্জন করে সঠিকভাবে ও সহিহভাবে জানাজার নামাজ আদায় করতে পারবেন।
তাই জানাযার নামাজে যখন দাঁড়াবেন তখন অবশ্যই সেখানে বেজোড় কাতার তৈরি করবেন। সেই সাথে ইমামকে নামাজ আদায় করার জন্য মৃত ব্যক্তিকে সামনে রেখে তার বুক বরাবর দাঁড়াতে হবে। পেছনে যারা কাতার বাঁধবেন তারা কম সংখ্যক লোক হলেও তিনটি কাতার কমপক্ষে করবেন অথবা এর চাইতে বেশি সংখ্যক বেজার করার চেষ্টা করবেন। এছাড়া আল্লাহ পাকের ইবাদত হিসেবে জানাজার ফরজ আদায়ের নিয়ত করতে হবে।
জানাজার নামাজ পড়ার নিয়ম ও দোয়া
নিয়ত পড়ার ক্ষেত্রে মনে মনে পড়তে হয় এবং মনে মনে নিয়ত করার সময় অবশ্যই আপনারা যারা জানেন না তারা এখান থেকে জেনে নিবেন। এরপরে তাকবীরে তাহরীমা বলতে হবে এবং কান পর্যন্ত হাত উঠিয়ে ছানা পড়তে হবে এরপর দ্বিতীয় তাকবীর বলে দুরুদ শরীফ পাঠ করতে হবে এবং তাকবীরে হাত উঠানো যাবে না তারপরে যখন তৃতীয় তাকবীর বলা হবে তখন মৃত ব্যক্তি এবং মুসলমানদের জন্য দোয়া করতে হবে এবং তখনও কিন্তু হাত উঠানো যাবে না।
জানাজার নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম
তারপরে চতুর্থ তাকবীর বলার সাথে সাথে আপনাদেরকে সে বিষয়ে মনোযোগী হতে হবে এবং হাত না উঠিয়ে পরবর্তীতে সালাম দিয়ে ডান দিকে ও বাম দিকে সালাম ফেরাতে হবে। এক্ষেত্রে ইমাম সাহেব তাকবীর উচ্চস্বরে পড়বেন এবং বাকি সবাই অনুচ্চসরে পড়তে হবে । অর্থাৎ ইমাম সাহেবের সঙ্গে আপনারা কখনো জোরে জোরে তাকবীর বা দোয়া দরুদ পড়বেন না। মৃত ব্যক্তির অবস্থান এবং অন্যান্য বিষয়ের উপরে নির্ভর করে আপনাদেরকে বিভিন্ন ধরনের দোয়া করতে হবে এবং আপনারা যদি সেই দোয়া সম্পর্কে অবগত হতে চান তাহলে কমেন্ট বক্সে লিখে জানিয়ে দেন।
জানাজার নামাজ পড়ার ফজিলত
জানাজার নামাজ পড়ার ফজিলত সম্পর্কে যারা জানতে চান তাদের উদ্দেশ্যে বলবো যে এটার মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক আপনার সওয়াব বৃদ্ধি করে দিবেন। তাছাড়া জানাজার নামাজে উপস্থিত হওয়ার মধ্য দিয়ে সেই ব্যক্তি একজন ভালো ব্যক্তি ছিল সেটার প্রমাণ দেওয়া অথবা সাক্ষ্য দেওয়ার ক্ষেত্রেও অনেকটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
তাছাড়া এখানে ইস্তেগফার পাঠ অথবা মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করার যে বিষয় রয়েছে তাতে করে সেই মৃত ব্যক্তি উপকৃত হয়ে থাকেন। জানাজার নামাজে অংশগ্রহণ করার মধ্য দিয়ে মৃতের অধিকার আদায়ের বিষয়ে আমরা ভূমিকা রাখতে পারি এবং আমাদের মৃত্যুতে মানুষজন এসে একইভাবে শরিক হয়ে আমাদের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করতে পারেন।