আজকে আমরা এমন একটি মাছ নিয়ে কথা বলবো যেটা বাংলার ইতিহাস এবং ঐতিহ্যের সঙ্গে মিশে আছে। যদিও বাংলাদেশ থেকে এই মাছ আস্তে আস্তে বিলুপ্ত হয়ে গেছে এবং এখন নেই বললেই চলে তারপরও এই মাসের একটি যথেষ্ট ভালো ইতিহাস আছে। তবে এখন পর্যন্ত ওপার বাংলায় অর্থাৎ কলকাতায় এই মাছের প্রচুর প্রচলন আছে এবং যেকোন অনুষ্ঠানে এই মাছের পাতুরি ছাড়া চলে না। জি হ্যাঁ আপনারা ঠিক ধরেছেন আমি বলতে চাচ্ছি ভেটকি মাছের পাতুরি অর্থাৎ যে কোন বিয়ের অনুষ্ঠান হোক বা যেকোনো জন্মদিনের অনুষ্ঠান হোক সেখানে সবার প্রথমে আপনাকে যেই খাবারটা সার্ভ করা হবে আমিষ এর মধ্যে সেটা হচ্ছে ভেটকি মাছের পাতুরি।
অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও অনেকেই এই ভেটকি মাছ চেনেন না এবং তারা যখন ভেটকি মাছ চেনার উদ্দেশ্যে কোথাও খোঁজাখুঁজি করেন যাতে তারা সহজেই ভেটকি মাছ চিনতে পারেন বা দেখতে পান সেই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে আজকে আমাদের এই প্রতিবেদন। এখান থেকে আপনারা সহজেই এই মাছটি চিনতে পারবেন এবং এই মাসের ছবি আমরা এখানে সংযুক্ত করেছি যেখান থেকে আপনারা দেশি ভেটকি মাছ যেটা এখন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সমুদ্র উপকূলবর্তী নদীতে অথবা সমুদ্রে পাওয়া যায় এই মাছের ছবি আমাদের এখান থেকে দেখে নিতে পারবেন। ভেটকি মাছের সাধের কথা বলে শেষ করা যাবে না এটা অনেক সুস্বাদু একটি মাছ।
ভেটকি মাছের দাম
বাংলাদেশে হয়তো ভেটকি মাছ বললে অনেকেই চিনতে পারবে না তবে যদি বাংলাদেশের কোরাল মাছ বলা হয় তাহলে সহজেই চিনবে। কোরাল মাছ আবার দুইটি ধরন ধরে নিতে হয় সেটা হচ্ছে একটি দেশি কোরাল এবং একটি হচ্ছে সামুদ্রিক কোরাল মাছ। সাধারণত সামুদ্রিক যে কোরাল মাছ আছে সেগুলো দেখতে একটু কালো হয়ে থাকে এবং যেগুলো দেশী কোরাল যা নদীতে পাওয়া যায় সেগুলো সাধারণত একটু হলদে ভাব হয়ে থাকে।
তবে এই কোরাল মাছ সাধারণত আরো একটি নামে বাংলাদেশে পরিচিত এবং সেই নামটি হচ্ছে খুলনা অঞ্চলে পা তারি মাছ। এটা সাধারণত লম্বাটে এবং ছাপা ধরনের হয়ে থাকে এবং নিচের চোয়াল ওপরের চোয়াল এর চেয়ে কিছুটা বড় হয়ে থাকে এবং পিঠের দিকে সবুজ এবং পেটের দিকে রূপালী রঙের হয়ে থাকে। এই মাছটি সাধারণত প্রশান্ত মহাসাগরীয় বা ইন্দো ইন্দ্র প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে পাওয়া যায়। এর পাশাপাশি বাংলাদেশ, চীন সহ তাইওয়ান, জাপান অস্ট্রেলিয়া এবং পাপুয়া, নিউগিনি অঞ্চলে পাওয়া যায় এই ম্যাচ। অবশ্যই এই মাছ খেতে অনেক সুস্বাদু বলেই এই মাসের ব্যাপক জনপ্রিয়তা আছে লোক সমাজে।
ভেটকি মাছের বৈশিষ্ট্য
এই সুস্বাদু মাছের কিছু বৈশিষ্ট্য আছে, প্রথম বৈশিষ্ট্য হিসেবে বলতে হয় এর পুষ্টি গুনাগুনের কথা। আপনারা জানলে অবাক হবেন যে এই মাসে প্রচুর পরিমাণে আমিষ ও ওমেগা৩ ফ্যাটি এসিড পাওয়া যায় এর পাশাপাশি ওমেগা৬ ফ্যাটি এসিড থাকে যা সাধারণত আমাদের ভালো কোলেস্টেরল তৈরি করতে এবং হার্টকে ভালো রাখতে সবথেকে কার্যকরী জিনিস। এবার সারা বছর ডিম দিয়ে থাকে তবে এপ্রিল থেকে আগস্ট মাসে এদের মূল প্রজনন কাল হিসেবে বিবেচনা করা হয় । কৃত্রিম প্রজননের ক্ষেত্রে খুব একটা সুদূরপ্রসারী ফলাফল পাওয়া যায় তো যদি কৃত্রিম প্রজনন সম্ভব হয় তাহলে এটা বাংলাদেশের পুকুরে চাষ করা সম্ভব হবে যার ফলে এই মাছের চাহিদা অবশ্যই মেটানো সম্ভব হবে।
আর একটা অবাক করা ঘটনা হচ্ছে এই মাসের দাম প্রচুর হাকা হয়। আর একটু বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে একটি স্ত্রী ভেটকি মাছ এর ওজন যদি পাঁচ থেকে দশ কেজি হয় তাহলে সেটা প্রায় ২১ লক্ষ থেকে ৭১ লক্ষ পর্যন্ত ডিম একবারে দিতে পারে। একবার যদি কৃত্রিম প্রজনন আবিষ্কার করা সম্ভব হয় তাহলে কখনোই এই মাছ আরে বিলুপ্ত হবে না বলে আশা করা যায়।