মানব মন বড়ই অস্থির। বিভিন্ন কারণে মানুষের মন বিভিন্ন অস্থিরতা বিরাজ করতে পারে। যেমন কখনো কখনো খুবই আনন্দিত হতে পারে, আবার কখনো কখনো দেখা যায় যে আমাদের মন বিভিন্ন কারণে বিষন্ন হতে পারে। কিন্তু আমাদের উচিত হাসিখুশি থাকা, আনন্দিত থাকা। বিষন্ন মনে থাকা উচিত নয়। যদি কোনো কারণে আমাদের মন খারাপ থাকে বা মন বিষন্ন হয়ে পড়ে তাহলে আমাদের মন হাসিখুশি করার জন্য আমাদের বিভিন্ন কাজ করতে হবে। বিষন্ন মন থাকলে মন যেমন খারাপ থাকে তেমনি ভাবে মনের সাথে সাথে আমাদের শরীরও খারাপ হয়ে যেতে পারে বা মন বিষন্ন থাকলে কোন কাজ করতে ভালো লাগেনা। তাই বিষন্ন মনে না থেকে স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করতে হবে। তাহলে যেকোন কাজ করে আনন্দ পাওয়া যাবে বা মন ভালো থাকার পাশাপাশি শরীরও ভালো থাকবে।
আমাদের আজকের আর্টিকেলটিতে আমরা মূলত বিষন্ন মন কিভাবে ভালো করা যায় এই বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত লিখার চেষ্টা করবো। আপনিও কি বিষন্ন মন ভালো করতে চাচ্ছেন বা আপনি কি বিষন্ন মন ভালো করার সুন্দর সুন্দর উপায়গুলো খোঁজ করছেন? কিভাবে আপনি বিষন্ন মনকে ভালো রাখতে পারবেন তা জানতে চাচ্ছেন? কোন কারনে কি আপনার মন খারাপ, মন খারাপ কে আপনি ভালো করতে চাচ্ছেন, কিন্তু কিভাবে আপনার মন খারাপ দূর হবে বুঝতে পারছেন না? তাহলে বলবো এই আর্টিকেলটি আপনি পড়তে পারেন। আশা করি আর্টিকেলটি পড়লে আপনার খুবই ভালো লাগবে এবং এখান থেকে আপনি মন খারাপের বিভিন্ন রকম উপায় খুঁজে নিতে পারবেন। তাহলে চলুন দেরি না করে শুরু করা যাক।
হাসি, আনন্দ, দুঃখ, বেদনা নিয়েই আমাদের জীবন। আমরা কেউই সবসময় আনন্দিত থাকতে পারিনা। আবার কেউ সব সময় দুঃখে থাকে না। বিভিন্ন সময় আমরা আনন্দিত থাকি বা হাসিখুশি থাকি। আবার বিভিন্ন কারণে অনেক সময় আমরা দুঃখে থাকি বা বেদনাই থাকি। তখন আমাদের মন বিষন্ন থাকে। তখন আশেপাশের কিছুই ভালো লাগেনা। কোন কাজ করে শান্তি পাওয়া যায় না বা কোন কাজে মনোযোগ দেওয়া যায় না। তাই বিষন্ন মনকে ভালো করার প্রয়োজন হয়। অনেকেই দেখা যায় যে কিভাবে বিষন্ন মন ভালো হবে সে বিষয়গুলো জানতে চায়। আসলে আমাদের বিষন্ন মনকে ভালো রাখার দায়িত্ব আমাদের নিজেদেরকেই নিতে হবে।
অনেকেই দেখা যায় যে মন খারাপ হলে একা থাকতে পছন্দ করে। আসলে একা থাকলে আরো বেশি মন খারাপ হয়। তাই কোন কারণে মন বিষন্ন হলে একা না থেকে বন্ধু বান্ধবের মধ্যে থাকতে হবে। বেশি মানুষের মধ্যে থাকতে হবে, আড্ডা দিতে হবে, মন খারাপের কথাগুলো বেশি চিন্তা করা যাবে না। কারণ এর ফলে আরও বেশি মন খারাপ হতে পারে। সব সময় যদি মন খারাপ থাকে বা বিষন্ন থাকে তাহলে এখান থেকে নানা ধরনের সমস্যা তৈরি হতে পারে বা মানসিক বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হতে পারে। তাই সব সময় মন খারাপের জন্য মনে থাকা উচিত নয়।
১. মন ভালো রাখার সবচেয়ে কার্যকারী `ওষুধ` হিসেবে পরিচিত হাসি। শত মন খারাপেও একচিলতে হাসি সব দুঃখ ভুলিয়ে দিতে পারে। গবেষকরা বলছেন, শুধু মন নয়, শরীরকে সুস্থ রাখতেও সাহায্য করে `প্রাণ খুলে হাসি`৷ এছাড়াও এটি রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
২. শরীরচর্চাও আপনার মন ভালো রাখতে পারে। শরীরচর্চার ফলে অ্যান্ডরফিন নামক হরমোন নির্গত হয়; যা মন ভাল রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া গবেষণায় দেখা গেছে, শরীরচর্চা উদ্বেগ ও মানসিক অবসাদ কমাতেও সাহায্য করে।
৩. সকালে ঘুম থেকে উঠে চায়ের কাপ নিয়ে কয়েক মিনিট রোদে বা জানলার ধারে গিয়ে দাঁড়াতে পারেন। এতে আপনার শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন `ডি` পাবে। সূর্যালোকে এমন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আছে, যা মানসিকভাবে সুস্থ রাখে।
৪. হঠাৎ কোনো কারণে মন খারাপ হলে গান শুনুন। গান মানুষের মন ভালো রাখতে সাহায্য করে। আবার মিউজিকের তালে চাইলে একটু নাচতেও পারেন। পছন্দের কোনো গান শুনলে মুহূর্তেই আপনার মন ভালো হয়ে যেতে পারে। মনে পড়তে পারে সুখের কোনো স্মৃতি। গবেষণায় দেখা গেছে, গান মন ভাল রাখার পাশাপাশি মানসিক ও শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা দূর করে।
৫. অ্যালবামে রাখা পুরোনো ছবিগুলো নেড়েচেড়ে দেখুন। এটি খুব তাড়াতাড়ি আপনার মন ভালো করে দেবে। পুরোনো ছবির পেছনের গল্প যখন আপনার মনে পড়বে তখন পালিয়ে যেতে পারে সব দুঃখ।
৬. এছাড়াও পছন্দের কোনো ছবি ফেসবুকে পোস্ট অথবা কম্পিউটারের স্ক্রিনসেভারে রাখতে পারেন। এতে মনে নতুন উদ্দীপনা তৈরি হবে। ভালো মন নিয়ে কাজ শুরু করতে পারবেন।
৭. লিখতে পারেন ডায়েরিতে মজার কোনো স্মৃতি লিখতে পারেন। যদি নেইলপলিশ পছন্দ করেন নখটা একটু রাঙিয়েও নিতে পারেন। রান্নার যদি শখ থাকে তা হলে করে ফেলুন মজার কোনো রেসিপি।
আবার কোনো কারনে মন খারাপ হলে সেই মন খারাপের কারণগুলো নিকট মানুষের সাথে শেয়ার করা উচিত বা বন্ধুর সাথে শেয়ার করা উচিত। যদি কোনো কষ্টের কথা প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করা হয়, তাহলে অনেক সময় কষ্ট কমে যেতে পারে বা মন হালকা হতে পারে। তাই আপনার যদি মন খারাপ থাকে তাহলে মন খারাপের কারণগুলো আপনার পরিবারের কোনো সদস্যের সাথে বা প্রিয় মানুষগুলোর সাথে শেয়ার করবেন। তাহলে আপনার মন খারাপ অনেকটা কমে যাবে। তাছাড়া আপনার প্রিয় মানুষদের সাথে সময় কাটাতে পারেন বা বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে সময় কাটাতে পারেন। বিভিন্ন সময় দেখা যায় যে আপনি সুন্দর সুন্দর জায়গায় ভ্রমন করতে পারেন। এর ফলে আপনার মন খারাপ ঠিক হয়ে যাবে। আবার আপনি সুন্দর সুন্দর বই পড়তে পারেন। বই পড়লেও বিষন্ন মন আনন্দিত হয়ে যেতে পারে।