জীবনের কোন একটা পর্যায়ে যদি কঠিন ভাবে ধরা খান অথবা খুব খারাপ পরিস্থিতিতে পড়ে যান তাহলে অবশ্যই মনে রাখতে হবে আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন। মুসলিম ধর্মের অনুসারীরা অবশ্যই এ বিষয়টা অনুধাবন করতে পারবেন। তবে অনেক সময় এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হয় যখন যে কেউ বলে থাকে আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন তখন এটা শুনে হয়তো মনের ভেতরে রাগ জন্মাতে পারে। তবে এখানকার এই তথ্যটি যদি ভালোমতো পড়ে থাকতে পারেন তাহলে দেখা যাবে যে আপনারা ভেতরে রাগের পরিবর্তে শুকরিয়া চলে আসবে।
আপনি যদি শিক্ষিত হয়ে থাকেন অথবা পড়ালেখা করা অবস্থায় থেকে থাকেন তাহলে কোন একটা পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ার ফলে মনের ভেতরে হয়তো অনেক রাগ হতে পারে যে এত সুন্দর করে পড়াশোনা করার পরেও কেন ফেল করলেন। আবার অনেক সময় ব্যবসাতে অথবা চাকরিতে খুব ভালোমতো পারফরম্যান্স দেখানোর পরেও কোন একটা কারণে যদি আপনাকে সেখান থেকে বহিষ্কার করা হয় অথবা ব্যবসায় যদি বিশাল ধরনের ক্ষতিগ্রস্ততার শিকার হন তাহলে মনে হতে পারে কেন এমনটা হল।
এমন অনেক ব্যক্তি রয়েছেন যারা সকল ক্ষেত্রে ভালো পারফরম্যান্স দেখাচ্ছেন অথবা আল্লাহ পাককে ডাকার পরেও হয়তো আপনাকে এ ধরনের বিপদের মধ্য দিয়ে যেতে হতে পারে। তবে এই ক্ষেত্রে বলবো যে মহান আল্লাহ পাক মানুষ এবং জিন জাতিকে সৃষ্টি করেছেন তাঁর ইবাদত বন্দেগী করার জন্য। এই পৃথিবীটা একটা পরীক্ষা কেন্দ্র এবং এখানে আমরা জন্মগ্রহণ করেছি আল্লাহ পাকের উদ্দেশ্যে নিজেদের বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করানোর জন্য।
অর্থাৎ আপনি বিপদের মুহূর্তে হারামের পথে এগিয়ে যাচ্ছেন নাকি হালালের পথে সঠিকভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ আছেন তা আল্লাহ পাক দেখে থাকবেন। বিপদ আপদের সময় ধৈর্য ধারণ করার পরিবর্তে আপনি যদি খারাপ পরিস্থিতি অবলম্বন করে থাকেন তাহলে সেটা আপনাকে আরো খারাপ পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে। আবার আপনি যদি সেই পরিস্থিতি থেকে বিভিন্ন বিষয়ের সৃষ্টি করে থাকেন তাহলে সেখান থেকে উদ্ধার পেয়ে থাকল পরবর্তীতে জীবনে আপনাকে সেই পাপের শাস্তি ভোগ করতে হবে। তাই আল্লাহপাক যেমন দিয়েও পরীক্ষা করেন তেমনিভাবে কোন কোন জিনিস কেড়ে নিয়েও পরীক্ষা করেন এটা আমাদেরকে মানতে হবে।
মানুষ হিসেবে আমাদের এখানে কাজ হবে প্রত্যেকটা বিষয়ে ধৈর্য ধারণ করা এবং আল্লাহর পথে অবিজল থাকা। আল্লাহর পথে থাকার ফলে আপনার জীবনে যদি দুঃখ কষ্ট নেমেও আসে তারপরও আপনারা হয়তো দুনিয়ার সাময়িক আনন্দের পথে পা বাড়াবেন না। তাই একজন মুমিন ব্যক্তি কতটা মুমিন তা শয়তান বিভিন্ন সময় তাদের প্ররোচনায় পরিচালিত করার চেষ্টা করে থাকলেও মুমিন ব্যক্তি তার ঈমানদারীত্বের মাধ্যমে আল্লাহর পথেই অবিচল থাকে।আর আল্লাহ পাক আমাদের জন্য যা কিছু করে থাকেন সেটা ভালোর জন্যই করে থাকেন এবং এটার বড় উদাহরণ হচ্ছে আল্লাহ উত্তম পরিকল্পনাকারী।
আল্লাহপাক যদি বান্দাকে কোন কিছু দেওয়ার মনে করে থাকেন তাহলে তিনি এমন একটা সময় দিবেন যেটা বান্দার জন্য প্রয়োজন। এক্ষেত্রে আল্লাহপাক সেই জিনিস প্রদান করতে দেরি ও করেন না অথবা নির্দিষ্ট সময়ের আগেও প্রদান করেন না। আমাদের জীবনে যে সকলকে যাচ্ছে অথবা যে সকল খারাপ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি সে সকল জায়গা থেকে আমরা খারাপ পথে পরিচালিত না হয় আল্লাহর হেদায়েতের পথে চলে আসব। জীবনের যে সকল ভুল ভ্রান্তি রয়েছে সেগুলো আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে সঠিক পথে পরিচালিত হতে পারলে সঠিকভাবে নিজের জীবনকে পরিচালনা করা যাবে এবং মৃত্যু পরবর্তী জীবনে ভালো অবস্থানে থাকা যাবে।
জীবন থেকে যদি প্রিয় জিনিস অথবা প্রিয় মানুষ কেড়ে নেওয়া হয় তাহলে নিশ্চয়ই বুঝতে হবে সেটা আপনার জন্য অকল্যাণকর ছিল। তাই সকল পরিস্থিতিতে আল্লাহপাকের প্রতি আলহামদুলিল্লাহ পাঠ করার পাশাপাশি ধৈর্য ধারণ করে ফরজ ইবাদত এবং অন্যান্য যাবতীয় ইবাদত করতে হবে। আল্লাহর পথে যদি আপনি অবিচল থাকেন তাহলে দুনিয়ার জীবনের এই পরীক্ষায় আখিরাতের জীবনে পুরস্কৃত হবেন। তাছাড়া যা আপনার জন্য কল্যাণকর নয় এটা আপনার আপাতদৃষ্টিতে ভালো বলে মনে হলেও আল্লাহ পাক আপনাকে তা কখনোই প্রদান করবেন না। তাই আল্লাহপাক যা করেন ভালোর জন্যই করেন।