একটি স্বাভাবিক মেয়ের চেয়ে গর্ভবতী মেয়ের অবশ্যই বেশি যত্নের প্রয়োজন হয়। গর্ভকালীন সময়ে অন্যান্য সময়ের চাইতে বেশি যত্নের যেমন প্রয়োজন হয় তেমনি বেশি পুষ্টিকর খাবারের প্রয়োজন হয়। কেননা পুষ্টিকর খাবার না খেলে পুষ্টির অভাবে মা ও শিশু উভয়েরই ক্ষতি হতে পারে। তাই মা ও শিশুর ক্ষতি না হওয়ার জন্য এবং তাদের সুস্থতার জন্য অবশ্যই গর্ভকালীন সময়ে মাকে পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে। তাছাড়া যে কোনো ধরনের ভারী কাজ করানো উচিত নয়। কেননা ভারী কাজ করলে বা বেশি কাজ করলে সে মায়ের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা বা জটিলতা তৈরি হতে পারে। যা সন্তান এবং মা উভয়ের পক্ষে ক্ষতিকর। তাই মাকে এ সময় অনেক বেশি রেস্ট রাখতে হবে এবং যেকোনো ধরনের ভারী কাজ করানো থেকে বিরত থাকতে হবে।
তাছাড়া সন্তান গর্ভে আসার পর থেকে মাকে একজন ডাক্তারের বা চিকিৎসকের পরামর্শ মত চলতে হবে এবং সময়মতো তার কাছে গিয়ে ট্রিটমেন্ট করতে হবে মা ও শিশু হয় ভালো আছে কিনা তা দেখতে হবে। তাহলে সে মা ও শিশুর বিভিন্ন জটিলতা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। তবে বর্তমান সময় দেখা যায় যে মা ও শিশুর সুস্থতা নিশ্চিত করার জন্য অনেকে মনে করে যে নরমাল ডেলিভারি করার চেয়ে সিজারের মাধ্যমে ডেলিভারি করানো অনেক বেশি ভালো। কিন্তু আসলে এই ধারণাটা ভুল। নরমাল ডেলিভারি করালে পরবর্তী সময়ে মা ও শিশু উভয়ে ভালো থাকে এবং তারা বিভিন্ন ধরনের সমস্যার হাত থেকে বাঁচতে পারে। কিন্তু সিজারের মাধ্যমে ডেলিভারি করালে পরবর্তী সময়ে মা ও শিশু দুজনার জন্য ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে। এক্ষেত্রে শিশুর স্বাভাবিক বিকাশে সমস্যা হতে পারে, আবার মায়েরও বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে।
যে সকল মা সিজারের মাধ্যমে বাচ্চার জন্ম দেয় তাদের বেশিরভাগই মাজা ব্যাথার মতো সমস্যা তৈরি হতে পারে এবং এই মাজা ব্যথার সমস্যা দীর্ঘদিন স্থায়ী হয়। আর এ সমস্যার হাত থেকে বাঁচা অনেকটাই কঠিন হয়ে যায়। তাই এই বিষয়গুলো খেয়াল রেখে যতক্ষণ কোন ধরনের জটিলতা তৈরি না হয় বা কোন ধরনের সমস্যা তৈরি না হয় ততক্ষণ সিজার না করে নরমাল ডেলিভারি করা ভালো।
মা ও শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য গর্ভকালীন সময়ে যেমন তাদের বিশেষ যত্ন নেওয়ার প্রয়োজন হয়, তেমনি গর্ভের পরবর্তী সময়েও বিশেষ যত্ন নিতে হবে। কেননা গর্ভের পরবর্তী সময়েও বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি হতে পারে। আর এই সকল সমস্যার হাত থেকে বাঁচার জন্য নরমাল ডেলিভারি হওয়ার পরও বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। মা ও শিশুর অনেক বেশি যত্ন নিতে হবে। তাছাড়া শিশু ঠিকমতো খাবার গ্রহণ করছে কিনা, কোন ধরনের সমস্যা হচ্ছে কিনা, শিশু বিভিন্ন ধরনের সমস্যার মধ্যে আছে কিনা, শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ ত্বরানিত হচ্ছে কিনা এই বিষয়গুলো সুন্দরভাবে খেয়াল করতে হবে। আর যদি কোন ধরনের সমস্যা দেখা দেয় তাহলে দেরি না করে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তাহলে এই সমস্যাগুলোর হাত থেকে বাঁচা সম্ভব হবে এবং শিশু সুস্থ স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠতে পারবে।
নরমাল ডেলিভারি হওয়ার পর মায়েরও বিশেষ যত্নের প্রয়োজন হয়। মাকেও চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে। যদি চিকিৎসক কোন ওষুধ প্রেসক্রাইব করে থাকেন তাহলে সেই ওষুধগুলো ঠিকমত গ্রহণ করতে হবে। কারণ সে ওষুধ গুলো ঠিকমত গ্রহণ না করলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। তাই পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হবে। এ সময় যত বেশি পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা যাবে তত বেশি সুস্থ থাকা যাবে, শরীর তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবে। তাই অবশ্যই পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত করতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শের মতো চলতে হবে। তাহলে আশা করা যায় গর্ভ পরবর্তী সময়ে যে সকল জটিলতা রয়েছে সে সকল জটিলতা মোকাবেলা করা সম্ভব হবে এবং মা ও শিশু উভয়েই সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকবে।