আল্লাহ কোথায় আছেন এই প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইলে অবশ্যই আমরা আপনাদেরকে সঠিকভাবে রেফারেন্স সহকারে উত্তর প্রদান করব। মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহপাক কোথায় আছেন সে প্রসঙ্গে যারা জানতে চান তাদের উদ্দেশ্যে আমরা এখানে এই তথ্যগুলো আলোচনা করতে চলেছি। সাধারণ দৃষ্টিকোণ থেকে আল্লাহপাক সকল জায়গাতে আছেন এবং আমরা প্রত্যেকটি স্থানে আল্লাহ পাকের রহমত অথবা অস্তিত্ব চাইলে অনুভব করতে পারি। অর্থাৎ দুনিয়ার জীবনে যারা বিভিন্ন কারণে ব্যস্ত হয়ে গিয়েছেন তারা হয়তো আল্লাহ পাকের স্মরণ করতে পারেন না এবং হয়তো আল্লাহ পাকের যে রহমত ও নিয়ামতের মধ্য দিয়ে জীবনকে পরিচালনা করছেন সেটা উপলব্ধি করতে পারেন না।
আল্লাহ পাক কোথায় আছেন এ প্রশ্নের উত্তরটি উত্তর প্রদান করতে চায় তাহলে বলব যে তিনি আরশে আছেন। এ প্রসঙ্গে আমরা কুরআন মাজিদের ২০ নম্বর সূরা ত্বহাতে স্পষ্ট ধারণা পেয়েছি। এই সূরার ৫ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেছেন, পরম করুনাময় আরশের উপর আছেন। এছাড়াও আরো যদি রেফারেন্স পেতে চান তাহলে বলবো যে কুরআন মাজীদের ৬৭ নম্বর সূরা মূলকের ১৬ নাম্বার আয়াতে তিনি বলেছেন, তোমরা তার থেকে নির্ভয় হয়ে গেলে যিনি আসমানে আছেন আর তিনি তোমাদের সহকারে জমিনকে ধসিয়ে দিবেন না?
এ প্রসঙ্গে আল্লাহপাক আরো বলেছেন যে, তারা তাদের উপরস্থ রবকে ভয় করে। এই রেফারেন্স দেওয়া হয়েছে কুরআন মজিদের 16 নম্বর সূরা সূরা নাহলের 50 নম্বর আয়াত থেকে। এরকম অনেক রেফারেন্স রয়েছে যেটার মাধ্যমে প্রকাশ পায় আল্লাহপাক আরশে অবস্থান করছেন। তিনি সেখান থেকে এই পৃথিবীর সকল বিষয় পর্যবেক্ষণ করেন এবং প্রত্যেকটি বান্দা কি কি করছেন তার ওপরে নির্ভর করে আখিরাতের জীবনে হয়তো তাকে পুরস্কৃত করবেন অথবা শাস্তি প্রদান করবেন।
আল্লাহপাক আমাদের জন্য এই পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং এই পৃথিবীর বুকে আমাদেরকে বিচরণ করতে সাহায্য করে থাকেন। মানুষের নাকের ডগায় যে নিঃশ্বাস নিতে পারার ক্ষমতা রয়েছে অথবা অক্সিজেন প্রদান করছে সেটা আল্লাহপাকের কুদরতেই হচ্ছে। কিন্তু আমরা আল্লাহ পাকের প্রতি অনেক সময় আনুগত্য প্রকাশ করি না অথবা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার কথা মাথায় রাখে না। দুনিয়াবি চিন্তায় এতটাই নিজেদেরকে ব্যস্ত করে রাখে যে মনে হয় আমরা অনেক শক্তিশালী হয়ে গিয়েছে।
কিন্তু এই শক্তির মূল উৎস কোথায় অথবা এই শক্তি কে দান করছেন তা যদি আমরা একটাবার উপলব্ধি করতে চাই এবং সে অনুযায়ী কাজ করতে চাই তাহলে সেটা অবশ্যই আল্লাহর প্রতি আনুগত্য স্বীকার করা হবে। এই পৃথিবীর বুকে একটা মানুষের জীবনে যেমন সুখ সমৃদ্ধি আল্লাহ পাক দান করে থাকেন তেমনিভাবে বিপদ আপদ দেওয়ার মাধ্যমে বান্দার ধৈর্য ও অন্যান্য বিষয়গুলো পরীক্ষা করে থাকেন। তাই আল্লাহপাক আমাদেরকে এই পৃথিবীতে একটা পরীক্ষা কেন্দ্র হিসেবে পাঠিয়েছেন।এই পৃথিবীর বুকে আমরা দৈনন্দিন জীবনে কি কাজ করছি তার উপর নির্ভর করে আল্লাহপাক আমাদেরকে পুরস্কৃত করবেন।
আল্লাহপাকের আনুগত্য প্রকাশ করার পাশাপাশি তিনি আমাদের জীবনে যে সকল কাজগুলো ফরজ করে দিয়েছেন সেগুলো পালন করব। সেই সাথে রাসূল সাঃ এর সুন্নতের তরিকা পালন করার মধ্য দিয়ে নিজেদের জীবনের যদি সঠিক ভিত্তিক স্থাপন করতে পারি তাহলে অবশ্যই আল্লাহ পাক আমাদের প্রতি খুশি হবেন। তাই আল্লাহপাকের দরবারে আমরা দৈনন্দিন জীবনে যে সকল ভুল করে থাকি সেগুলো থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অথবা সে সকল শাস্তি থেকে নিজেদেরকে বিরত রাখার জন্য ক্ষমা চাইতে পারি।
কারণ আল্লাহপাক হচ্ছেন ক্ষমাশীল এবং আমরা যদি আল্লাহ পাকের দরবারে হাত তুলে কান্না করে ক্ষমা চাইতে পারি তাহলে অবশ্যই তিনি ক্ষমা করবেন। সেই সাথে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার পাশাপাশি আল্লাহপাক আমাদের দৈনন্দিন জীবন বিধান যেভাবে মেনে চলতে বলেছেন অথবা যে সকল পথে আমাদের জীবনকে পরিচালনা করতে বলেছেন সে সকল পথে নিজেদের জীবনকে পরিচালনা করব। মূল কথা হলো, আল্লাহপাকের অস্তিত্ব, নেয়ামত, রহমত এবং অন্যান্য কিছু কখনোই ভুলা যাবে না এবং তার জন্য প্রতিনিয়ত আল্লাহ পাকের দেখানো পথে নিজেদেরকে পরিচালনা করতে হবে।