কলা একটি সম্পূর্ণ ফল। বর্তমানে নাস্তা হিসেবে কলা কিন্তু খুবই জনপ্রিয়। কলার চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রজাতির বিভিন্ন জাতের কলা এখন বাজারে কিনতে। বিভিন্ন ধরনের কলার চাষ হয়। আচ্ছা সিরিয়া বর্তমানে খুব লাভবান হচ্ছে। সাগর কলা অনুপম কলা, চিনি চম্পা কলা, মানিক কলা, গন্ধরাজ কলা ইত্যাদি কলা গুলো খেতেও যেমন সুস্বাদু তেমনি পুষ্টিগুনে ভরা।
কাঁচকলা থেকে পাকা কলা সবুজ কলায় রেসিস্ট্যান্ট স্টার্চের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি এবং শর্করার পরিমাণ কম থাকে। অ্যামিনো অ্যাসিড, ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন সি, আয়রন, ক্যালশিয়াম, ফসফরাসের মতো উপাদানও থাকে যথেষ্ট পরিমাণে। কলা পাকার সঙ্গে সঙ্গে রেসিস্ট্যান্ট স্টার্চ শর্করায় পরিবর্তিত হতে থাকে। তাই হলুদ কলায় শর্করা বেশি।
আমরা যারা প্রতিদিন কলা খায় তারা কিন্তু অনেক রোগের ঝুঁকি থেকে বেঁচে যায়। খাওয়ার কিছু উপকারিতা সম্পর্কে আমাদের জানা উচিত। দিন সকালে কিংবা বিকালে নাস্তা হিসাবে দুই থেকে তিনটি কলা যদি খাওয়া হয় তাহলে শরীরের নানা ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
অতিরিক্ত পাকা কলা রক্তনালীতে থাকা ব্লক দূর করে স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ করে। বেশি পাকা কলায় সোডিয়াম কম ও পটাশিয়াম বেশি থাকে। তাই নিয়মিত অতি পাকা কলা খেলে রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকে। অতি পাকা কলায় আয়রনের পরিমাণ বেশি থাকে, তাই এটি অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করে।
গলার মধ্যে বিদ্যমান বিভিন্ন ভিটামিন যেগুলো স্বাস্থ্যের জন্য এবং ত্বকের জন্য খুবই ভালো। নাস্তায় কলা খাওয়া খুবই ভালো কারণ সকালে ঘুম থেকে উঠে আমাদের দিনের শুরুটা যদি কলার মত একটি পুষ্টিকর খাদ্য দিয়ে শুরু হয় তাহলে সারাদিন সুস্থ ভাবে সতেজ ভাবে কাটানো যায়।কলার গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদানএই সোনালি ফলটি ভিটামিন বি৬–এর খুব ভালো উৎস। ভিটামিন বি৬ শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা, স্নায়ুতন্ত্র ও মস্তিষ্কের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
এ ছাড়া কলাতে রয়েছে ভিটামিন সি, ম্যাগনেশিয়াম, কপার, ম্যাঙ্গানিজ, কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, প্রোটিন ও ফ্যাট প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় কলা থেকে। তাই কলা একটি সম্পূর্ণ ফল। কলা খেলে পেট ভরে যায়। তাই কলা একটি সম্পূর্ণ খাদ্য ও বটে। অন্য ফল খেলে পেট ভরে না। কিন্তু নাস্তায় কলা খেলে পেট ভরে যায় এবং এটা শরীরের জন্য খুবই ভালো। যে কোন বয়সের এবং যেকোনো রোগীরা এই কলা খেতে পারে। রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। খাদ্য খাবারের পর যদি একটি কলা খাওয়া হয় তাহলে সেটা খাবার হজম করতেও সাহায্য করে।
ছোট বাচ্চাদের দুধের সঙ্গে কলা খাওয়ানো খুবই ভালো। কলা খাওয়ালে ছোট বাচ্চাদের পাকস্থলী ভালো থাকে। কলা খাওয়ালে বাচ্চারা ভিটামিন ডি এবং সকল ধরনের পুষ্টিগুণ পেয়ে থাকে। বাচ্চাকে দুধের সঙ্গে কলা খাওয়ালে বাচ্চা সারাদিন সতেজ থাকে এবং তাদের স্বাভাবিক বিকাশে সাহায্য করে কলা। দুই বছর থেকে পাঁচ বছর বয়সী বাচ্চাদের খাবারের নিয়মিত
কলা খাওয়ালে খুবই ভালো। কিন্তু কলা খাওয়ালে অনেক সময় বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগতে পারে। তারপরেও নিয়মিত যদি কলা খাওয়ানো হয় তাহলে বাচ্চাদের অভ্যাস হয়ে যায় এবং পরবর্তী তাদের আর ঠান্ডা লাগে না। গরমকালে অথবা শীতকালে সব সময় নাস্তা বা হালকা খাবার হিসেবে আমরা কলা খেয়ে বেছে নিতে পারি। নাস্তা হিসেবে বিভিন্ন মুখরোচক ফাস্টফুড না খেয়ে যদি কলা খাওয়া হয় তাহলে সেটা খুবই উপকারী।
কলার মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। এজন্য বাচ্চাদের কলা খাওয়ানো খুবই ভালো। বেবি ফুড এর সঙ্গে যদি কলা মিশিয়ে বাচ্চাকে খাওয়ানো হয় তাহলে আপনার বাচ্চা দ্রুত বৃদ্ধি পাবে এবং আপনার বাচ্চার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে।
কলার মধ্যে রয়েছে এমাইনো এসিড, যেটি মানসিক চাপ রোধক হিসেবে কাজ করে। এর মধ্যে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়াম- যা বিষণ্ণতা রোধে কাজ করে। কলার মধ্যে রয়েছে উচ্চ পরিমাণে ক্যালসিয়াম এবং সামান্য পরিমাণ লবণ যা হৃদপিণ্ড ভালো রাখতে সাহায্য করে; এটি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও কাজ করে।
কলা খাওয়ার উপকারিতা এবং কলাতে সমৃদ্ধ পুষ্টি গুন সম্পর্কে আমরা জানতে পেরেছি। তাই আমরা আমাদের খাদ্য তালিকায় কলা নিয়মিত রাখবো। নিয়মিত কলা খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো।