কুয়াশা এবং শিশিরের মধ্যে পার্থক্য

প্রিয় বন্ধুগণ আপনি কি জানেন কুয়াশা এবং শিশু কিন্তু এক জিনিস নয়। আমরা অনেক সময় কুয়াশা এবং শিশিরকে একসঙ্গে গুলিয়ে ফেলি কিন্তু দুইটা কিন্তু আলাদা জিনিস। আমরা যারা প্রকৃতিপ্রেমী মানুষ তারা কিন্তু এইসব বিষয়ে খুব বেশি আগ্রহী প্রকাশ করি। সকালের শিশির ভেজা ঘাস নিয়ে কতই কবি কতই না কবিতা রচনা করেছে। শিশির ভেজা ফুল সকালের সেই মুগ্ধ ময় দৃশ্য আমরা কেনা পছন্দ করি।

শিশির নিয়ে কুয়াশা নিয়ে অনেকে সোশ্যাল মিডিয়াতে বিভিন্ন ধরনের সুন্দর সুন্দর স্ট্যাটাস শেয়ার করে থাকে। আমাদের অনেক প্রকৃতিপ্রেমী বন্ধু যারা প্রাকৃতিক এইসব বিষয় নিয়ে আগ্রহী তারা কিন্তু এ ধরনের প্রশ্ন করে থাকে। তাই তাদের জন্য আজকে আমরা আমাদের এই সংক্ষিপ্ত কিছু বৈজ্ঞানিক আলোচনায় আপনাদের সামনে হাজির হলাম। তাহলে চলুন আজকে আমরা শিশির এবং কুয়াশার মধ্যকার পার্থক্য সম্পর্কে জানব।

কোন জিনিসের মধ্যে যখন আমরা পার্থক্য খুঁজতে যাব তখন প্রথমে আমাদের জানতে হবে সংজ্ঞা। অর্থাৎ পার্থক্য যখন আমরা করতে যাই তখন অবশ্যই দুইটা বস্তুর মধ্যে পার্থক্য করা হয়। একটা বস্তুর মধ্যে কি আমরা কখনো পার্থক্য করতে পারি? কখনোই না। আজকে যেহেতু আমরা কুয়াশা এবং শিশিরের মধ্যে কার পার্থক্য সম্পর্কে জানব এর জন্য প্রথমে আমাদের জানতে হবে কুয়াশা কাকে বলে এবং শিশির কাকে বলে।

কুয়াশা কি কুয়াশা কাকে বলে? কুয়াশা হল ভূমির সংস্পর্শে থাকা মেঘমালা। মেঘকেও আংশিকভাবে কুয়াশা বিবেচনা করা যায়, মেঘের যে অংশটুকু মাটির ওপরে বাতাসে ভাসমান থাকে তা কুয়াশা হিসেবে বিবেচিত নয়, তবে মেঘের ভূমির উঁচু অংশের সংস্পর্শে থাকা মেঘকে কুয়াশা বলা হয়।শিশিরের সংজ্ঞায় কি বলা যায়? অথবা শিশির কাকে বলা হয়?শিশির হল কোনো শীতল বস্তুর উপর জলীয় বাষ্প জমা হয়ে সৃষ্ট বিন্দু।

আমরা জেনে নিলাম শিশির কাকে বলে এবং কুয়াশা কাকে বলে। কুয়াশা কিন্তু শীতকালে দেখতে পাওয়া যায়। কুয়াশা হল আবহাওয়ার প্রভাব। শীতের দিনগরম বাতাসের জলীয় বাষ্প ধারণক্ষমতা বেশি, ঠান্ডা বাতাসের কম। শীতকালে সারা দিন সূর্যরশ্মির তাপে মাটি ও বাতাস গরম হয় এবং বেশি জলীয় বাষ্প ধারণ করে। সন্ধ্যার পর বায়ুমণ্ডল ঠান্ডা হয়ে আসে। তখন বাতাসের অতিরিক্ত জলীয় বাষ্প বাতাসের ধুলাবালুর সঙ্গে মিশে কুয়াশার আকার ধারণ করে। এর কারণেই কিন্তু আমরা শীতকালের সকাল কুয়াশাচ্ছন্ন দেখতে পাই। গরমকালে কিন্তু কুয়াশা পড়ে না। গরমকালে সকালে ঘাসের উপর আমরা দেখতে পাই শিশির।

একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় বাতাস একটি নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত জলীয় বাষ্প ধারণ করতে পারে। তাপমাত্রা বাড়লে যেমন ধারনক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, তেমনি তাপমাত্রা কমলে ধারনক্ষমতা হ্রাস পায়। সাধারণত সন্ধার পরে তাপমাত্রা কমে যায় এবং বাতাস জলীয় বাষ্প দ্বারা সম্পৃক্ত হয়ে থাকে। যদি তাপমাত্রা আরো কমে যায়, তখন বাতাস আর জলীয় বাষ্প ধরে রাখতে পারে না এবং তা শীতল বস্তুর উপর পানির কণা হিসেবে জমা হয়। এ পানির বিন্দু শিশির বিন্দু নামে পরিচিত (যেমন, ঘাসের উপর শিশির বিন্দু জমা হয়)।

শিশির সবসময় গোলাকার।পৃষ্ঠটানের জন্য স্বল্প আয়তনের তরল পদার্থ সর্বদা গোলকের আকৃতি গ্রহণ করার চেষ্টা করে। তরলের মুক্ততল স্থিতিস্থাপক পর্দার ন্যায় কাজ করে এবং পৃষ্ঠতলের ক্ষেত্রফল সংকুচিত হয়ে থাকতে চায়। এজন্য তরল পদার্থ গোলকের আকৃতি নেয় কারন গোলকের পৃষ্ঠতলের ক্ষেত্রফল সর্বনিম্ন হয়ে থাকে।

শিশির হল কোনো শীতল বস্তুর উপর জলীয় বাষ্প জমা হয়ে সৃষ্ট বিন্দু। একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় বাতাস একটি নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত জলীয় বাষ্প ধারণ করতে পারে। অনেক সময় পথ চেয়ে দূর থেকে নির্গত পানিও কিন্তু শিশুর বলে বিবেচিত হতে পারে। সকালে তাপমাত্রা কম থাকে এর ফলে কিন্তু শিশির বিন্দু আমরা দেখতে পাই ঘাসের উপর।

কুয়াশা এবং শিশিরের মধ্যকার পার্থক্য আমরা আলোচনা করলাম। কুয়াশা আমরা সাধারণত শীতকালে দেখতে পায় এবং শিশির যেকোনো তাপমাত্রায় যে কোন ঋতুতে দেখতে পাওয়া যায়। জলীয় বাষ্পর রূপ হচ্ছে শিশির। প্রিয় বন্ধুগণ আশা করি আপনারা আমাদের এই আলোচনা বুঝতে পেরেছেন।

Leave a Comment