যোগান ও মজুদের মধ্যে পার্থক্য

যোগান ও মজুদ শব্দটি অর্থনীতির সাথে জড়িত। এই শব্দ দুটি প্রায় সমার্থক হলেও এই শব্দ দুটি আলাদা এবং যোগান ও মজুদের মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। অনেকেই দেখা যায় যে যোগান বলতে কি বোঝায়, মজুদ বলতে কী বোঝায়, যোগান ও মজুদ একই জিনিস কিনা, যোগান এবং মজুদের মধ্যে পার্থক্য আছে কিনা, যোগান ও মধুদের মধ্যে যদি পার্থক্য থেকে থাকে তাহলে কি ধরনের পার্থক্য রয়েছে এই বিষয়গুলো জানতে চায়। এজন্য আমাদের আজকের আর্টিকেলটিতে যোগান ও মজুদের পার্থক্যসমূহ নিয়ে নানা ধরনের তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। সে সাথে সাথে যোগান বলতে কি বোঝায়, মজুদ বলতে কি বোঝায় সেই বিষয়টি নিয়েও আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আপনি যদি এই বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান এবং এই দুটি শব্দের মধ্যে পার্থক্য সংগ্রহ করতে চান, তাহলে পড়তে পারেন। এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করার জন্য এই আর্টিকেলটির দারুন ভূমিকা রাখতে পারে।

যোগান এবং মজুদের মধ্যে পার্থক্য জানতে হলে আমাদের প্রথমত যোগান বলতে কি বোঝায় এবং মজুদ বলতে কি বোঝায় সে বিষয়টি সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে। নিচে যোগান বলতে কি বোঝায় তা আলোচনা করা হলো:

যোগান (Supply):

যোগান বলতে আমরা সাধারণত কোন দ্রব্যের সরবরাহকে বুঝে থাকি। অর্থাৎ যোগান বলতে কোন দ্রব্য সরবরাহ করাকে বোঝানো হয়। কিন্তু অর্থনীতিতে যোগান বলতে একটি নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট পণ্যে বিক্রেতাগণ কোনো দ্রব্যের যে পরিমাণ বাজারে বিক্রয় করতে রাজি থাকে তাকে যোগান বলা হয়। কোনো দ্রব্যের যোগান সাধারণত উৎপাদনের উপর নির্ভরশীল থাক। দ্রব্যের যোগান দাম ও সময় দ্বারা প্রভাবিত হয়। অর্থাৎ দাম ও সময়ের কারণে দ্রব্যের যোগান অনেকটা কম বা বেশি হতে পারে। তাই চাহিদা ও যোগানের ক্ষেত্রে অন্যান্য বিষয়কে স্থির বিবেচনা করে যোগানকে শুধুমাত্র দামের সাথে একটি ক্রিয়া বিবেচনা করা হয়। আশা করি আপনি যোগান বলতে কি বোঝায় তা সম্পর্কে ধারণা অর্জন করতে পেরেছেন এবং যোগান সম্পর্কে আপনি একটি পরিষ্কার ধারণা লাভ করতে পেরেছেন।

এবার চলুন মজুদ সম্পর্কে ধারণা নেওয়া যাক। মজুদ বলতে কি বোঝায় সে সম্পর্কে জানতে হলে আপনাদের নিচের অংশটুকু পড়তে হবে।

মজুদ (Stock):
মজুদ হলো বিক্রয় যোগ্য দ্রব্যের মোট পরিমাণ। অর্থাৎ কোনো প্রতিষ্ঠানে বাণিজ্যিকভাবে বিক্রয়ের জন্য উৎপাদিত বা ক্রয়-কৃত দ্রব্যের যে অংশ অবেচা থেকে যায় এবং যা পূর্ণ বিক্রয় যোগ্য তাকে সাধারণত মজুদ বলা হয়। মজুদ পণ্যটি অবশ্যই একটি দৃশ্যমান এবং স্পর্শযোগ্য সম্পদ হতে হবে। মজুদ একটি পূর্ণাঙ্গ এবং বৃহত্তর ধারণা। অর্থাৎ কোনো কিছু যদি থেকে যায় এবং তা বিক্রয় যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও বিক্রি হয়নি এরকম বিষয় হয়, তাহলে সেটাই মূলত মজুদ। বিক্রয় যোগ্য একটি দ্রব্যের সমগ্র পরিমাণকে মজুদ বলে।

যোগান ও মজুদের মধ্যে পার্থক্য:

মজুদ এবং যোগান এ দুটি শব্দ সমার্থক হলেও এই দুটি শব্দ অর্থনীতিতে ভিন্ন অর্থে ব্যবহার করা হয়। নিম্নে যোগান ও মজুদের মধ্যে পার্থক্য উপস্থাপন করা হলো:
১. কোনো দ্রব্যের বিকৃতজ্ঞ একটি নির্দিষ্ট পরিমাণকে যোগান বলা হয়। অন্যদিকে মজুদ একটি পূর্ণাঙ্গ ধারণা। বিক্রয় যোগ্য একটি দ্রব্যের সমগ্র পরিমাণকে মজুদ বলা হয়।
২. সাধারণভাবে বলা যায় যে মজুদ একটি বৃহত্তর ধারণা। কিন্তু সেই তুলনায় যোগান একটি ক্ষুদ্রতর ধারণা।
৩. মজুদ থেকে একটি নির্দিষ্ট দামে মজুদের সৃষ্টি হয়। তাই মজুদ একটি সম্পূর্ণ ধারণা। অন্যদিকে মজুদের একটি অংশ হচ্ছে যোগান। তাই যোগান একটি আংশিক ধারণা।
৪. যোগান একটি নির্দিষ্ট দামের সাথে সম্পর্কিত। কিন্তু মজুদের সাথে দামের কোনো সম্পর্ক নেই।
৫. বাজারে কোনো দ্রব্রের দাম বৃদ্ধি পেলে যোগান বৃদ্ধি পায়, দাম হ্রাস পেলে যোগান হ্রাস পায়। অন্যদিকে দাম বৃদ্ধি পেলে মজুদ হ্রাস পায়, দাম হ্রাস পেলে মজুদ বৃদ্ধি পায়।

Leave a Comment