Anomaly scan করতে কত টাকা লাগে

আমরা অনেকেই জানিনা Anomaly scan কি? Anomaly scan কখন করানো হয়?
Anomaly scan কেন করানো হয়? Anomaly scan করতে বাংলাদেশে কত টাকা লাগে?
এখন সকল প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আজকে আমাদের এই আলোচনা। মূলত গর্ব অবস্থায় একটি বিশেষ ধরনের পরীক্ষা কে বলা হয় Anomaly scan। একটি গর্ভাবস্থায় শেষ পর্যায়ের দিকে গর্ভের বাচ্চার অবস্থান নির্ণয়ের জন্য করা হয়। কিন্তু পরীক্ষার্থী সবার ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক নয়। কিছু ব্যতিক্রম গর্ভবতী মায়ের জন্য এই Anomaly scan করানো হয়ে থাকে।

বাংলাদেশে অ্যানোমালি স্ক্যানের আনুমানিক ব্যয় ১৫০০-৫০০০ টাকার মধ্যে হতে পারে। এই খরচের ভিন্নতা বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে, যেমন- ডাক্তারের ফি, রোগীর সামগ্রিক চিকিত্সা পরিস্থিতি, হাসপাতালের ধরণ ইত্যাদি। অ্যানোমালি স্ক্যান করা বাধ্যতামূলক নয়সাধারণত গর্ভাবস্থায় ১৮ সপ্তাহের পর থেকে ২৪ সপ্তাহের মধ্যে এটি করতে হয়। এটি সকল গর্ভবতী মাকেই করতে উপদেশ দেয়া হয়।

তবে কেউ চাইলে এ পরীক্ষা নাও করতে পারেন। এই স্ক্যান করার মূল উদ্দেশ্য হলো গর্ভস্থ শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি হচ্ছে কিনা বা কোনো শারীরিক ত্রুটি আছে কিনা তা খুঁটিয়ে দেখা। বেশ কিছু শারীরিক ত্রুটি অ্যানোমালি স্ক্যানে ধরা পড়ে যা সাধারণ আলট্রাসাউন্ডে ধরা পড়ে না। বাচ্চার লিঙ্গ বা জেন্ডার সম্পর্কেও এই স্ক্যান এর মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায়
এই স্ক্যান এর মাধ্যমে গর্ভস্থ শিশুর ব্রেইন, স্পাইনাল কর্ড, মুখের গঠন, হাড়, কিডনি এবং পেটের মধ্যকার অঙ্গ প্রত্যঙ্গের অস্বাভাবিকতা ধরা পড়ে।

এটি এমন একটি জন্মগত ত্রুটি যেখানে শিশুর ব্রেইন ও স্পাইনাল কর্ডের গঠন ঠিকমতো হয় না। এক্ষেত্রে শিশুর মস্তিষ্ক এবং মাথার খুলির একটি বড় অংশই অনুপস্থিত থাকে বা গঠনই হয় না। শিশুর মুখ এবং ঘাড়ও কিছুটা বিকৃত থাকে। এটি এমনই সিরিয়াস কন্ডিশন যার কোনো চিকিৎসা নেই এবং এ ধরনের শিশু জন্ম নিলেও বেশিক্ষণ বাঁচে না। এক্ষেত্রে ভ্রূণের স্পাইনাল কর্ডের গঠন ঠিকমতো হয় না। এটি গর্ভাবস্থার একদম প্রাথমিক পর্যায়ে ঘটে, এমনকি এ সময় গর্ভবতী নিজেও বুঝতে পারেন না যে তিনি গর্ভধারণ করেছেন।

গর্ভাবস্থার ১৮–২২তম সপ্তাহের মধ্যে একটি আলট্রাসনোগ্রাফি পরীক্ষা করতে হয়, যার নাম অ্যানোমালি স্ক্যান। এর সাহায্যে শিশুর জন্মগত ত্রুটি থাকলে তা খুঁজে বের করা যেতে পারে। ফলে অনেক ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যায়, শিশুর জন্ম-পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে আগেভাগে পরিকল্পনা করে রাখা যায়। এর পাশাপাশি শিশুর স্বাভাবিক বেড়ে ওঠা এবং শিশু ছেলে না কি মেয়ে—এই সংক্রান্ত তথ্যও জানা সম্ভব।

গর্ভাবস্থায় সাধারণত তিনবার আলট্রাসনোগ্রাফি করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। এর মধ্যে গর্ভকালীন ১৮–২২তম সপ্তাহে, অর্থাৎ দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে দ্বিতীয় আলট্রাসনোগ্রাফি স্ক্যান করানো হয়। দ্বিতীয় স্ক্যানে শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশ কেমন হচ্ছে, জন্মগত ত্রুটি আছে কি না—এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়া যায়। জন্মগত ত্রুটি দেখা যায় বলে দ্বিতীয় আলট্রাসনোগ্রাফিকে ইংরেজি নাম অনুসারে ‘অ্যানোমালি স্ক্যান’ বলা হয়। গর্ভাবস্থায় অন্তত একবার আলট্রাসনোগ্রাফি করালেও দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের এই স্ক্যানটি করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়।

সাধারণত স্ক্যানের ১ ঘন্টা আগে আধা লিটার পানি অথবা তরল খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। পরীক্ষার আগে যথেষ্ট প্রস্রাবের চাপ থাকলে তা স্ক্যানের সময়ে গর্ভের শিশুর তথ্যগুলো ভালোমতো নির্ণয় করতে সাহায্য করে।
পরীক্ষার শুরুতে আপনাকে পরীক্ষা করার বেডে শোয়ানো হবে। তারপর আপনার বুক থেকে তলপেট পর্যন্ত থাকা কাপড় সরিয়ে তলপেটের ওপর আলট্রাসাউন্ড জেল লাগানো হবে।

এরপর ‘আলট্রাসনোগ্রাফি প্রোব’ আপনার পেটের চারিদিকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে গর্ভের শিশু ও পেটের ভেতরের বিভিন্ন অঙ্গের ছবি দেখা হবে।ছবিগুলো সাথে সাথেই পাশে রাখা কম্পিউটার স্ক্রিনে দেখা যাবে এবং পরে প্রিন্ট করে কিংবা ভিডিও ফাইল হিসেবে আপনাকে দেওয়া হবে। স্ক্রিন ভালোমতো দেখার সুবিধার্থে ডাক্তার রুমের আলো কমিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারেন। এভাবে খুব সহজেই Anomaly scan করা হয়।

Anomaly scan সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য নিশ্চয়ই আপনারা জেনে ফেলেছেন। মেডিকেল সাইন্সের সম্পর্কিত এরকম আরো বিষয় সম্পর্কে জানতে চাইলে আপনারা খুব সহজে ইন্টারনেটে সার্চ করার মাধ্যমে জেনে নিতে পারবেন। ধন্যবাদ।

Leave a Comment