যেকোনো কারণে আমাদের দাঁতে ব্যথা অনুভব করলে, তৎক্ষণাৎ ডাক্তারের কাছে না যেতে পারলে । আমরা কি প্রাথমিক চিকিৎসা নিতে পারি সেটাই আজকে আপনাদের সাথে আলোচনা করব। দাঁত ব্যথার অনেক কারণ হতে পারে যেমন দাঁতের এনামেল নষ্ট হয়ে যাওয়া অথবা আঘাত লেগেও দাঁত ব্যথা হতে পারে। দাঁতের শীর্ষি রানী হচ্ছে দাঁতের জন্য মারাত্মক ভয়ংকর।
যাদের ঠান্ডা এবং গরম পানি খেলে দাঁত শির শির করে তাদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডেন্টিস্ট এর কাছে যাওয়া উচিত। কারণ দাঁতের যে কোন গুরুতর সমস্যার প্রাথমিক লক্ষণ হল দাঁত শিরশির করা। দাঁত শিরশিরানি থেকে দাঁত ক্ষয় পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। আমরা ঘরোয়া পদ্ধতিতে কিভাবে দাঁতের যত্ন নিতে পারি সেটাই আজকে আমরা আপনাদের সাথে শেয়ার করব। তাহলে চলুন আজকের এই আর্টিকেলের আলোচ্য পর্যায়ে যাওয়া যাক।
দাঁতের জন্য কিছু অতি প্রয়োজনীয় উপকরণ রয়েছে যা আমরা ঘরে পেয়ে যাই। এই উপকরণ গুলো ব্যবহারে ঘরোয়া এবং প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে আমরা আমাদের দাঁতের যত্ন নিতে পারি।
যেমন ,লবণ পানি দিয়ে কুলকুচি করা দাঁতের জন্য ভালো।
তারপর কমলা, মাল্টা ফল এবং লেবু দাঁতের জন্য উপযোগী।
পুদিনা পাতা, লবঙ্গ, তুলসী এগুলো দাঁতের সুরক্ষায় কার্যকরী।
ক্যালসিয়াম দাঁত ও মাড়ি মজবুত করে, এটা সবাই জানি। দুধ, দই, পনির, সয়াবিন, শিমের বিচি, কাঁটাযুক্ত ছোট মাছ, বিভিন্ন শাকে ক্যালসিয়াম আছে। ক্যালসিয়াম শোষণের জন্য চাই পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি। এই ভিটামিন পাওয়া যায় সূর্যের আলোতে। এ ছাড়া দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার, সামুদ্রিক মাছ, মাছের তেল ও ডিমেও আছে কিছু।
ভিটামিন সি-এর অভাবে মাড়ি থেকে রক্তপাত হতে পারে। আমলকী, পেয়ারা, লেবুজাতীয় ফল, মালটা, টমেটো, কাঁচা মরিচে আছে প্রচুর ভিটামিন সি।
যেকোনো কোমল পানীয় বা সোডাযুক্ত পানীয় দাঁতের এনামেল নষ্ট করে। এগুলো পান করার পর দাঁত ভালো করে ব্রাশ করতে হবে। এ ছাড়া আঠালো শর্করাও (যেমন চকলেট) দাঁতের জন্য খারাপ।চলুন এবার জেনে নি ই দাঁতের ব্যথা হওয়ার কারণ এবং তা থেকে মুক্তির উপায়। দাঁতের যে কোন সমস্যায় মাউথ সিভিটি খুব কার্যকরী।গরম বা ঠাণ্ডা খাবার খাওয়ার ৩০ মিনিট পর্যন্ত দাঁতের ব্যথা স্থায়ী হলে ধারণা করা যায় দাঁতের পালপ বা শ্বাস আক্রান্ত হয়েছে।এ ক্ষেত্রে স্নায়ু নষ্ট হতে ১২ ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে ১২ ঘণ্টা পর ব্যথা কমে যায়। আবার ব্যথা শুরু হলে বুঝতে হবে নষ্ট কোষ আবার সংক্রমিত হয়েছে বা পুঁজ তৈরি হয়েছে।
ঘরোয়া কিছু সাধারণ উপকরণের সাহায্যে কিভাবে আমরা দাঁতের ব্যথা থেকে মুক্তি পাবো সেটাই আজকে আপনাদের সাথে আমরা আলোচনা করব। এক গ্লাস গরম পানিতে অর্থাৎ কুসুম গরম পানিতে শুধু এক টেবিল স্পুন লবণ মিশিয়ে সেই পানি দিয়ে কুলকুচি করলেও দাঁতের ব্যথা থেকে অনেক আরাম পাওয়া যায়।
১ গ্লাস কুসুম গরম পানিতে ১ টেবিল চামুচ লবণ মিশিয়ে মুখে নিয়ে ১ মিনিট রাখুন। এভাবে দিনে ৩ বার করে গুলি করুন ব্যথা কমে যায়।
এ ছাড়াও ১ টেবিল চামুচ লবণ অল্প সরিষার তেলের সঙ্গে অথবা লেবুর রসের সঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মাড়িতে ম্যাসাজ করুন কয়েক মিনিট। তারপর কুসুম গরম পানি দিয়ে কুলি করে নিন। এভাবে ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হবে।
লবণে অ্যান্টিসেপ্টিক ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান আছে। এটি মুখের ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি ব্যাহত করে প্রদাহ কমায়।মাড়িতে লাগলে মাড়ি জ্বালা করবে। এটি দাঁতের স্নায়ু অবস করে সাময়িকভাবে ব্যথা কমায়।ব্যথাযুক্ত দাঁতে বরফ কুচি কাপড়ে পেঁচিয়ে রাখা যেতে পারে, গরম পানি দিয়ে কুলকুচি দাঁতের ফাঁকে জমে থাকা খাদ্যকণা সরিয়ে ব্যথা কমাবে।দাঁতের ব্যথার জন্য যত শিগগিরই ডেন্টিস্টের কাছে যাওয়া যায় ততই মঙ্গল।
রাতে ঘুমানোর আগে দাঁত ব্রাশ করা জরুরি। শক্ত ব্রাশ দিয়ে দাঁত মাজা, কয়লা–ছাই ব্যবহার, দু–তিন মিনিটের অধিক সময় বা বারবার দাঁত ব্রাশ, চার মাসের অধিক সময় এক ব্রাশ ব্যবহার ও একজনের ব্যবহৃত ব্রাশ অন্যজন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। মুখের জন্য উপকারী সুষম আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে।