অনার্স ভর্তি ২০২৪ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ভর্তির অনলাইন আবেদন, যোগ্যতা ও ফি

আপনারা যারা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং বিভিন্ন জায়গায় ভর্তির জন্য আবেদন করেছেন তাদের জন্য আমরা বলব যে এই আবেদনের পাশাপাশি অবশ্যই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির জন্য আবেদন করুন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আপনাদেরকে ভর্তির জন্য যে সকল শর্ত আরোপ করেছে সেই সকল শর্ত আজকের এই পোস্ট থেকে জেনে নিন।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আপনাদের জন্য ভর্তির যে সময়সীমা প্রদান করেছে তা ২০২৪ সালের ভর্তির কার্যক্রম থেকে জেনে নেওয়ার মাধ্যমে আপনারা অনলাইনে আবেদন করবেন এবং ভর্তির যেসব প্রক্রিয়া রয়েছে সেগুলো সম্পন্ন করবেন। তাহলে চলুন অনার্স ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন নিয়ম আমরা অনুসরণ করবো তা এই পোস্ট থেকে জেনে নেওয়ার চেষ্টা করি।

প্রত্যেক বছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীর উত্তীর্ণ হয়ে থাকেন। সকল শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের জন্য অনার্স কোর্সে এবং ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভর্তি হয়ে। তবে প্রত্যেক বছর যত সংখ্যক শিক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় আবেদন করে তত সংখ্যক আসন নেই। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আসন পূর্ন হয়ে যাওয়ার পর বিপরীত সংখ্যক শিক্ষার্থী অনার্স এ পড়ার জন্য বিভিন্ন কলেজগুলোতে আবেদন করে। অনার্স করার জন্য সারা দেশের সরকারি এবং বেসরকারি কলেজ গুলো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত। এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় এবং সেখানে প্রত্যেক বছর নির্দিষ্ট সংখ্যক শিক্ষার্থীদের ভর্তি সুযোগ প্রদান করা হয়।

তাই অনার্সে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে আপনারা যারা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশ সেরা কলেজগুলোতে আবেদন করতে চাচ্ছেন সেই সকল কলেজগুলোতে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে কোন ধরনের যোগ্যতা লাগবে এবং কি ধরনের শর্ত রয়েছে তা মেনে চলুন। প্রত্যেক বছরের যখন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়ে যায় তার কিছুদিন পরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভর্তির জন্য ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।

তার কিছুদিন পরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অনার্সে ভর্তি হওয়ার জন্য ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এবং এই ভর্তি বিজ্ঞপ্তি অনুসরণ করে সারা দেশের বিভিন্ন কলেজ চয়েস প্রদান করে আপনাদেরকে অনলাইন এর মাধ্যমে আবেদন করতে হয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদন করার ক্ষেত্রে যে সকল প্রক্রিয়া বা ধাপ রয়েছে সেগুলো আজকে এই পোস্টের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। আপনারা যখন অনলাইনে প্রবেশ করে আবেদন করার প্রক্রিয়া দেখে নিবেন তখন এটা আবেদন করতে পারবেন এবং আবেদন সম্পন্ন হলে পরবর্তী ধাপগুলো কি করতে হবে তা জানতে পারবেন।

জাতীয় বিজ্ঞপ্তিতে কিভাবে কোথায় গিয়ে আবেদন করতে হবে তা উল্লেখ থাকে। তারপরে অনলাইনে আবেদন করার জন্য আপনাদেরকে যে ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হয় সেটি হল http://app1.nu.edu.bd/ । এখানে প্রবেশ করে আপনারা অনার্সে ভর্তি হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন এবং আবেদন করার প্রক্রিয়ায় যে সকল তথ্য আপনাদের থেকে যাওয়া বিষয়গুলো প্রদান করবেন। প্রথমত অনলাইনে আবেদন করার সময় আপনার ব্যক্তিগত তথ্য এবং শিক্ষাগত জীবনের যে সকল তথ্য যা হবে সেগুলো সঠিকভাবে প্রদান করবেন। বিশেষ করে এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার রোল নাম্বার এবং রেজিস্ট্রেশন নাম্বার সহ পরীক্ষায় উত্তীর্ণের সময় এবং পরীক্ষার রেজাল্ট উল্লেখ করতে হবে।

তাছাড়া আপনার অভিভাবকের তথ্য এবং অভিভাবকের বার্ষিক আয় কত টাকা সে সকল তথ্য উল্লেখ করার পাশাপাশি কোন কলেজে এডমিশন নিতে চান তা নির্বাচন করবেন। কলেজ চয়েজ প্রদান করার পাশাপাশি আপনারা কোন বিষয়ে অধ্যয়ন করতে চান সেগুলো ঠিকঠাক মতো প্রদান করবেন। অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া শেষ করে আপনারা যে কলেজে ভর্তি হতে চান সেই কলেজে আপনাদের আবেদনপত্র জমা দিতে হবে।

সেই কলেজ আপনাদের আবেদন পত্র গ্রহণ করবে এবং কিছুদিনের ভিতরেই আপনাদের আবেদনের ভিত্তিতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন কিনা তা নিশ্চিত করে জানিয়ে দেওয়া হবে। তারপরে কলেজের ভর্তির প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট ফি প্রদান করার ভিত্তিতে আপনাদেরকে ভর্তির যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করে ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে হবে।

তবে আপনার ফলাফল অনুসরণ করে আপনি যদি ভর্তির জন্য মনোনীত না হয়ে থাকেন তাহলে দ্বিতীয় মেধা তালিকার জন্য অপেক্ষা করবেন। দ্বিতীয় মেধা তালিকাতে ও আপনার যদি ভর্তির সুযোগ না প্রদান করা হয় তাহলে রিলিজ স্লিপ এর মাধ্যমে অন্য কলেজে আসন ফাকা থাকা সাপেক্ষে ভর্তির জন্য দ্বিতীয়বার আবেদন করতে হবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কার্যক্রমে ভর্তি হওয়ার জন্য আপনাকে কলেজ চয়েজের ব্যাপারে আপনার ফলাফলের উপরে নির্ভর করতে হবে।

সাধারণত প্রথম সারির কলেজে এসএসসি এবং এইচএসসি মিলিয়ে জিপিএ ১০ থাকলে অনেক সময় চান্স হয় না। তবে আপনারা চেষ্টা করে দেখতে পারেন এবং সর্বোচ্চ ফলাফলের ভিত্তিতে আপনাদেরকে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হবে বলে কম জিপিএ নিয়ে প্রথম সারির কলেজ প্রদান করার দরকার নেই।

অনার্স ভর্তির অনলাইন আবেদন

অনার্স ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন করার যে সকল নিয়ম রয়েছে তা যদি আপনাদেরকে জানিয়ে দিতে পারি তাহলে সেই আবেদন করাটা আপনার জন্য অনেক সহজ হবে। সাধারণত আপনি যদি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হতে চান তাহলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ভিজিট করে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী নির্ধারিত তারিখের মধ্যে আবেদন করতে হবে। আর যদি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি হতে চান তাহলে সেখানকারও নিয়ম অনুসরণ করে তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ভিজিট করে আবেদন করতে হবে। তাই অনার্সে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে আবেদনের সময় কি কি তথ্য লাগে এবং কিভাবে আবেদন করতে হয় সেটা যদি আপনাদেরকে জানিয়ে দিতে পারি তাহলে সেটা আপনাদের অনেক উপকারে আসবে এবং সেই অনুযায়ী আবেদন সম্পন্ন করতে পারবেন।

অনার্স কোর্স হলো একটি চার বছর মেয়াদী কোর্স এবং এখানে নির্দিষ্ট বিষয়ে চার বছর মেয়াদে একটি কোর্স করা হয়ে থাকে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং অভিজ্ঞ সম্পন্ন শিক্ষক এখানে ক্লাস নিয়ে শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট টপিক সম্পর্কে বুঝিয়ে দিয়ে থাকেন। তাই আপনি যখন অনার্স কোর্স করবেন তখন অবশ্যই নির্দিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট ভিজিট করে সেখানে আপনার এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার বিস্তারিত তথ্য প্রদান করতে হবে।সাধারণত আপনি যখন এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার তথ্য প্রদান করবেন তখন সেই তথ্যের ভিত্তিতে আপনাদের নাম এবং অন্যান্য বিষয়গুলো সেখানে আপলোড হয়ে যাবে। অনলাইনের মাধ্যমে যে সকল তথ্য যা হবে সেই সকল তথ্যগুলো সঠিকভাবে প্রদান করার পরে আপনারা পেমেন্ট অপশনে যাবেন।

পেমেন্ট অপশনে গিয়ে কিভাবে মোবাইল ব্যাংকিং এ কত টাকা পেমেন্ট করতে হবে তা যখন জানতে পারবেন তখন সে অনুযায়ী পেমেন্ট সম্পন্ন করলেই আপনাদের প্রাথমিক আবেদন শেষ হয়ে যাবে। তবে গুরুত্বপূর্ণ কথা হল যে আপনি যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে চান সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের রুলস মেনে আপনাকে ভর্তির যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় হলে শুধু রেজাল্টের ভিত্তিতে আপনাদের এই ভর্তি সুযোগ প্রদান করা হয়ে গেল বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে আপনার আসন নিশ্চিত করতে হবে। যদি ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে তাহলে মনে রাখতে হবে নির্ধারিত দিনের ভেতরে আপনাদেরকে এডমিট কার্ড উত্তোলন করে নির্দিষ্ট পরীক্ষার কেন্দ্রে অংশগ্রহণ করতে হবে এবং পরীক্ষার মাধ্যমে আপনার আসন নিশ্চিত করতে হবে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে আবেদনের যোগ্যতা

যারা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কলেজগুলোতে ভর্তি হবেন তাদেরকে অবশ্যই ভালো জিপিএ থাকতে হবে। তবে এখানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আগে এসএসসি এবং এইচএসসি মিলিয়ে সর্বমোট জিপিএ 4 থাকলে আবেদন করার সুযোগ প্রদান করেছে। কিন্তু বর্তমান সময়ে কম বেশি প্রত্যেকটি শিক্ষার্থীর ভালো ফলাফল অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে বলে এবং ভালো ফলাফল অর্জন করছে বলে আবেদনের সময় যোগ্যতার বিষয়ের দিক থেকে মোট জিপিএ সাত ধরা হয়েছে। অর্থাৎ আপনি এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষায় আলাদা আলাদা ভাবে 3.5 জিপিএ পেলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির জন্য আবেদন ফি

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্সে ভর্তির জন্য আবেদন করার ক্ষেত্রে আবেদন ফি খুবই সামান্য পরিমাণে ধরা হয়েছে। এক্ষেত্রে আবেদন ফি হয়তো ৩০০ টাকা ধার্য করা হয়েছে এবং কলেজ ভিত্তিক আপনাদের থেকে হয়তো আরো কিছু বেশি পরিমাণ টাকা গ্রহণ করা হতে পারে। এছাড়া অনলাইন চার্জ প্রদান করতে হবে। মোটামুটি ভাবে ৫০০ টাকার ভেতরে আপনাদের ভর্তির জন্য অনলাইন আবেদন হয়ে যাবে।

যখন ভর্তির জন্য চূড়ান্তভাবে মনোনীত হবেন তখন আপনাদেরকে কলেজ ভিত্তিক আলাদা আলাদা ভর্তি ফি দিয়ে ভর্তি হতে হবে। এই ভর্তি ফি ৬০০০ টাকা থেকে শুরু করে কলেজ ভিত্তিক আলাদা হবে। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের ওয়েবসাইটের এই তথ্যবহুল পোস্ট করার জন্য ধন্যবাদ এবং কেউ কিছু জানতে চাইলে কমেন্ট করতে পারেন।

Leave a Comment