অনার্স সার্টিফিকেট তোলার আবেদন – জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল সনদ উত্তোলনের জন্য আবেদন করার নিয়ম

আপনারা যারা অনার্স পাশ করেছেন অথবা অনার্সে পড়াশোনা করছেন তাদের সকলের জন্যই আজকের পোস্টটি ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। অনার্স পাশ করার পরে আপনার জন্য সঠিক সময় সার্টিফিকেট হাতে পাওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক সময়ে সার্টিফিকেট হাতে না পেলে বিভিন্ন চাকরির জন্য আবেদন করতে নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। তাই সঠিক সময়ে কিভাবে আপনার সার্টিফিকেট সংগ্রহ করবেন তার নিয়ম জেনে নেওয়া দরকার। আমাদের আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন কিভাবে আপনার অনার্সের মূল সনদ তুলতে পারবেন।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিভিন্ন কলেজে প্রায় কয়েক লক্ষ শিক্ষার্থী অনার্সে অধ্যয়নরত রয়েছে। প্রতিবছর কয়েক লাখ শিক্ষার্থী কৃতিত্বের সাথে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃতকার্য হচ্ছে। পাস করার পরে সহজ উপায়ে মূল সনদ হাতে পাওয়ার জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন গ্রহণ করে থাকে। অনার্স পাশের পরপর আপনারা অনলাইনের মাধ্যমে মূল সনদের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আমাদের আজকের পোস্টে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব কিভাবে মূল সনদ পাওয়ার জন্য আবেদন করবেন এবং কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন হবে।

আপনি যে কষ্ট করে পড়াশোনা করছেন এবং পরীক্ষার মাধ্যমে আপনাকে মূল্যায়ন করা হয়েছে ও তাতে আপনি সাফল্যের সাথে কৃতকার্য হচ্ছেন তার সম্পূর্ণ প্রমাণ হচ্ছে আপনার মূল সনদপত্র। এই সনদপত্রের মাধ্যমেই আপনি নিজেকে একজন স্নাতক হিসেবে দাবি করতে পারবেন। মূল সনদ ছাড়া কোন চাকরির ইন্টারভিউয়ে অংশগ্রহণ করা সম্ভব নয়। সুতরাং বুঝতেই পারছেন এই সার্টিফিকেটটি আপনার জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

চলুন জেনে নিই কিভাবে অনার্সের মূল সনদ উত্তোলন করতে হয়। অনার্সের মূল সনদ উত্তোলনের জন্য যেসব কাগজপত্র লাগবে তা নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো।

অনার্সের মূল সনদ উত্তোলনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র গুলো হলো আপনার সকল পরীক্ষার ডকুমেন্ট। প্রতিটি পরীক্ষার জন্য আমরা আলাদা আলাদা প্রবেশপত্র পেয়ে থাকি। অর্থাৎ অনার্স প্রথম বর্ষ থেকে শুরু করে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত প্রতিটি চূড়ান্ত পরীক্ষায় আমরা যে প্রবেশপত্র ব্যবহার করেছি তা প্রয়োজন পড়বে। প্রবেশপত্রের সাথে রেজিস্ট্রেশন কার্ড দরকার হবে। অনার্স প্রথম বর্ষ থেকে শুরু করে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত প্রতিটি বছরের চূড়ান্ত পরীক্ষার প্রবেশপত্র রেজিস্ট্রেশন কার্ড সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং, অনার্সের মূল সনদপত্র তোলার সময় অবশ্যই এই দুইটি কাগজ নিজের কাছে রাখার চেষ্টা করবেন।

বর্তমান সময়ে একজন মানুষের সবচেয়ে বড় পরিচয় পত্র হলো জাতীয় পরিচয় পত্র। বাংলাদেশের যে কোন নাগরিক সুবিধা ভোগ করার জন্য জাতীয় পরিচয় পত্র প্রয়োজন পড়ে। জাতীয় পরিচয় পত্র ছাড়া আপনি কখনোই নিজেকে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে দাবী করতে পারেন না। যেকোনো সরকারি অথবা বেসরকারি অফিসিয়াল কাজে জাতীয় পরিচয় পত্র ব্যবহার করতে হয়। জাতীয় পরিচয়পত্রে যে নম্বরটি রয়েছে সেই নম্বরের মাধ্যমে প্রতিটি প্রতিষ্ঠান আপনাকে শনাক্ত করে থাকে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ও এর ব্যতিক্রম নয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মূল সনদ প্রদানের আগে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র যাচাই করবে। তাই অনার্সের মূল সনদ উত্তোলনের সময় জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি দরকার হবে।

আপনার জীবনের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রে সকল তথ্য সেম হওয়া জরুরী। যেমন জাতীয় পরিচয় পত্র ও আপনার অনার্সের মূল সনদপত্রে সকল তথ্য একই হতে হবে। এজন্যই যেকোনো পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশনের পূর্বে জন্ম সনদ অথবা জাতীয় পরিচয় পত্র দেখে রেজিস্ট্রেশন ফরম পূরণ করা হয়। একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে নিশ্চয়ই এই বিষয়টি আপনি মাথায় রাখবেন এবং নিজের জন্ম সনদ অথবা যাকে পরিচয় পত্রের তথ্য অনুযায়ী যে কোন রেজিস্ট্রেশন করার চেষ্টা করবেন।

এরপর আপনাকে যে কাজটি করতে হবে তা হলো অনলাইন আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে আপনি মূল সনদ তোলার একটি অনলাইন ফর্ম পেয়ে যাবেন। সেই ফর্মের চাওয়া সকল তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করলে আপনার আবেদন সম্পন্ন হবে। তবে এক্ষেত্রে আপনার কলেজের অধ্যক্ষের স্বাক্ষর প্রয়োজন পড়বে।

উপরে উল্লেখিত কাগজপত্র গুলো সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আবেদন করে ফেলুন। আপনার অনেকেই হয়তো অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করার সঠিক পদ্ধতি জানেন না। এখন আমরা অনলাইনে আবেদন করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

অনার্সের মূল সনদ তোলার জন্য অনলাইনে আবেদন করার পর আপনাকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে হবে। অনার্সের মূল সনদ তোলার জন্য ব্যাংকের মাধ্যমে পেমেন্ট করতে হবে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে সকল গুরুত্বপূর্ণ বিজ্ঞপ্তি গুলো প্রতিবছর প্রকাশ করা হয়। এসব বিজ্ঞপ্তিতে সকল আবেদনের নিয়ম ও তারিখ সম্বন্ধে বিস্তারিত দেওয়া থাকে। অনার্স মূল সনদ তোলার বিজ্ঞপ্তি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত হওয়ার পর আমরা আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম। আশা করি সেই বিজ্ঞপ্তিটি আপনারা দেখেছেন এবং মনোযোগ দিয়ে পড়েছেন। সেই বিজ্ঞপ্তিতে অনার্সের মূল সনদ তোলার প্রতিটি নিয়ম স্টেপ বাই স্টেপ দেওয়া ছিল। যেহেতু আপনার অনেকেই বিষয়টি বুঝতে পারেননি তাই আমরা আমাদের পোষ্টের মাধ্যমে আবারও বিস্তারিত আলোচনা করলাম। এ নিয়ে যদি আপনাদের মনে আরো প্রশ্ন থেকে থাকে তবে অবশ্যই আমাদের সাথে শেয়ার করে ফেলবেন।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ সংশোধন

অনেক সময় আমাদের অজান্তে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রে বিভিন্ন ভুল হয়ে যায়। অনেক শিক্ষার্থীরা তাদের সার্টিফিকেটে নামের অথবা বয়সের ভুল করে থাকে। এ ধরনের ভুল হলে তারা ভীষণ দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। অনেকে জানেন না এই ভুলগুলো কিভাবে সংশোধন করতে হয়। ভুলগুলো যদি মাধ্যমিকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার আগে থেকেই হয়ে থাকে তবে অবশ্যই শিক্ষা বোর্ডের মাধ্যমে মাধ্যমিকে উচ্চমাধ্যমিকের সনদ সংশোধন করে নিতে হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের সনদ সংশোধন করার পর আপনাকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্সের সনদ সংশোধনের জন্য আবেদন করতে হবে।

যেকোনো সনদ সংশোধনের পূর্বে প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ডের সংশোধন করা জরুরী। এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পরিমাণ পেমেন্ট করে সংশোধনের জন্য আবেদন করতে হবে। সনদ সংশোধন সংক্রান্ত সকল তথ্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় তাদের ওয়েবসাইটের বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করেছিল। যদি আপনার কোন সনদ হারিয়ে যায় অথবা প্রবেশপত্র হারিয়ে যায় তবে সেক্ষেত্রেও সুন্দর সমাধান রয়েছে।

প্রবেশপত্র সংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করে ব্যাংকের মাধ্যমে পেমেন্ট সম্পন্ন করতে হবে। এরপর আরো কয়েকটি ধাপে আবেদন সম্পন্ন করতে হবে। দিনকল প্রবেশপত্র অর্থাৎ ডুবলিকেট এডমিট কার্ড পাবার জন্য নিকটস্থ থানায় জিডি করতে হবে এবং সেই জিডির নম্বর সহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগাযোগ করতে হবে।

আপনারা অনেকেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্সের সাময়িক সনদপত্র অর্থাৎ প্রভিশনাল সার্টিফিকেট উত্তোলন করতে চান। সাময়িক সনকপত্র বা প্রভিশনাল সার্টিফিকেট উত্তোলন করার জন্য অধ্যক্ষের সুপারিশসহ আবেদন করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ডের সত্যায়িত কপি এবং নম্বরপত্রের সাপ্তাহিক কপি প্রয়োজন হবে। সোনালী সেবার মাধ্যমে ৩০০ টাকা পেমেন্ট করে আবেদন সম্পন্ন করতে হবে।

আপনারা নিশ্চয়ই অনার্স মূল সনদ তোলার প্রতিটি নিয়ম সঠিকভাবে জেনে নিতে পেরেছেন। বর্তমান সময়ের প্রতিটি সেবা অনলাইনের মাধ্যমে হওয়ায় আপনাদের কাজ অনেক সহজ পড়েছে। পূর্বে এই সকল কাজগুলো অফলাইনের মাধ্যমে করতে হতো এবং কাগজপত্রের নানা ঝামেলা পোহাতে হতো। আমাদের বিশ্বাস আগামী দিনগুলোতে আরো নতুন নতুন প্রযুক্তিযুক্ত হবে এবং এ ধরনের অফিসিয়াল কাজগুলো খুব সহজেই করা যাবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো তথ্য যেকোনো সময় পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।

NU মূল সার্টিফিকেট উত্তোলন অনলাইনে আবেদন পদ্ধতি 2023

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আপনারা যদি মূল সার্টিফিকেট উত্তোলন করতে চান তাহলে অনলাইনে আবেদন কিভাবে করবেন সে বিষয়ে সঠিক তথ্য আমরা আজকে আপনাদেরকে প্রদান করব। সাধারণত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আপনারা বিভিন্ন কোর্স করেছেন এবং বিভিন্ন ডিগ্রী সম্পন্ন করেছেন তাদেরকে এই মূল সার্টিফিকেট প্রদান করতে কিছুটা দেরি হয়ে যায়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল সার্টিফিকেট উত্তোলন করার ক্ষেত্রে বর্তমান সময়ে যে নিয়ম চালু করা হয়েছে তা অবশ্যই আপনারা অনুসরণ করবেন। এই নিয়ম অনুসরণ করতে পারলে আপনারা খুব সহজেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে সার্টিফিকেট নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হাতে পেয়ে যাবেন এবং এক্ষেত্রে অফিশিয়াল যে ফিস নির্ধারণ করা হয়েছে তা প্রদান করার ভিত্তিতেই আপনারা তা সংগ্রহ করতে পারবেন বলে মনে করি।

২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মূল সার্টিফিকেট উত্তোলন করার নিয়ম সম্বলিত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় যেখানে আমরা অনেক তথ্য জানতে পারি। সরাসরি আপনি উপস্থিত থেকে এই সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে না পারলেও অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করে কলেজে বিভাগীয় প্রধানের থেকে স্বাক্ষর গ্রহণ করার মাধ্যমে নির্দিষ্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ পাঠানোর মাধ্যমে এটা সংগ্রহ করা যাবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল সার্টিফিকেট উত্তোলন করার ক্ষেত্রে আপনারা অবশ্যই সঠিক নিয়ম অনুসরণ করবেন এবং এই জন্য আপনাদের উদ্দেশ্যে আমাদের ওয়েবসাইটে মূল সার্টিফিকেট উত্তোলন করার নিয়ম নিয়ে যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে সেটা দিয়ে দেওয়া হলো। এতে করে আপনি সঠিক নিয়ম জেনে নিয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রভিশনাল সার্টিফিকেটের পাশাপাশি মূল সার্টিফিকেট উত্তোলন করতে পারবেন।

Leave a Comment