কিভাবে বুঝব হারজোড়া লেগেছে

হাড় ভেঙে গেলে সেখানে প্লাস্টার দিয়ে ব্যান্ডেজ করে দেওয়া হয়। এবং সেটা নড়াচড়া করা যাতে না হয় সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে বলা হয়। হাড় ভেঙে যাওয়ার পর একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সেই জায়গায় প্লাস্টার ব্যান্ডেজ করে থাকতে হয়। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সে প্লাস্টার খুলতে বলা হয়। কিন্তু অনেক সময় ডাক্তারের দেওয়া ডেটের আগেই ভাঙ্গা হার ঠিক হয়ে যায়। আবার অনেক ক্ষেত্রে ডাক্তার যেই সময়টা দিয়ে থাকে সেই সময়ে কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রে হাড় জোড়া লাগে না। তখন আরো বেশি সময় ধরে প্লাস্টার করে থাকতে হয়।

অনেকে বুঝতে পারে না তাদের ক্ষতস্থানটি ঠিক হয়েছে কিনা এবং কখন সেই প্লাস্টারটি খুলে ফেলতে হয় সেটা অনেকেই বুঝতে পারে না। আজকে আমাদের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমরা আপনাদের জানাবো যে ভাঙ্গা হারটি যদি ঠিক হয়ে যায় তাহলে আপনি কিভাবে বুঝতে পারবেন। আপনার প্লাস্টারকৃত ভাঙ্গা হাত অথবা পা যদি তাড়াতাড়ি ঠিক হয়ে যায় তাহলে আপনি সেই অঙ্গটি নড়াচড়া করতে পারবেন আপনার ব্যথা অনুভব হবে না। রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক হয়ে যাবে এবং পেশীগুলো সংকুচিত হবে না‌। যখন আপনার ভাঙ্গা হাড় সম্পূর্ন ভাবে ঠিক হয়ে যাবে তখন আর আপনার ব্যথা অনুভব হবে না। আপনি খুব সহজেই আপনার ভাঙ্গা হাত অথবা পা অথবা শরীরের যে কোন অঙ্গ নড়াচড়া করতে পারবেন।

হাড়ভাঙ্গা প্লাস্টারের কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ দিন পর ঠিক হয়ে যায়। কারো কারো ক্ষেত্রে একমাস সময়ও লাগতে পারে। দুটো আলাদা হয়ে যাওয়া হাড়ের টুকরোকে এক রেখায় নিয়ে আসা, প্লাস্টার, প্লেট, স্ক্রু বা রডের সাহায্যে। বাকি কাজটা নিজে থেকেই সম্পন্ন হবে। হাড় জোড়া লাগার পরে ধীরে ধীরে থেরাপির মাধ্যমে নিকটবর্তী জয়েন্ট এবং পেশিগুলোর স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

হাড় ভেঙে গেলে কি খাবার খাওয়া প্রয়োজন সেটা আমাদের জানতে হবে। হাড় ভেঙে যাওয়ার পর কিন্তু আমাদের খাওয়া-দাওয়ার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। আমি জাতীয় খাদ্য বেশি করে খেতে হবে। ডিম -দুধ- মাংস আমি সেই প্রধান প্রধান উৎসগুলো বেশি করে খেতে হবে তাহলে হাড়ভাঙ্গা থেকে তাড়াতাড়ি রিকভার করা যাবে।
ক্যালসিয়াম হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী বলে মনে করা হয়। বাদামে ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি ফসফরাস এবং ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে। ম্যাগনেসিয়াম শরীরকে ক্যালসিয়াম শোষণ করতে সাহায্য করে। কলা- কলাকে ম্যাগনেসিয়ামের সেরা উৎস হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

আঘাত লেগে বিভিন্ন ধরনের অ্যাক্সিডেন্ট হতে পারে। কিন্তু আঘাত লাগার ব্যথা আর হাড় ভাঙ্গার ব্যথা কিন্তু আলাদা। হাড় ভেঙ্গে গেলে প্রচন্ড ব্যথা হবে। এবং যেই শরীরের অঙ্গে হাড় ভেঙে যাবে সেই শরীর আস্তে আস্তে অবশ এবং নিস্তেজ হয়ে পড়বে। তখন আমাদের তৎক্ষণা ৎ ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। এক্সরে পরীক্ষা করার মাধ্যমে আর কতটা ভেঙে গেছে সেটা নির্ণয় করা হবে।

হাড় ভেঙে যাওয়ার পর ডাক্তার চিকিৎসা দেওয়ার পর যেগুলো আমাদের করণীয় সেগুলো এবার জেনে নেব।
হাড় ভাঙলে শরীরের আঘাতপ্রাপ্ত স্থানটি নিশ্চল রাখতে হবে, নড়াচড়া করা যাবে না।খেয়াল রাখতে হবে যেন রক্ত সঞ্চালন বন্ধ না হয়ে যায়‌।রোগীকে আরামদায়ক অবস্থায় রাখতে হবে।সম্ভব হলে ভাঙা জায়গায় বরফ দেওয়া যেতে পারে।

হাড়ের মধ্যে ক্যালসিয়াম বা ফসফেটের পরিমাণ কমে গেলে হাড় ভাঙতে পারে। অনেক সময় সামান্য আঘাতেও কিন্তু হাড় ভেঙে যেতে পারে। সবার শারীরিক অবস্থা একরকম থাকে না এবং সবার শারীরিক দৃঢ় তাও এক হয় না। তাই কারো কারো ক্ষেত্রে সামান্য আঘাতেও কারো কারো ক্ষেত্রে সামান্য আঘাতেও হাড় ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।

প্লাস্টার খোলার পর প্রথমত দেখতে হবে ভাঙ্গা হাড় ঠিকমতো জোড়া লাগছে কি না। জোড়া না লাগলে সংশ্লিষ্ট ডাক্তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।জোড়া লাগলে দেখতে হবে কোনো মাংসপেশি শুকিয়েছে কি না। শুকিয়ে গেলে ওই মাংসপেশির জন্য নির্ধারিত ব্যায়াম করতে হবে।কোনো জোড়া শক্ত হলে তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যায়াম ও ফিজিক্যাল থেরাপি গ্রহণ করতে হবে। এ জন্য একজন ফিজিক্যাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। নতুবা রোগী পঙ্গু হতে পারে।

Leave a Comment