অশ্বগন্ধা কিভাবে খাবেন

অশ্বগন্ধা একটি ভেষজ উদ্ভিদ। এই উদ্ভিদ থেকে অশ্বগন্ধার ট্যাবলেট বাজারে বিক্রি করা হয়। কিন্তু অশ্বগন্ধা উদ্ভিদ সরাসরি প্রাকৃতিক উপায় গ্রহণ করলে বেশি ভালো হয়। অনেকেই অশ্বগন্ধা উদ্ভিদ চিনিনা। এর ছবি আপনাদের দেখাবো। অশ্বগন্ধা খাওয়ার উপকারিতা এবং অশ্বগন্ধায় কিভাবে খেতে হয় সব কিছু জানতে পারবেন আপনারা আমাদের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে।

বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করে শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে অশ্বগন্ধা। নিয়মিত অশ্বগন্ধা সেবন করা উপকার। স্বাস্থ্যের পক্ষে এটা খুবই ভালো। ডায়াবেটিস রোগীরা নিয়মিত সেবন করলে সুস্থ থাকে। আজকাল প্রায়শই নানান ধরণের শারীরিক সমস্যায় আমরা ব্যবহার করে থাকা অশ্বগন্ধা। বাজারে আমরা অশ্বগন্ধাকে সাধারণ ট্যাবলেট, পাউডার কিংবা মূল হিসেবে কিনে ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু কিভাবে খাবেন চলুন জেনে নেয়া যাক ।

আপনি যদি অশ্বগন্ধা ট্যাবলেট খেতে চান তাহলে, সেক্ষেত্রে আপনাকে প্রতি রাতে একটি করে ট্যাবলেট খেতে হবে। এতে আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত সমস্যায় উপকার পাবেন।আপনি যদি অশ্বগন্ধা পাউডার হিসেবে খেতে চান তাহলে, প্রতি রাতে এক ক্লাস গরম দুধের সাথে আপনি তিন থেকে ৪ চামচ অশ্বগন্ধা পাউডার মিশিয়ে ভালো করে নেড়ে খাবেন। আপনি চাইলে এই মিশ্রণটির সাথে চিনি কিংবা মধু মিশিয়েও খেয়ে নিতে পারেন। এভাবে আপনি আপনার বিদ্যমান সমস্যার সমাধান পাবেন।

এছাড়াও, আপনি যদি অশ্বগন্ধাকে মূল খেতে চান সেক্ষেত্রে মূলত ভালোভাবে পরিষ্কার করে তা সিদ্ধ করে নিতে হবে। সিদ্ধ করা পানি আপনাকে ফুটানো হলে ছেঁকে নিতে হবে। পানি ছেকে নিলে আপনি সেই পানিটুকু খেয়ে নিবেন তাহলে আপনি আপনার সমস্যাটির খুব দ্রুত আকারে সমাধান পেয়ে যাবেন। ত্বকের জন্য উপকারী: অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের সমৃদ্ধ উৎস হওয়ার দরুণ অশ্বগন্ধা একটি প্রকৃত বার্ধক্য প্রতিরোধী ভেষজ। বয়ঃবৃদ্ধির প্রাথমিক উপসর্গ রোধ করে এবং শুষ্ক ত্বক এবং কেরাটোসিস-এর বিরুদ্ধে শরীর রক্ষা করে। চমৎকার কেশ টনিক: অশ্বগন্ধা চুলে পুষ্টি জোগায়, যা চুল পড়া কমতে সাহায্য করে এবং চুল দীর্ঘ এবং উজ্জ্বল করে।

আয়ুর্বেদে অশ্বগন্ধাকে একটি শক্তিশালী ভেষজ হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে। আয়ুর্বেদে ব্রহ্মাস্ত্র হয়ে উঠেছে এই অশ্বগন্ধা। বাংলার এই নিজস্ব ভেষজ আমেরিকা, ব্রিটেন, দক্ষিণ আফ্রিকা সহ একাধিক দেশে এর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে। একাধিক সংস্থা এই বাংলার অশ্বগন্ধাকে কাজে লাগিয়ে একাধিক ঔষধ তৈরি করেছে। বলা হয় যে এটি কেবল ব্যথা এবং প্রদাহ কমায় না, তবে অনিদ্রার চিকিৎসা এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যকে বাড়িয়ে তুলতেও সহায়তা করতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বাতের ব্যথা, অনিদ্রা বা বার্ধক্যজনিত সমস্যা নিরাময়ে অশ্বগন্ধার বিকল্প নেই। এমনকি যৌবন ধরে রাখতে হলে অশ্বগন্ধার উপকারিতা অনস্বীকার্য। ত্বকের সমস্যাতেও দারুণ উপকারী। করোনাকালে মানুষ নির্ভর করতে শুরু করেছে ভেষজ গুণসমৃদ্ধ অশ্বগন্ধার উপর। তাই তো শুধু দেশেও নয় বিদেশেও রমরমা অশ্বগন্ধার বাজার। কী কী উপকারে কাজে লাগে দেখে নিন

আমরা আগেই জেনেছি ক্লান্তি দূর করে স্নায়ুকে আরাম প্রদান করতে অশ্বগন্ধা খুবই কার্যকারী একটি ঔষধি ভেষজ। এর ফলে ঘুম খুব ভাল হয়। বিভিন্ন গবেষণার থেকে জানা যায় যে, অশ্বগন্ধা ব্যবহার করলে মনোযোগ বৃদ্ধি পায়।
অশ্বগন্ধায় অ্যানজাইলটিক উপাদান উপস্থিত থাকে বলে এটি মানসিক চাপকে কমিয়ে ফেলতে সাহায্য করে।অর্থাৎ এটি স্নায়ুতন্ত্রের ওপর কাজ করতে সক্ষম।

আপনি যদি খুব ভয় পেয়ে যান কোনো কারণে তাহলে প্যানিক অ্যাট্যাক হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। তাই স্নায়ুর ওপর চাপ পড়ে, এই সমস্যা এড়াতে অশ্বগন্ধা সাহায্য করে।আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে বলা হয়, অশ্বগন্ধা ভেষজ মানব শরীরের খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে পেশির শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।প্রাচীনকাল হতে অশ্বগন্ধা একটি আফ্রোডাইজিয়াক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

কিংবদন্তি শাস্ত্র কাম সূত্রে অশ্বগন্ধাকে অত্যন্ত শক্তিশালী যৌন উত্তেজক ভেষজ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। আসলে, অশ্বগন্ধা ভেষজ আফ্রোডাইজিয়াক পণ্যগুলির মধ্যে একটি অনন্য। অশ্বগন্ধা কামাকাঙ্ক্ষা হ্রাস এবং ইরেকটাইল ডিসফাংশনের চিকিৎসায় কার্যকরী ভেষজ হিসেবে স্বীকৃত। পুরুষরা যখন অশ্বগন্ধা সেবন শুরু করেন, তখন তাদের দেহে নাইট্রিক অক্সাইডের উৎপাদন বেড়ে যায়।ঘরোয়া পদ্ধতিতে অশ্বগন্ধা সেবন করার শরীরের জন্য খুবই। অশ্বগন্ধ এর পাতা এবং মূল সিদ্ধ করে এর রস সেবন করা হয়। তীব্র একটি গন্ধ রয়েছে এই রসের।

Leave a Comment