ইসলামিক অনুপ্রেরণামূলক উক্তি

ইসলাম ধর্ম এমন একটা ধর্ম যেখানে আপনাকে হতাশা কি জিনিস তা বুঝতে দিবে না। আপনি যদি পরিপূর্ণভাবে ইসলাম ধর্ম মানতে পারেন এবং দৈনন্দিন জীবনে আল্লাহ পাকের স্মরণ করতে পারেন তাহলে আল্লাহ পাকের উপস্থিতি আপনার মনের ভেতরে কখনোই হতাশা নিয়ে আসবেনা। আর যদি শয়তানের প্ররচনায় আপনার ভেতরে হতাশা চলে আসে অথবা দুনিয়াবী জীবন নিয়ে আপনি যদি অধিক চিন্তিত হয়ে থাকেন তাহলে বিভিন্ন ধরনের ইসলামিক অনুপ্রেরণামূলক উক্তি পড়ে নিতে পারেন। তাই যারা জীবন নিয়ে ভাবছেন অথবা যাদের ভেতরে অনেক চিন্তা হওয়ার কারণে কোন কিছুতেই মনোযোগ দিতে পারছেন না তারা ইসলামিক অনুপ্রেরণামূলক উক্তি পড়ে দেখুন।

ইসলাম ধর্ম অত্যন্ত শান্তির ধর্ম এবং ইসলাম ধর্মে আমরা পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা সম্পর্কে ধারণা অর্জন করতে পারি। মানুষের জীবনে জয় পরাজয় থাকবে এবং হতাশা ব্যর্থতা থাকবেই। তবে আপনার জীবনে যদি হতাশায় এসে থাকে অথবা আপনি যদি কোন কারণে কোন কাজে ব্যর্থ হয়ে থাকেন তাহলে হয়তো মনে হতে পারে যে নিশ্চয়ই কোন কারনে আপনার এটা হয়ে থাকছে। স্পষ্টভাবে আপনাদের যদি একটা কথা জানাতে চাই তাহলে বলব যে এই দুনিয়া ক্ষেত্র আমাদের জন্য আল্লাহপাক পরীক্ষার কেন্দ্র হিসেবে পাঠিয়েছেন।

আমরা মহান আল্লাহ পাকের উদ্দেশ্যে ইবাদত করে সকল ক্ষেত্রে ধৈর্য ধারণ করব যাতে করে শয়তানের পাক চক্করে পড়ে খারাপ পথে পরিচালিত না হয়। কারণ ভালো পথে থাকতে থাকতে হঠাৎ করে সেখান থেকে আপনার মন উঠে যেতে পারে এবং ভালো পথে থাকার কারণে শয়তানের মাধ্যমে আপনি খারাপ পথে চলে যেতে পারেন। কিন্তু একজন প্রকৃত মুমিন ব্যক্তি কখনই কারো উৎসাহে খারাপ পথে পরিচালিত হতে পারে না। যেহেতু আপনি মুসলমান এবং আল্লাহ পাকের প্রতি বিশ্বাস রয়েছে সেহেতু আল্লাহ পাকের উদ্দেশ্যে অবশ্যই আপনাদেরকে প্রত্যেকটি কাজে ভরসা করতে হবে।

যে মুসলিম ব্যক্তি আল্লাহ পাকের প্রতি যতটা ভরসা করবে সে মুসলিম ব্যক্তি প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এবং আল্লাহপাকের সাহায্যে ও রহমতে প্রত্যেকটা বিষয়ে জয় করে আসতে পারবে। তবে আপনারা যদি সকল ধরনের কাজের ক্ষেত্রে শুধু হারাম কাজে অথবা আল্লাহ পাকের সমর্থন নেই এমন কাজে জয় পরাজয় মেনে নিতে চান তাহলে বলব যে সেখান থেকে জয় আপনার জন্য কখনোই হবে না। কারণ একজন বান্দার জন্য তাই উত্তম যেটা আল্লাহ পাক প্রদান করে থাকেন। তাই হয়তো আপনি অনেক দোয়া করছেন অথবা অনেক চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার পরেও যে বিষয়টা আপনার জন্য ক্ষতিকর তা হয়তো প্রদান করা হবে না।

আর এসব ক্ষেত্রে আপনার ভেতরে হয়তো ভরসা উঠে যেতে পারে যে আপনি এত প্রচেষ্টা চালানোর পরও সেখান থেকে কোন আউটপুট পেলেন না। আর এসব কারণে আপনার যদি মন ভেঙ্গে যায় তাহলে বলব যে আল্লাহ পাক তাঁর বান্দাকে কোন জিনিস প্রদান করতে যেমন দেরি করেন না তেমনি ভাবে নির্দিষ্ট সময়ের আগেও তা দান করেন না। একটা জিনিস আপনারা দিনের পর দিন ধরে মহান আল্লাহ পাকের দরবারে ফরিয়াদ জানিয়ে চাইছেন কিন্তু সেটা প্রদান করা হচ্ছে না মানে বুঝতে হবে সেটা আপনার জন্য কল্যাণকর নয়।

সুতরাং দুনিয়ার জীবন নিয়ে হতাশাগ্রস্ত না হয়ে মহান আল্লাহ পাকের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে নিজের মূল্যবান সময়গুলোকে সপে দিন। মহান আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি অর্জন করার জন্য আপনারা যদি সেজদায় গিয়ে আপনাদের মনের কথাগুলো খুলে বলতে পারেন অথবা তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করে আল্লাহ পাকের কাছে আপনার মনের হালাল চাহিদা গুলো উপস্থাপন করতে পারেন তাহলে অবশ্যই তিনি শুনবেন। যেখান থেকে আপনি চিন্তা এবং মানসিক দুশ্চিন্তার কারণে দিনে দিনে শেষ হয়ে যাচ্ছেন সেখান থেকে আপনি হয়তো আশার বাণী খুঁজে পাবেন।

 

১/ আপনার দুর্বলতাকে শক্তিতে পরিণত করার ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহ্ তা’আলা-ই রাখেন। তাই তাঁর কাছেই প্রার্থনা করুন। -[ড. বিলাল ফিলিপ্স]

২/ নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা তাঁকে নিরবে ডেকে যাওয়া বান্দাদের হতাশ করেন না। -[ড. বিলাল ফিলিপ্স]

৩/ কখনো কখনো মানুষ আপনাকে বয়কট করবে, দূরে সরিয়ে দিবে, তবে এগুলোকে পার্সোনালি নিয়ে ভেঙ্গে পড়বেন না। কারণ আল্লাহ সুবহানাহু তা’আলা হয়তো ওদের দিক থেকে দূরে সরিয়ে তাঁর নিজের দিকেই আপনাকে ডাকছেন। – [ড. বিলাল ফিলিপ্স]

৪/ কথা বলা যদি রূপা হয় তবে নীরব থাকা হচ্ছে সোনা। – [লুকমান (আ:)]

৫/ আল্লাহর কাছে আপনি প্রার্থনা করা বন্ধ করে দিলে তিনি রাগান্বিত হন। অথচ আদম সন্তানের কাছে কিছু প্রার্থনা করলে সে রেগে যায়। – [ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ)]

৬/ যে বিষয়ে মনে খটকা লাগে সে বিষয়টা যতোটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। – [ড. বিলাল ফিলিপ্স]

৭/ এমন কারো সঙ্গী হোন যে আপনাকে আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। – [ড. বিলাল ফিলিপ্স]

৮/ যদি কেউ আপনার প্রভুর আনুগত্য পছন্দ না করে তবে আপনারও তাকে পছন্দ করার কোন যুক্তি নেই। – [ড. বিলাল ফিলিপ্স]

৯/ যখন পৃথিবীর কেউ আপনাকে বুঝতে চেষ্টা করে না, তখন এতটুকু মনে রাখুন আল্লাহ্ আপনাকে বুঝেন। – [ড. বিলাল ফিলিপ্স]

১০/ নিজেকে দুশ্চিন্তামুক্ত রাখতে প্রতিটা বিষয়ে আল্লাহর উপর ভরসা করুন। কেননা আপনার জন্য কোনটি কল্যাণকর তা তিনিই ভালো জানেন। – [ড. বিলাল ফিলিপ্স]

১১/ যখন আপনি কুরআন তিলাওয়াত করেন তখন মনে করবেন আপনি আল্লাহর সাথে কথোপকথন করছেন এবং তিনি সরাসরি আপনাকে বলছেন। – [ইমাম ইবনুল কায়্যিম (রহ)]

১২/ আপনি যদি চান আল্লাহ্ আপনার সবগুলো পছন্দনীয় কাজ গ্রহণ করুন, তাহলে আপনি আল্লাহর পছন্দনীয় কাজগুলোই করতে থাকুন। – [ড. বিলাল ফিলিপ্স]

১৩/ দ্বীন ও দুনিয়া একসাথে অর্জন করতে কুরআন ও সুন্নাহ্ ব্যতীত অন্য কোন পথ নেই। যদিও মনে হবে দুনিয়া অপূর্ণই থেকে যাচ্ছে।  – [ড. বিলাল ফিলিপ্স]

১৪/ অন্যকে দাওয়াত দিতে গিয়ে নিজেকে ভুলে যাবেন না। কারণ পরিবর্তন নিজেকে দিয়েই শুরু করতে হয়। – [ড. বিলাল ফিলিপ্স]

১৫/ মানুষের খারাপ দিক খোঁজা বন্ধ করুন৷ তাদের ভুলগুলো সহজভাবে গ্রহণ করুন৷ তাদের সাথে ধৈর্যশীল হোন৷ পরিষ্কার একটি হৃদয়ের জন্য সংগ্রাম করুন এবং তাদের ভেতরের ভালটা দেখুন৷ – [শাইখ মুফতি ইসমাইল মেঙ্ক]

১৬/ সর্বশক্তিমান কখনোই ঐ ব্যক্তির ভুল প্রকাশ করবেন না যে মানুষের সম্পর্কে খারাপ কথা বলা থেকে বিরত থাকে। তাই অন্যের পাপ প্রকাশ করা বন্ধ করুন। -[শাইখ মুফতি ইসমাইল মেঙ্ক]

১৭/ আমাদের জীবনে করা বড় ভুল কখনও কখনও আমাদেরকে পরিবর্তন করে দেয় সবচেয়ে ভালো মানুষে। – [শাইখ মুফতি ইসমাইল মেঙ্ক]

১৮/ মাঝে মাঝে দুঃখের দ্বারা আমারা এমনভাবে দগ্ধ হই যে আমারা ভুলেই যাই এমন অনেক বিষয়, যা আমাদের সুখী করতে পারে। কিছু সময় নিয়ে সেগুলো সম্পর্কে চিন্তা করুন। -[শাইখ মুফতি ইসমাইল মেঙ্ক]

১৯/ সন্ত্রাসবাদ কখনোই কোন ধর্মীয় অধিকার নয়। আর ইসলাম সবসময়ই সাধারণ মানুষ হত্যাকে ঘৃণা করে। তাই কেউ চাইলেই এসব হত্যাকান্ডকে ইসলামাইজ করতে পারে না। -[ডা. জাকির নায়িক]

২০/ আপনার পাপগুলো আল্লাহর দয়া থেকে বড় নয়। -[ড. বিলাল ফিলিপ্স]

তাই আল্লাহপাকের প্রতি ভরসা রাখতে হবে এবং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে যে পরিস্থিতিতেই থাকুন না কোন আলহামদুলিল্লাহ পড়তে হবে। কারণ আপনি যে পরিস্থিতিতে আছেন আপনার চাইতে হয়তো আরো কোন ব্যক্তি অনেক খারাপ পরিস্থিতিতে আছে এটা মেনে নিতে হবে। তাই দুনিয়ার জীবনে আপনি সুস্থ আছেন অথবা দুনিয়ার জীবনের নিঃশ্বাস নিয়ে চলাফেরা করতে পারছেন এটাই বড় নেয়ামত হিসেবে পরিগণিত হবে। তারপরও যারা বিভিন্ন ধরনের অনুপ্রেরণামূলক উক্তি পড়তে চান তারা এখান থেকে ইসলামিক অনুপ্রেরণামূলক উক্তি পড়ে নিতে পারেন।

Leave a Comment