ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার যোগ্যতা – ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার শারীরিক ও শিক্ষাগত যোগ্যতা

ম্যাজিস্ট্রেট হতে চাইলে আপনার কি কি যোগ্যতার প্রয়োজন সেই বিষয়ে আজকে আলোচনা করব। প্রথম শ্রেণীর কর্মচারী এবং যারা বিসিএস সম্মান অর্জন করতে পারে তারাই কেবল ম্যাজিস্ট্রেট হতে পারে। দেশের সর্বস্তরের এই পদে আপনি যদি নিজেকে দেখতে চান তাহলে কি কি প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে এবং এই ম্যাজিস্ট্রেট হতে আপনার কি কি যোগ্যতা লাগবে সে নিয়ে আলোচনা করব।

অনেক সময় অনেকে প্রশ্ন করে থাকেন ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার কি কি যোগ্যতা প্রয়োজন সেগুলো আমাদের জানান সেই আলোচনার ভিত্তিতে আজকের আর্টিকেল তৈরি করা হয়েছে। এখান থেকে আপনারা অবশ্যই অবগত হতে পারবেন ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার জন্য একজন ব্যক্তিকে শিক্ষাগতভাবে কি কি যোগ্যতা অর্জন করতে হবে এবং শারীরিক কি কি যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন সেগুলো। এক কথায় বলতে গেলে কিভাবে ম্যাজিস্ট্রেট হওয়া যায় সে প্রশ্নের উত্তর আপনার আমাদের আজকের এই আর্টিকেল থেকে জানতে পারবেন।

ম্যাজিস্ট্রেট হতে এইচএসসি পরীক্ষার পরে কোন বিষয় নিয়ে পড়তে হবে

আমাদের জীবনে অনেক লক্ষ্য থাকলেও অনেক সময় আমরা ম্যাজিস্ট্রেট হতে চাই অথবা ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ে কাজগুলো করার জন্য কি কি করতে হবে তা জানতে চাই। তাই যাদের লক্ষ্য ম্যাজিস্ট্রেট হওয়া তাদের জন্য আমরা আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে এইচএসসি পরীক্ষার পরে কোন বিষয় নিয়ে পড়লে ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার ক্ষেত্রে খুবই সুবিধা হবে তা জানিয়ে দেব।

এতে করে আপনার লক্ষ্য নির্ধারণ করতে সুবিধা হবে এবং বর্তমানে আপনি যে পড়াশোনা করছেন সেই পড়াশোনার ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা পালন করার মাধ্যমে ভালো ফলাফল অর্জন করে আপনি আপনার লোকে এগিয়ে যেতে পারবেন। তাই স্বপ্ন পূরণের অঙ্গীকার নিয়ে আপনি যদি অবশ্যই সঠিকভাবে কাজ করে যান এবং সঠিক দিকনির্দেশনা মেনে চলেন তাহলে আপনার জন্য ভবিষ্যতে সফলতার দুয়ার উন্মুক্ত অবশ্যই হবে। নিচের দিকে ম্যাজিস্ট্রেট হতে হলে আপনাকে কোন সাবজেক্ট নিয়ে পড়তে হবে তা জানিয়ে দিলাম।

বর্তমান সময়ে নিয়ম অনুযায়ী আপনি যদি ম্যাজিস্ট্রেট হতে চান তাহলে আপনাকে সরকারিভাবে অনুমোদনপ্রাপ্ত কোন একটা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নির্দিষ্ট কোন বিষয়ে অনার্স কোর্স সম্পন্ন করতে পারলেই হবে। বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের মাধ্যমে প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অথবা বিসিএস পরীক্ষায় আপনি যদি আবেদন করার যোগ্যতা রাখেন অথবা অনার্স ফাইনাল ইয়ারের অ্যাপিয়ার্ড সার্টিফিকেট ব্যবহার করার মাধ্যমে আবেদন করতে চান তাহলে আবেদন করতে পারবেন। তবে একজন ম্যাজিস্ট্রেট হতে হলে অবশ্যই আপনাকে বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক বিষয় থেকে শুরু করে অন্যান্য যাবতীয় বিষয় খুব ভালোমতো প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং আপনি যদি একাডেমিক দিক থেকে নির্দিষ্ট একটা সাবজেক্টে পড়তে পারেন অথবা ভালো সাবজেক্টে পড়তে পারেন তাহলে সেই ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার ক্ষেত্রে অনেকটাই সুবিধা পাবেন।

লোক প্রশাসন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, ইংরেজি এবং সমাজবিজ্ঞানের বেশ কিছু সাবজেক্ট রয়েছে যেগুলো যদি আপনারা পড়তে পারেন তাহলে আপনার ম্যাজিস্ট্রেট নিশ্চিত হওয়ার ক্ষেত্রে আপনি নিজেকে এগিয়ে রাখতে পারবেন। তবে বর্তমান সময়ে একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড খুব একটা গুরুত্ব না রেখে আপনি পিএসসির প্রদান করা বিসিএস সার্কুলার অনুযায়ী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ভালো নাম্বার অর্জন করে যখন প্রিলিমিনারি, রিটেন এবং ভাইভা পরীক্ষা পর্যন্ত যেতে পারবেন তখন আপনাকে ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার জন্য প্রচুর পরিমাণে পড়াশোনা করতে হবে। তাই একজন ম্যাজিস্ট্রেট হতে হলে একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড এর চাইতে আপনার প্রচুর পরিমাণে অধ্যবসায় থাকতে হবে এবং প্রচুর পরিমাণে পড়ালেখা করতে হবে।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কি এর কাজ ও ক্ষমতা

আপনাকে সবার প্রথমে এই বিষয়ে অবগত হতে হবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কি। আপনি নিজের ভবিষ্যৎকে এমন একটি জায়গাতে দেখতে চাচ্ছেন এবং সেই জায়গা সম্পর্কে আপনার কোন ধারনা নাই সেটা হতেই পারে না। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফ্রি এবং এই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কি কি ক্ষমতা আছে সে সম্পর্কে এখন আমরা আপনাদের জানাবো।

এছাড়াও পুলিশের এএসপি পদমর্যাদার ব্যক্তিদেরকে কিংবা বোর্ড পরীক্ষা ও বিভিন্ন সরকারি পরীক্ষায় দায়িত্ব পালনের সময় সরকারি কলেজের শিক্ষকদেরকেও যারা বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার সরকার ম্যাজিস্ট্রেট ক্ষমতা অর্পণ করতে পারেন যাকে স্পেশাল এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট বলে এটা প্রয়োজন অনুযায়ী নির্ধারণ করা হয়।

তবে প্রশাসনিক সর্বোচ্চ পদ হচ্ছে সচিব এবং মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তসমূহ সচিব হয়ে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে আসে এবং সহকারী কমিশনারের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ের বাস্তবায়িত হয়।

আমরা যদি বিস্তারিতভাবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কিছু ক্ষমতা নিয়ে আপনাদের সঙ্গে কথা বলি তাহলে এখন আমরা কিছু ধারা আপনাদের সামনে তুলে ধরবো যে ধারাটি ফৌজদারী কার্যবিধি ১৮৯৮ এর তফসিল তিন এর বিধান অনুসারে দেওয়া আছে। এখানে ম্যাজিস্ট্রেটের যে ক্ষমতার কথা বলা হয়েছে সেই বিষয়ে কথা বলব।

ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে অপরাধ সংগঠনকারী ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করার বা গ্রেফতার নির্দেশ দেওয়ার এবং হেফাজতে রাখার ক্ষমতা ধারা 64।
গ্রেফতার করার ক্ষমতা বা গ্রেফতারের জন্য তিনি পরোয়ানা জারি করতে পারেন ধারা ৬৫।

ওয়ারেন্ট অনুমোদন করার ক্ষমতা বা ওয়ার্ডের ধারার অধীনে গ্রেফতারকৃত অভিযুক্ত ব্যক্তিকে অপসারণের আদেশ দেওয়ার ক্ষমতাধারা ৮৩,৮৪ ও ৮৬।
ডকুমেন্ট ইত্যাদি জন্য ডাক ও টেলিগ্রাফ কর্তৃপক্ষের দ্বারা অনুসন্ধান এবং আটক করার ক্ষমতা ধারা ৯৫।

ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার যোগ্যতা

যারা মনে প্রাণে বিশ্বাস করেছেন একদিন ম্যাজিস্ট্রেট হয়ে দেখাবেন তাদের অবশ্যই জানতে হবে সেই ম্যাজিস্ট্রেট হতে হলে কি যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। আপনার যদি এ যোগ্যতা না থাকে আপনি কোনোভাবে ম্যাজিস্ট্রেট এর পদে অধিষ্ঠিত হতে পারবেন না। তাই এখন থেকে জানুন কি কি যোগ্যতা অর্জন করলে আপনি একদিন ম্যাজিস্ট্রেট হতে পারবেন এবং নিজেকে সেই ভাবেই তৈরি করুন।

আমরা আজকে আপনাদের জানাবো ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে কিছু তথ্য এবং সেই তথ্য অনুযায়ী আপনারা যদি নিজেকে যোগ্য করে তুলতে পারেন তাহলে অবশ্যই ভবিষ্যতে ম্যাজিস্ট্রেট হতে পারবেন।

সবার প্রথমে সহজ ভাষায় বলতে চাই ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার জন্য আপনাকে ন্যূনতম গ্রাজুয়েশন পাশ করতে হবে। গ্রাজুয়েশন পাশ করার পরে আপনাকে আয়োজিত বিসিএস পরীক্ষার জন্য আবেদন করতে হবে এবং এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারলে আপনি ম্যাজিস্ট্রেট হতে পারবেন। এর জন্য অবশ্যই আপনাকে বিসিএস ক্যাডার সম্মানটি অর্জন করতে হবে।

এক্সিকিউটিভ বা নিভা মেনি স্টেট হতে চাইলে সাধারণত যে কোন সাবজেক্ট নিয়ে আপনাকে বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে উত্তীর্ণ হতে হবে। যারা বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে উত্তীর্ণ হয় তাদের জন্য নিয়োগ প্রাপ্তদের পদ রয়েছে সরকারি কমিশনার এবং ম্যাজিস্ট্রেট। সব মিলিয়ে ফৌজদারী কার্যবিধির ধারা ১০(৫) অনুযায়ী সরকার চাইলে প্রশাসনের ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সীমিত আকারে ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা অর্পণ করতে পারে।

জেলার যে সর্বোচ্চ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আছে তাদের কে বলা হয় ডিস্ট্রিক ম্যাজিস্ট্রেট এছাড়াও যারা মেট্রোপলিটন সরকার এলাকার জন্য রয়েছে তাদের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বলা হয়।

সরকার এ ধরনের ম্যাজিস্ট্রেটগণকে কিছু আইন ম্যাজিস্ট্রেট ক্ষমতা প্রয়োগ করার সুযোগ দিয়েছেন এবং বিশেষ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষক ও ডাক্তার গণ ক্যাডার অনুযায়ী মাঝে মাঝে নির্ভয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। সাধারণত কোন জরুরি প্রয়োজনে এই কাজটি করা হয়ে থাকে।

প্রশাসনের কোন সরকারি কমিশনার যখন ভূমি অফিসের দায়িত্ব পালন করেন তখন তাকে বলা হয় সরকারি কমিশনার ভূমি বা এসিল্যান্ড এবং এরপরে যারা সহকারী কমিশনারগণ পদোন্নতি পেতে পেতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার অর্থাৎ ইউএনও হন এবং এর পরে হন জেলা প্রশাসক।

এইভাবে একজন ম্যাজিস্ট্রেট পদোন্নতি পেতে পেতে বিভাগীয় কমিশনার হয়ে যান এবং তারপরে তিনি মন্ত্রণালয়ে যুগ্ম সচিব হন এবং অতিরিক্ত সচিব তার পরবর্তী পদ এবং সর্বোচ্চ পদে যিনি থাকবেন তাকে বলা হয় সচিব।

ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার শারীরিক যোগ্যতা

অনেকেই ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার ক্ষেত্রে শারীরিক যোগ্যতাটার বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন আবার অনেকে মনে করেন শারীরিকভাবে কোন সমস্যা দেখা দিলে সে ম্যাজিস্ট্রেট হতে পারবে না।

এটা একেবারেই ভুল ধারণা, তার কারণ হলো অনেকেই এমন রয়েছেন যারা শারীরিকভাবে একটু পিছিয়ে থাকলেও তারা পড়াশোনার দিক দিয়ে এবং নিজের যোগ্যতা দিক দিয়ে বেশ এগিয়ে রয়েছেন এবং তারা বর্তমানে ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কর্মরত আছেন।

সহজ ভাবে বলতে গেলে আপনি যদি বিসিএস ক্যাডার প্রশাসনিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেন তাহলে সেই যোগ্যতা দিয়েই আপনি ম্যাজিস্ট্রেট হতে পারবেন।এখানে অবশ্যই প্রশাসনিক ক্যাডার হতে হলে আপনার শারীরিক যে যোগ্যতার প্রয়োজন পড়বে ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষেত্রেও একই শারীরিক যোগ্যতার প্রয়োজন পড়বে।

বিষয়টি এমন নয় যে আপনি বিসিএস প্রশাসনিক ক্যাডার হলেন একটি যোগ্যতা নিয়ে কিন্তু যখন ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার সময় আসলো তখন আপনাকে সে যোগ্যতার কারণে বাতিল করে দেয়া হলো। অনেকে রয়েছেন শারীরিক দিক দিয়ে পিছিয়ে তারপরেও বর্তমানে ম্যাজিস্ট্রেট এর পদে চাকরি করছেন তাই আপনাদের বলব শারীরিক দিক দিয়ে পেঁছিয়ে থেকে মন খারাপ করবেন না নিজের পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে।

Leave a Comment