আল্লাহর ভয় নিয়ে উক্তি

দুনিয়ার জীবনে আমরা যদি পরীক্ষার নাম্বার কম পাই তাহলে সেটা পিতা-মাতার সামনে উপস্থাপন করতে প্রচন্ড পরিমাণে ভয় পেয়ে থাকে। আর দীর্ঘকালের অথবা আনন্দ কালের আখেরাতের জন্য নিজেকে প্রস্তুত না করতে পারলেও আল্লাহ পাকের প্রতি কোন রকমের ভয় অনেকেই করে না। আপনার অন্তরে যদি আল্লাহ পাকের ভয় থাকে অথবা আপনি যদি আল্লাহ পাকের ভয়ে তাঁর দেখানো জীবন পথে পরিচালনা করতে পারেন নিজের জীবনকে তাহলে দেখবেন যে জীবন সুন্দর হয়ে উঠবে। তাই আল্লাহ পাকের ভয় আমাদের অন্তরে রাখতে হবে এবং সেই ভয় অনুযায়ী আমরা অবশ্যই কাজগুলো করার চেষ্টা করব।

বিশেষ করে বর্তমান সময়ের যুবসমাজ আল্লাহ পাকের প্রতি কোন ধরনের আনুগত্য না রেখে কোন ধরনের ভয়-ভীতি মনের ভেতরে স্থান দেয় না। তারা এখন মনে করে যে খুব ভালোভাবে জীবন কাটছে তেমনি ভাবে ভবিষ্যতেও একইভাবে জীবন কাটবে। কিন্তু একটা সময় তারা বৃদ্ধ হবে এবং যখন পরিবারের মধ্যে নিজেদেরকে জড়িত করবে তখন দেখবে যে একটা মানুষ জীবনে কত রকমের সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে।

বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার ক্ষেত্রে একজন মানুষ হিসেবে আপনারা যখন মহান আল্লাহ পাকের কাছে হাত তুলে সমাধান চাইবেন তখন আল্লাহ পাক অবশ্যই আপনাদেরকে সাহায্য করবেন। তবে চাওয়া পাওয়া অবশ্যই হালাল হতে হবে। এই পৃথিবীর বুকে আপনি হয়তো পিতার মতো ছাদ পেয়েছেন বলে কোন কিছু মনে করছেন না অথবা এই পৃথিবীর কোন ভাবসাব বুঝতে পারছেন না। কিন্তু সকল ধরনের দায়িত্ব যখন আপনার মাথার উপরে এসে পড়বে তখন আপনি বুঝতে পারবেন এই পৃথিবী কতটা নির্মম ও কঠিন। আর তখন আপনার আশেপাশে যখন কেউ থাকবে না অথবা সকলেই যখন আপনাকে ছেড়ে চলে যাবে তখন একান্তই মনে হবে আল্লাহ পাক ছাড়া এই পৃথিবী বুকে আর কেউ আপন হতে পারে না।

তাই যে পরিস্থিতিতে আছেন এবং যেখানে আছেন আল্লাহ পাকের শোকর গুজার করা থেকে কখনোই নিজেকে বিরত রাখবেন না। একজন মুসলিমের জীবনে যেমন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করা হয়েছে তেমনি ভাবেই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জীবনের যে পরিস্থিতিতে থাকুন না কেন আদায় করার চেষ্টা করুন। আপনার যদি নামাজে মন না বসে অথবা নামাজ যদি ভালো না লাগে তাও এটা নিয়মিতভাবে আদায় করার চেষ্টা করুন। তাই আল্লাহপাকের ভয় আমাদের অন্তরে রাখতে হবে এবং আল্লাহ পাক মৃত্যুর পরে ভালো কাজের জন্য পুরস্কার এবং খারাপ কাজের জন্য শাস্তি প্রদান করবে এটা মাথায় রাখতে হবে।

খুব ঠান্ডা মাথায় একটা জায়গায় বসে আপনি যদি হিসাব করে দেখেন তাহলে আপনার দুনিয়ার জীবনে ভালো কাজের চাইতে খারাপ কাজের পরিমাণ এত পরিমাণ বেশি যে তার জন্য নিজের ভেতরে খারাপ বোধ কাজ করাতে পারবেন। তাই দুনিয়ার এই ক্ষণস্থায়ী জীবনে হয়তো সকল কাজ আপনার কাছে ভালো লাগলো অন্যের জন্য তা ক্ষতিকার এবং আল্লাহ পাকের সকল কাজে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাই আপনারা যদি এখন থেকে সচেতন না হোন এবং ভুল বুঝতে পারার পর যদি সেগুলো আবার পুনরাবৃত্তি করেন তাহলে দেখা যাবে যে আপনার ভুল কখনোই সংশোধন হবে না এবং আপনিও সঠিক পথে পরিচালিত হতে পারছেন না।

১/ আপনার দুর্বলতাকে শক্তিতে পরিণত করার ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহ্ তা’আলা-ই রাখেন। তাই তাঁর কাছেই প্রার্থনা করুন। -[ড. বিলাল ফিলিপ্স]

 

২/ নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা তাঁকে নিরবে ডেকে যাওয়া বান্দাদের হতাশ করেন না। -[ড. বিলাল ফিলিপ্স]

 

৩/ কখনো কখনো মানুষ আপনাকে বয়কট করবে, দূরে সরিয়ে দিবে, তবে এগুলোকে পার্সোনালি নিয়ে ভেঙ্গে পড়বেন না। কারণ আল্লাহ সুবহানাহু তা’আলা হয়তো ওদের দিক থেকে দূরে সরিয়ে তাঁর নিজের দিকেই আপনাকে ডাকছেন। – [ড. বিলাল ফিলিপ্স]

 

৪/ কথা বলা যদি রূপা হয় তবে নীরব থাকা হচ্ছে সোনা। – [লুকমান (আ:)]

 

৫/ আল্লাহর কাছে আপনি প্রার্থনা করা বন্ধ করে দিলে তিনি রাগান্বিত হন। অথচ আদম সন্তানের কাছে কিছু প্রার্থনা করলে সে রেগে যায়। – [ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ)]

 

৬/ যে বিষয়ে মনে খটকা লাগে সে বিষয়টা যতোটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। – [ড. বিলাল ফিলিপ্স]

 

৭/ এমন কারো সঙ্গী হোন যে আপনাকে আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। – [ড. বিলাল ফিলিপ্স]

 

৮/ যদি কেউ আপনার প্রভুর আনুগত্য পছন্দ না করে তবে আপনারও তাকে পছন্দ করার কোন যুক্তি নেই। – [ড. বিলাল ফিলিপ্স]

 

৯/ যখন পৃথিবীর কেউ আপনাকে বুঝতে চেষ্টা করে না, তখন এতটুকু মনে রাখুন আল্লাহ্ আপনাকে বুঝেন। – [ড. বিলাল ফিলিপ্স]

 

১০/ নিজেকে দুশ্চিন্তামুক্ত রাখতে প্রতিটা বিষয়ে আল্লাহর উপর ভরসা করুন। কেননা আপনার জন্য কোনটি কল্যাণকর তা তিনিই ভালো জানেন। – [ড. বিলাল ফিলিপ্স]

 

১১/ যখন আপনি কুরআন তিলাওয়াত করেন তখন মনে করবেন আপনি আল্লাহর সাথে কথোপকথন করছেন এবং তিনি সরাসরি আপনাকে বলছেন। – [ইমাম ইবনুল কায়্যিম (রহ)]

 

১২/ আপনি যদি চান আল্লাহ্ আপনার সবগুলো পছন্দনীয় কাজ গ্রহণ করুন, তাহলে আপনি আল্লাহর পছন্দনীয় কাজগুলোই করতে থাকুন। – [ড. বিলাল ফিলিপ্স]

 

১৩/ দ্বীন ও দুনিয়া একসাথে অর্জন করতে কুরআন ও সুন্নাহ্ ব্যতীত অন্য কোন পথ নেই। যদিও মনে হবে দুনিয়া অপূর্ণই থেকে যাচ্ছে। – [ড. বিলাল ফিলিপ্স]

 

১৪/ অন্যকে দাওয়াত দিতে গিয়ে নিজেকে ভুলে যাবেন না। কারণ পরিবর্তন নিজেকে দিয়েই শুরু করতে হয়। – [ড. বিলাল ফিলিপ্স]

 

১৫/ মানুষের খারাপ দিক খোঁজা বন্ধ করুন৷ তাদের ভুলগুলো সহজভাবে গ্রহণ করুন৷ তাদের সাথে ধৈর্যশীল হোন৷ পরিষ্কার একটি হৃদয়ের জন্য সংগ্রাম করুন এবং তাদের ভেতরের ভালটা দেখুন৷ – [শাইখ মুফতি ইসমাইল মেঙ্ক]

 

১৬/ সর্বশক্তিমান কখনোই ঐ ব্যক্তির ভুল প্রকাশ করবেন না যে মানুষের সম্পর্কে খারাপ কথা বলা থেকে বিরত থাকে। তাই অন্যের পাপ প্রকাশ করা বন্ধ করুন। -[শাইখ মুফতি ইসমাইল মেঙ্ক]

 

১৭/ আমাদের জীবনে করা বড় ভুল কখনও কখনও আমাদেরকে পরিবর্তন করে দেয় সবচেয়ে ভালো মানুষে। – [শাইখ মুফতি ইসমাইল মেঙ্ক]

 

১৮/ মাঝে মাঝে দুঃখের দ্বারা আমারা এমনভাবে দগ্ধ হই যে আমারা ভুলেই যাই এমন অনেক বিষয়, যা আমাদের সুখী করতে পারে। কিছু সময় নিয়ে সেগুলো সম্পর্কে চিন্তা করুন। -[শাইখ মুফতি ইসমাইল মেঙ্ক]

 

১৯/ সন্ত্রাসবাদ কখনোই কোন ধর্মীয় অধিকার নয়। আর ইসলাম সবসময়ই সাধারণ মানুষ হত্যাকে ঘৃণা করে। তাই কেউ চাইলেই এসব হত্যাকান্ডকে ইসলামাইজ করতে পারে না। -[ডা. জাকির নায়িক]

 

২০/ আপনার পাপগুলো আল্লাহর দয়া থেকে বড় নয়। -[ড. বিলাল ফিলিপ্স]

 

২১/ আপনি যদি আপনার মূল্য সঠিকভাবে বুঝতেন, তাহলে কখনো ইচ্ছাকৃতভাবে পাপ কর্মে লিপ্ত হতেন না । – [ড. বিলাল ফিলিপ্স]

 

২২/ সত্যিকার বন্ধুরাই জান্নাতে (একে অপরের) প্রতিবেশী হতে চায়। – [ড. বিলাল ফিলিপ্স]

 

২৩/ সে কী পেলো যে আল্লাহকে হারালো ? সে কী হারালো যে আল্লাহকে পেলো? – [ইবনু আতা’আল্লাহ আল ইসকান্দারি (রাহিমাহুল্লাহ)]

 

২৪/ আপনি যদি ইসলামকে চর্চা না করেন, দয়াকরে ইসলাম সম্পর্কে কিছু বলতে আসবেন না! -[ডা: জাকির নায়িক]

 

২৫/ যদি শরীর প্রদর্শনই (বেপর্দাই) হয় আধুনিকতা, তাহলে পশুরাই সবচেয়ে বেশি আধুনিক! -[ডা: জাকির নায়িক]

 

২৬/ নারী-পুরুষের জৈবিক ভালোবাসাকে প্রমোট করতে হয় না। এটা এমনিতেই (সৃষ্টিগতভাবে) প্রমোটেড। এটাকে বরং কন্ট্রোল করতে হয়। – [ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রাহিমাহুল্লাহ)]

 

২৭/ সেক্যুলাররা যৌনতাকে প্রমোট করে, আর ইসলাম কন্ট্রোল করতে বলে। উভয়টার ফল ও পরিণতি সবার সামনে পরিস্কার। – [শাইখ আহমাদুল্লাহ]

 

২৮/ লোকের প্রশংসায় আনন্দিত হতে এবং লোকের নিন্দায় দুঃখিত হতে আপনার অন্তরকে প্রশ্রয় দেবেন না। – [ইমাম আবু হামিদ আল-গাজ্জালী (রাহিমাহুল্লাহ)]

 

২৯/ কখনো কখনো আল্লাহ তা’আলা আমাদের ভোগান্তিতে ফেলেন শুধু এজন্যই যে আমরা যেন তাকে স্মরণ করি। -[ড. বিলাল ফিলিপ্স]

 

৩০/ আল্লাহকে ভয় করো, কেননা যে তাকে ভয় করে সে কখনো একাকীত্ব অনুভব করে না। – [উমার ইবনুল খাত্তাব (রাদিয়াল্লাহু আনহু)]

 

৩১/ আল্লাহর প্রতি আপনার ভালোবাসা যতই বৃদ্ধি পেতে থাকবে, দুনিয়ার প্রতি আপনার ভালোবাসা ততোই কমতে থাকবে। – [ড. বিলাল ফিলিপ্স]

 

৩২/ তারা আমাদের ভাই-বোনদের মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে দমিয়ে রাখতে চায়, অথচ আমাদের পেছনে রয়েছে বদর, খন্দক, তাবুকের মতো শত শত স্মৃতি। – [কবি আল মাহমুদ]

 

৩৩/ দুনিয়া অর্জন নয়, দুনিয়া বিমুখীতাতেই রয়েছে দেহ ও মনের প্রশান্তি। – [উমার ইবনুল খাত্তাব (রা)]

 

৩৪/ সেই ব্যক্তিই অভিশপ্ত যে মরে যায় অথচ তার খারাপ কাজগুলো পৃথিবীতে রয়ে যায়। — [আবু বকর (রাদিয়াল্লাহু আনহু)]

 

৩৫/ যে বিপদ-আপদ ও মুসিবত আপনাকে আল্লাহর দিকে ফিরিয়ে দেয়, তা সেই রাহমাতের চাইতে উত্তম যা আপনাকে আল্লাহর স্মরণ থেকে বিমুখ করে দেয়। -[ ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রাহিমাহুল্লাহ)]

 

৩৬/ যখন তুমি দেখবে, নামাজের মধ্যে তোমার অন্তর উপস্থিত থাকছে না, তখন বুঝে নেবে, এটা ইমানের দূর্বলতার কারণ। কঠোর পরিশ্রম করো নিজের ঈমানকে মজবুত করার জন্য। -[ইমাম ইবনু কুদামাহ আল মাকদিসি (রহ.)]

 

৩৭/ আসক্তের মতো ভালবাসবেন না, ধ্বংসাত্মকভাবে কাউকে ঘৃণা করবেন না। – [উমার ইবনুল খাত্তাব ( রাঃ)]

 

৩৮/ এমন দু’টি নিয়ামত আছে, যে দু’টোতে অধিকাংশ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। তা হচ্ছে, সুস্থতা আর অবসর। – [মুহাম্মাদ (সা)]

 

৩৯/ পৃথিবীর জীবনটা তিনটি দিনের– গতকালের দিনটিতে যা করা হয়েছে সেগুলো নিয়ে সেটি চলে গেছে; আগামীকালের দিনটিতে হয়ত আপনি না-ও পৌছতে পারেন; কিন্তু আজকের দিনটি আপনার জন্য সুতরাং যা করার আজই করে নিন। -[ইমাম আল-হাসান আল-বাসরী (রহ)]

 

৪০/ তাওহীদ হলো সমস্ত দোয়া, সমস্ত কান্নাকাটি, সাহায্য চেয়ে সমস্ত আবেদন, সমস্ত আশা এবং সকল কল্যাণের আগমন ও সকল ক্ষতি নিবারণের জন্য প্রার্থনা অন্য কেউ নয় বরং কেবলই আল্লাহর উদ্দেশ্যে হতে হবে। – [ইমাম মুহাম্মাদ আলী আশ-শাওকানী (আল দূর আল-নাদিদ)]

তাই আল্লাহপাকের ভয় আমরা অন্তরের ধারণ করি এবং আল্লাহপাকের ভালো কাজের জন্য যে পুরস্কারের ব্যবস্থা রয়েছে সেটা অবশ্যই গ্রহণ করার চেষ্টা করি। দুই দিনের এই দুনিয়ায় বিভিন্ন ধরনের লোভনীয় জিনিসে মত্ত হয়ে না থেকে আমরা যদি আখিরাতের জন্য কাজ করে যাই তাহলে দেখব যে এই দুনিয়ার জীবনে যেমন প্রশান্তি নেমে আসছে তেমনিভাবে আখিরাতের জীবন ও আমাদের জন্য সুখকর স্থানগুলো অপেক্ষা করছে। তাই প্রিয় মুসলমান ভাই ও বোনেরা আল্লাহ পাকের ভয় অন্তরে ধারণ করুন। যাদের আল্লাহ পাকের প্রতি ভয় নেই তারা আমাদের ওয়েবসাইটে প্রদান করা আল্লাহপাকের ভয় উক্তিগুলো পড়ে দেখলে এবং সেগুলো মেনে চলতে পারলেই সঠিক পথে নিজের জীবনকে পরিচালনা করতে পারবেন।

Leave a Comment