fcr এর মান যত কম খাদ্যের গুণগতমান তত ভাল ব্যাখ্যা কর

FCR আবার কি? FCR কাকে বলে? এরকম বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন আমাদের সকলের মনে জাগতে পারে। বিশেষ করে আমরা যারা সাধারণ জনগণ তারা এই বিষয় সম্পর্কে একদম অজ্ঞান। কিন্তু একজন সচেতন নাগরিক হিসাবে আমাদের এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। আপনাদের মনে যদি কোন ধরনের প্রশ্ন জাগে, কোন বিষয় সম্পর্কে সেটা আপনি খুব সহজেই গুগলে সার্চ করে পেয়ে যাবেন। এফসিআর দ্বারা খাদ্যের গুণগতমানকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

তাই আমাদের সচেতন হতে হবে এবং এই সকল ছোট ছোট বিষয়ের ওপর প্রাথমিক জ্ঞান আমাদের থাকতে হবে। আজকে এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমরা আপনাদের এই গুরুত্বপূর্ণ টপিক সম্পর্কে প্রাথমিক তথ্য প্রদান করার চেষ্টা করব। FCR কি এবং কিভাবে এফসিআর নির্ণয় করা হয় সমস্ত কিছু আপনারা জানতে পারবেন। তাই এই আর্টিকেলটি পড়ার অনুরোধ রইলো। আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা বুঝতে পারবেন fcr কি।

খাদ্যের এফসিআর কি?

এফসিআর (FCR) হল খাদ্য রূপান্তরের হার, অর্থাৎ এক কেজি মাছ উৎপাদন করতে কত কেজি খাদ্যের প্রয়োজন হয় তার অনুপাতকেই খাদেএফসিআর মান বলা হয়। উদাহর সরূপ বলা যায় এক কেজি তেলপিয়া মাছ উৎপদন করতে যদি ১.৫ কেজি খাদ্যের প্রয়োজন হয় তাহলে উক্ত তেলাপিয়া মাছ উৎপাদনের ক্ষেত্রে মাছের এফসিআর হবে ১:১.৫, অথবা ১ কেজি শিং মাছ উৎপাদনের জন্য যদি ২.৫ কেজি খাদ্যের প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রে শিং মাছের এফসিআর হবে ১:২.৫।
খাদ্যের এফসিআর মান জানলে এক কেজি মাছের উৎপাদন খরচ কত তা অতি সহজেই অনুমান করা যায়, সুতরাং মাছ চাষের ক্ষেত্রে এফসিআর মান জানা বাধ্যতামূলক।

মাছের এফসিআর মান জানা জরুরী। যারা নতুন মাছ ব্যবসায়ী তাদের জন্য আমাদের এই আর্টিকেলটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাণিজ্যিক ভাবে মাছ উৎপাদনের ক্ষেত্রে লাভ কক্ষির দিকটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে । খরচের সার্বিক খাতের মধ্যে হল – খাদ্য ক্রয়, জমীর লীজ মূল্য পোনা কেনার খরচ, লেবার, কনসালটেনসি, মেডিসিন , মাছ বিক্রয় কালীন খরচ , জালানী/বিদ্যৎ খরচ সহ অন্যান্য বিবিধ খরচ। আধুনিক গবেষণায় এবং দেশ বিদেশের বাস্তবতায় দেখা গেছে মাছে উৎপাদনের মোট খরচের ৬০-৮০% খরচ হয় খাদ্যের জন্য।

বর্তমানে খাদ্যের ক্রমবর্ধমান উচ্চ মূল্য খাদ্য ক্রয় এবং খাদ্যের সঠিক এফসিআর না জানার কারনে মাছ চাষে ভাল ফলাফল করা অনেক ক্ষেত্রে দূরহ ব্যপার হয়ে দাড়ায় , পাশাপাশি একজন সফল খামরীকে খাদ্যের এফসিআর মান কি কি কারনে কম বেশী হতে পারে সে বিষয়ে অধিক গুরুত্ব দিতে হবে। যদি কোন কারনে খাদ্যের এফসিআর সঠিম ভাবে বজায় রাখতে না পারে অর্থাৎ মাছের বাজার দরের চেয়ে মাছের উৎপাদন মূল্য বেশী হবে মাছ চাষে নিশ্চিত ভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে সেটা অবধারিত।

তবে এ কথা সত্য যে বর্তমান আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে মাছ চাষের ক্ষেত্রে কোন মাছ প্রজাতির এফসিআর কি হওয়া দরকার তার কোন সঠিক মান বা মাত্রা সর্বসম্মতি ক্রমে দাড় করানো যায়নি পাশাপাশি এ ব্যপারের বিভিন্ন জন বিভিন্ন মতামত প্রকাশ করে থাকে মোট কথা যে কোন মূল্যেই মাছের খাদ্যের খরচ উৎপাদন খরচের চাইতে অনেক কম হতে হবে।

খাদ্যের এফসিআর মান সঠিক রাখতে নিন্মলিখিত বিষয় গুলো গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় রাখতে হবে।
১. খাদ্যের মান
২. পানির ভৌত ও রাসায়ানিক মান
৩. পানির তাপমাত্রা
৪. পুকুরের দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমান
৫. পুকুরের মাছের প্রকৃত সংখ্যা জানা
৬. খাদ্যের প্রকার এবং ম্যাস সাইজ
৭. পুকুরের গভীরতা,পুকুরের আয়তন ও খাদ্য প্রয়োগ কৌশল

মাছ চাষ পুকুরে পানির তাপমাত্রা সরাসারি মাছের গ্রোথ এফসিআর মানের উপর প্রভাব ফেলে ।

যারা মাছ ব্যবসায়ী তাদের জন্য এই বিষয়টি খুবই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যারা নতুন মাছের ব্যবসা শুরু করেছেন বা করতে চান তারা নিশ্চয়ই এই তথ্য দ্বারা অনেক উপকৃত হবেন। খাদ্যের গুণগতমান নির্ধারণ করতে FCR মানের ওপর গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। এর উপর নির্ভর করে একজন ব্যবসায়ী বণিকের লাভ এবং লোকসান। আশা করি আমাদের এই সামান্য তথ্য দ্বারা অনেকে অনেক উপকৃত হবেন। ধন্যবাদ ‌। খোদা হাফেজ।

Leave a Comment