দুধে কোন ভিটামিন থাকে

দুধ খাওয়ার উপকারিতা আমরা সবাই জানি। প্রতিদিন যদি নিয়মিত রাতে আহারের পর এক গ্লাস হালকা গরম দুধ পান করা যায় তাহলে শরীরের যাবতীয় সমস্যা দূর হয়ে যায়। যেমন প্রতিদিন দুধ পান করলে আমাদের পরিপাকতন্ত্র সচল থাকে। তাই আমাদের সুষম খাদ্য পিরামিডে দুধের উপস্থিতি থাকতেই হবে। দুধ যে পুষ্টি সম্পূর্ণ একটি খাবার সেটা জানেনা এমন কোন মানুষ নেই। কিন্তু দুধে কি কি পুষ্টি উপাদান রয়েছে এবং দুধ পান করলে আমাদের শরীর তা থেকে কি উপকার পায় সে সম্পর্কে ধারণা নেই আমাদের। আবার দুধ শুধু পান করলে হবে না দুধ পান করার সঠিক নিয়ম জানতে হবে। স্বাস্থ্য সচেতন হতে হবে সবাইকে। সুস্থ থাকতে হলে এই সব কিছু জরুরী টিপস জেনে রাখা খুবই প্রয়োজন।

মানব শরীরের জন্য দুধের উপকারিতা 

দুধে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন। তারপরে দুধে রয়েছে শর্করা ,লৌহ এবং স্নেহজাতীয় প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান।আহারের সুস্থতা এবং দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য দুধের বিকল্প নেই। অনেকের ধারণা যে শুধু বাচ্চাদের দুধের প্রয়োজন রয়েছে, কিন্তু না সব বয়সের মানুষদের জন্যই খাদ্য তালিকায় দুধ রাখা খুবই প্রয়োজন।

আমাদের দেহের জন্য প্রয়োজনীয় সকল পুষ্টি উপাদান দুধের মধ্যে উপস্থিত জন্য দুধকে সম্পূর্ণ খাদ্য বলা হয়। দুধে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে এজন্য দুধের রং সাদা হয়। মানবদেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য, সবচাইতে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান হলো প্রোটিন। আমিশার চাহিদা মিটিয়ে দুধ মানবদেহের যাবতীয় ধরনের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে।দুধ তরল পদার্থ। একটি আদর্শ খাবার খাদ্যবস্তুর মানদন্ডের বিচারে “দুধ ” কে বলা হয় আদর্শ খাবার। কেননা একজন পূর্ন বয়স্ক মানুষের দৈহিক পুষ্টিচাহিদার প্রায় সবটুকুই এই দুধে পাওয়া সম্ভব। তাই যখন দুধকে আদর্শ খাবার বলা হয়।

দুধ শরীরকে ভালো ও সুস্থ রাখার পাশাপাশি, শরীরে শক্তি জোগান এবং ক্লান্তি দূর করে। মানসিক চাপ দূর করতে সাহায্য করে। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। দাঁত ও হাত মজবুত রাখে। মাংসপেশি গঠনে ভূমিকা রাখে। চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে কম চর্বিযুক্ত দুধ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। পাকস্থলী পরিষ্কার রাখে এবং হজম শক্তি বাড়ায়। এ ছাড়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

ছোট শিশুর পাশাপাশি বাড়তি বয়সের শিশুদের জন্য দুধ অত্যাবশ্যক। এবং প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য দুধের কোন বিকল্প নেই। অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে যে ব্যক্তি নিয়মিত দুধ পান করে তার শরীরে কোন ধরনের পুষ্টির অভাব থাকে না। তাই অন্যান্য খাদ্যের পাশাপাশি আমাদের খাদ্য তালিকায় দুধ রাখা প্রয়োজন। নিয়মিত দুধ খাওয়ালে তাদের শরির ভালো থাকবে, মন প্রফুল্ল ও সতেজ থাকবে, ব্রেইন ভাল থাকবে এবং পড়াশোনা ঠিকভাবে করতে পারবে। সর্বোপরি এই সময় দেহের সার্বিক বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান পাওয়ার লক্ষ্যে প্রতি দিন ২ গ্লাস করে দুধ খাওয়া প্রয়োজন।

যারা অনেক পরিশ্রম করে, শারীরিক কসরত করে তাদের যদি খাদ্য তালিকা ফলো করেন তাহলে দেখবেন যে তাদের খাবারে অনেক পরিমাণে দুধ এর উপস্থিতি থাকে। কারণ যারা অতি পরিশ্রম করে তাদের শরীরে প্রয়োজন অনেক তাপশক্তির। নিউ জাতীয় খাদ্য আমাদের শরীরে তাপ শক্তি উৎপন্ন করে। সকালে এবং রাতে যদি নিয়মিত দুধ পান করা যায় তাহলে আমাদের শরীর সতেজ থাকবে। দুধে উপস্থিত পুষ্টি সমৃদ্ধ আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। তাই নিয়মিত দুধ পান করলে গ্যাস্ট্রিক, আলসার ও বিভিন্ন ধরনের পেটের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়া এখনকার সময়ে, ৪৫ বছর বয়সের পর থেকেই মানুষ বিভিন্ন ধরনের ব্যাথার জনিত সমস্যায় ভোগে। হাড়ের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা, অস্থিমজ্জায় সমস্যা।যারা নিয়মিত দুধ পান করে তারা এইসব সমস্যা থেকে অনেক দূরে থাকে।

আগেকার দিনের মানুষ অনেকদিন বাঁচতো কারণ তখন তাদের গোয়ালে ছিল অনেক গরু। সেই খাঁটি গরুর দুধ দিয়ে তারা তাদের ক্ষুধা নিবারণ করত। তারা তখন ভেজালমুক্ত দুধ পান করত এবং সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে আহার করতো। এজন্য তাদের কোন শারীরিক সমস্যা হতো না এবং তাদের গড় আয়ু ছিল প্রায় ৯০ থেকে ১০০ বছর। তাহলে বুঝতেই পারছেন যে আমাদের শরীরের জন্য দুধ খুবই উপকারী একটি খাদ্য দ্রব্য।

Leave a Comment