আড্ডা নিয়ে স্ট্যাটাস

আড্ডা দিতে যারা ভালোবাসেন তারা নিশ্চয়ই আমাদের এই পোস্টটি এখন পড়ছেন। আড্ডা ভালো না বাসলে আড্ডা নিয়ে লেখা পোস্ট পড়তে কেউ আগ্রহী হবে না তা খুব স্বাভাবিক। আজ আমরা আড্ডা নিয়ে কেন লিখতে বসলাম এ বিষয় নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন থাকতে পারে। আড্ডা নিয়ে আজ কথা বলার কারণ হলো আপনারা যারা আড্ডা দিতে ভালোবাসেন

তারা যদি আড্ডা নিয়ে কোন ধরনের পোস্ট লিখতে চান অথবা সোশ্যাল মিডিয়ায় কোন ধরনের স্ট্যাটাস দিতে চান তাহলে কিভাবে দিবেন সে বিষয়গুলো তুলে ধরব এই আর্টিকেলের মধ্যে। অর্থাৎ, আমাদের আজকের আলোচনার মূল বিষয়বস্তু হলো আড্ডা নিয়ে স্ট্যাটাস। আড্ডা দিতে যারা খুব বেশি ভালোবাসেন তারা নিশ্চয়ই শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথেই থাকবেন।

নিজের প্রিয় বন্ধুদের সাথে বসে কিছু মজার সময় কাটানোর ইচ্ছা আমাদের সকলেরই থাকে কিন্তু প্রিয় মানুষদের সাথে প্রতিদিন দেখা হয় না। একটা সময় ছিল যখন পাড়ার অলিতে গলিতে সবাইকে আড্ডা দিতে দেখা যেত কিন্তু এখন তথ্যপ্রযুক্তির উন্নতির কারণে মানুষ খুব বেশি ঘর থেকে বের হতে চায় না। যেহেতু আমরা ঘরে বসে যে কোন তথ্য মুহূর্তের মধ্যে হাতে পাই তাই ঘর থেকে বের হওয়ার খুব বেশি প্রয়োজন পড়ে না। ঠিক এ কারণেই নিজের প্রিয় বন্ধুটির সাথেও দিনের পর দিন দেখা হয়ে ওঠেনা।

পাড়ার অলিতে গলিতেও আর তেমন কাউকে আড্ডা দিতে দেখা যায় না। এ বিষয়টি আমাদের কাছে খুবই দুঃখজনক যে এই প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা আড্ডা দিতে খুব একটা ভালোবাসে না। এরা ভালোবাসে ঘরে বসে অনলাইন গেম খেলতে। ঠিক এ কারণেই এখনকার ছেলে মেয়েদের মাঝে খুব বেশি হতাশা লক্ষ্য করা যায়।

প্রিয় মানুষদের সাথে কিছু সুন্দর মুহূর্ত না কাটালে ভেতরে হতাশা কাজ করাটাই স্বাভাবিক। প্রতিটি মানুষের জীবনে দুঃখ আছে আর সেই দুঃখকে ভোলার জন্য প্রতিদিন অন্তত কিছুটা সময় আশেপাশের মানুষের সাথে মেশা উচিত। দুঃখের কথাগুলো অন্যের সাথে শেয়ার করলে একটু হলেও হালকা হওয়া যায়।

যারা বিশ্ববিদ্যালয় অথবা কলেজে পড়াশোনা করেন তারা টং দোকানে অনেক সময় আড্ডা দিয়ে থাকে। মানুষের ব্যস্ততার কারণে এখন টংয়ের দোকানের আড্ডা ও হারিয়ে যাচ্ছে। নিজের প্রিয় বন্ধুটির সাথে রং চা খেতে খেতে মনের কথা শেয়ার করা হয় না বহুদিন। চায়ের দোকানে বসে পরিচিত একটি গান ধরা হয় না আর।

এর পেছনে প্রধান কারণ হলো আড্ডা দেওয়ার জন্য মানুষ খুঁজে না পাওয়া। দিনের পর দিন স্মার্টফোনও কম্পিউটার সামনে বসে বসে মানুষ রোবটের মত হয়ে উঠছে। চাইলেও আশেপাশের মানুষের কাছ থেকে একটু সময় পাওয়া যায় না। সময় ভিক্ষা করলেও কারো কাছ থেকে হয়তো দু’দণ্ড সময় পাওয়া যাবে না। এভাবেই আড্ডা দেওয়ার সময় গুলো হারিয়ে যাচ্ছে।

যখন আমাদের হাতে স্মার্টফোন ছিল না তখন আমরা বেশিরভাগ সময়ই নিজের প্রিয় মানুষদের সাথে গল্প করে কাটাতাম। নিজের জীবনের আনন্দ, দুঃখ , বেদনা সবকিছু নিজের প্রিয় মানুষের সাথে শেয়ার করতাম। জীবন কিভাবে পরিচালনা করব সে বিষয়ে অভিজ্ঞদের কাছ থেকে পরামর্শ নিতাম। এখন যেকোনো কিছু আমরা ঘরে বসেই পাওয়ার চেষ্টা করি। মনের মধ্যে উঁকি দেওয়া প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য সরাসরি গুগল অথবা ইউটিউবে সার্চ করা যায়, প্রিয় শিক্ষকের কাছে যাবার

প্রয়োজন হয় না। যে বন্ধুটির সাথে নদীর ধারে হাঁটতে হাঁটতে প্রথম প্রেমের অনুভূতি শেয়ার করা যেত সে বন্ধুটিও এখন ফেসবুকের কোন প্রেমিকার সাথে গল্পে ব্যস্ত। এখন আড্ডা দেওয়ার কথা উঠলেই সবাই বলে অনলাইনে যুক্ত হবার কথা। প্রকৃতির সুন্দর বাতাসের মধ্যে সবাই হৈ হুল্লোড় করে গল্প করার মত মজা জুম অথবা google মিটে পাওয়া যাবে? আমার বিশ্বাস অধিকাংশ মানুষই চাইবে প্রকৃতির মাঝে বসে দুদন্ড গল্প করতে, অথচ পরিস্থিতি তাদের কাউকেই ঘর থেকে বের হওয়ার সুযোগ দেবে না।

Leave a Comment