আসসালামু আলাইকুম প্রিয় বন্ধুগণ। যারা গাছপালা লাগাতে পছন্দ করে এবং বাগান করা যাদের শখ তাদের জন্য আজকে আমাদের এই প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। বৃক্ষরোপণ, চারা গাছ লাগানো বিভিন্ন ধরনের ফল গাছ এবং ফুল গাছ লাগানো যারা পছন্দ করে তাদের বাগান সম্পর্কে অনেক ধরনের প্রশ্ন থাকতে পারে। গাছপালা লাগানো অথবা বাগান করতে হলে কিন্তু সাধারণ কিছু তথ্য আমাদের জানতে হবে।
যেমন কোন গাছের জন্য বেশি সূর্যের আলো প্রয়োজন এবং কোন গাছের জন্য কম সূর্যের আলো প্রয়োজন। এগুলো তথ্য জানা খুবই প্রয়োজন এগুলো তথ্য না জানলে আমরা কিন্তু একজন কৃষক হিসেবে সফল হতে পারব না। এইসব তথ্য যদি আমরা না জানি তাহলে আমাদের বাগান কখনোই ভালো হবে না। চলুন তাহলে চারা গাছ সম্পর্কিত এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্পর্কে আজকে যাবতীয় আলোচনা করা যাক।
আমরা সবাই জানি গাছপালা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন সূর্যের আলো। কারণ সূর্যের আলো থেকে গাছপালা নিজের খাদ্য তৈরি করে সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। সব গাছের পাতার রং সবুজ হয়। রং কেন সবুজ হয় সেটা কি আমরা সবাই জানি?
গাছ পাতার সাহায্যে খাদ্য তৈরি করে। পাতায় উপস্থিত ক্লোরোফিল সংশ্লেষণের জন্য প্রয়োজন। ক্লোরোফিলের কারণে পাতার রং সবুজ হয়।গাছ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ভূমিকা পালন করে। এখন আমরা আলোচনা করব যে গাছ কিভাবে নিজের খাদ্য তৈরি করে?
কাজ সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় নিজেই নিজের খাদ্য তৈরি করে। সূর্যের আলো থেকে পাতায় উপস্থিত ক্লোরোফিলের সাহায্যে গাছ নিজের খাদ্য নিজে তৈরি করে। একেই বলা হয় সালোকসংশ্লেষণের প্রক্রিয়া। কিন্তু সালোকসংশ্লেষণের প্রক্রিয়ায় অত্যাবশ্যকীয় হল মূলের সাহায্যে গাছ মাটির অভ্যন্তরী থেকে যেই রস শোষন করে সেটা।
এখন প্রশ্ন থাকতে পারে যে যদি সূর্যের আলো থেকে গাছ খাদ্য তৈরি করে তাহলে সূর্যের আলো ছাড়াছায়ায় কিভাবে গাছ বেঁচে থাকতে পারে?
এই প্রশ্নের উত্তরে বলা যেতে পারে যে সালোকসংশ্লেষণের প্রক্রিয়ার জন্য সরাসরি সূর্যের আলো থেকে তাপ সব গাছের প্রয়োজন হয় না। কারণ বিভিন্ন আবহাওয়াতে এবং বিভিন্ন পরিবেশের পর্যাপ্ত সূর্যের আলো পাওয়া যায় না। এসব প্রতিকূল আবহাওয়ায় অনেক গাছ জন্মাতে পারেনা। কিন্তু এমন অনেক ধরনের উদ্ভিদ রয়েছে যেগুলোতে সরাসরি সূর্যের আলো না পড়লেও তারা নিজের খাদ্য নিজে তৈরি করতে পারে এবং খুব সহজেই সেই আবহাওয়াগুলোতে টিকে থাকতে পারে। অর্থাৎ ছায়ায় যে গাছগুলো টিকে থাকতে পারে সেগুলো হল।
মশলা : আদা, হলুদ ইত্যাদি । ফল : বরই, আতাফল, বেল, গাব, জাম্ব্বুুরা, তেঁতুল, কামরাঙা, জগডুমুর ইত্যাদি।
অনেক ফল গাছ রয়েছে যেগুলোতে বেশি সূর্যের আলোর প্রয়োজন পড়ে না। এরা কম সূর্যের আলোতেও বেঁচে থাকতে পারে।
সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন হয় অক্সিজেন। অক্সিজেন প্রাণিজগতের অস্তিত্বের অন্যতম উপাদান। অক্সিজেন না থাকলে প্রাণী জগতের অস্তিত্ব ও কল্পনা করা যাবে না। তাই মানুষের প্রয়োজনীয় অতি মূল্যবান গ্যাস অক্সিজেন গ্যাস কিন্তু বৃক্ষ থেকে উৎপন্ন হয়। আর পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করতে প্রাণী জগতের জন্য যেই গ্যাসটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে সেটি হলো কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস।
কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস বৃক্ষ শোষণ করে সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায়। কারণ সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার জন্য প্রয়োজন পড়ে কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস এর। এজন্য বৃক্ষ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে।কারণ প্রাণীজাতি নিঃশ্বাসের সময় কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস ত্যাগ করে এবং অক্সিজেন গ্যাস গ্রহণ করে।আর বৃক্ষ সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার সময় কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস শোষণ করে এবং অক্সিজেন গ্যাস ত্যাগ করে।
তাহলে বলা যায় যে বৃক্ষ মানুষের পরম বন্ধু। আর মানুষও কিন্তু বৃক্ষের বন্ধু। আমরা মানুষ জাতি বেঁচে থাকতে এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে বেশি বেশি গাছপালা লাগাবো। কারণ গাছপালা যদি কমে যায় তাহলে মানুষের অস্তিত্ব ধীরে ধীরে বিলুপ্তি হয়ে যাবে। যেখানে গাছপালা কম সেখানে কিন্তু মানুষ বিভিন্ন ধরনের শ্বাস জনিত রোগে ভুগছে। তাই সুস্থ থাকতে গাছপালার প্রয়োজন রয়েছে।
প্রিয় বন্ধুগণ, আপনাদের কাছে সহজ ভাষায় এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো আমরা উল্লেখ করার চেষ্টা করেছি। আশা করছি আপনাদের আমাদের এই প্রতিবেদনটি ভালো লেগেছে।